মানসুর ইবরাহিম المنصور ابراهيم | |||||
---|---|---|---|---|---|
হিমসের আমির | |||||
রাজত্ব | ১২৪০–১২৪৬ | ||||
রাজ্যাভিষেক | ১২৪০ | ||||
পূর্বসূরি | মালিকুল মুজাহিদ | ||||
উত্তরসূরি | আশরাফ মুসা | ||||
জন্ম | হিমস, সিরিয়া | ||||
মৃত্যু | ২৮ জুন ১২৪৬ নায়রাব, সিরিয়া | ||||
| |||||
পিতা | মালিকুল মুজাহিদ | ||||
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
নাসিরুদ্দিন মালিকুল মানসুর ইব্রাহিম বিন আসাদুদ্দিন শিরকুহ, মানসুর ইব্রাহিম নামে বেশি পরিচিত, (আরবি: المنصور إبراهيم; মৃত্যু: জুন ২৮, ১২৪৬) একজন কুর্দি শাসক ছিলেন। যিনি আইয়ুবীয় রাজবংশের অধীনে ১২৪০ থেকে ১২৪৬ সাল পর্যন্ত হিমস রাজ্যের আমির ("গভর্নর") ছিলেন। তিনি হিমসকে আপেক্ষিক স্বাধীনতার সাথে ধরে রেখেছিলেন, তবে প্রাথমিকভাবে দামেস্কের সালিহ ইসমাইলের অধীনে ছিলেন। তিনি পরে সালিহ ইসমাইল এবং তার খোয়ারেজেমীয় মিত্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। মানসুর ১২৪১, ১২৪২, ১২৪৪ এবং ১২৪৬ সালে পরবর্তীদের মুখোমুখি হন।
জানুয়ারী ১২৪১ সালে মানসুরকে মিত্র আইয়ুবীয়-সেলজুক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত করা হয়। সিরিয়ার বেশ কয়েকটি শহর লুণ্ঠন করে ফোরাত পার হওয়া একটি খোয়ারেজিমীয়দের সেনাবাহিনী অনুসরণ করে। মানসুর তাদের সাথে রাক্কায় লড়াইয়ে নামেন। কিন্তু হাররানে তারা তাদের ঘাঁটিতে পুনরায় দলবদ্ধ হওয়ায় তাদের পিছু হটতে বাধ্য করতে পারেননি। ২৫ এপ্রিল মানসুর এডেসার কাছে খোয়ারেজেমীয়দের একটি কঠিন যুদ্ধে টেনে আনতে সক্ষম হন এবং তাদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করেন। বেঁচে থাকা খওয়ারজেমীয় সৈন্যরা হাররানে পালিয়ে যায়, যেখানে তারা তাদের পরিবারকে জড়ো করে এবং আব্বাসীয় খিলাফত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের দক্ষিণে চলে যায়। দখলকৃত অঞ্চলের বেশিরভাগই আলেপ্পোর আইয়ুবীয় এবং সেলজুকদের দ্বারা দখল করা হয়েছিল, কিন্তু মানসুর খাবুর এবং কারকিসিয়াকে তার নিজস্ব রাজত্বের সাথে যুক্ত করেছিলেন। তিনি সেলজুক সেনাবাহিনীর সাথে বাহিনীতে যোগদান করেন এবং তারা একসাথে সুলতান সালিহ আইয়ুবের অধিষ্ঠিত আমিদ দুর্গকে দখল করে নেন যিনি তার আইয়ুবীয়দের মিশরের জন্য সিরিয়া এবং আল-জাজিরা দখল করার চেষ্টা করেছিলেন। মানসুরের অভিযানে হিসন কাইফা ছাড়া আইয়ুবীয়দের সমস্ত সম্পত্তি দখলে নেয়া হয়েছিল।[১]
১২৪২ সালের আগস্টে মানসুর আবার আলেপ্পো এলাকায় খোয়ারেজেমীয় আক্রমণকারী বাহিনীকে পরাজিত করেন। ১২৪৩ সালে সালিহ আইয়ুব সালিহ ইসমাইলের সাথে একটি শান্তি চুক্তি সুরক্ষিত করার চেষ্টা করেছিলেন এবং নাসির দাউদকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যিনি ট্রান্সজর্ডানকে সাধারণ শত্রু হিসাবে ধরেছিলেন এবং এইভাবে মানসুরকে প্রাক্তনকে সুলতান হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হয়েছিল। সালিহ ইসমাইল তাকে আজলুনে নাসিরের দুর্গ ঘেরাও করতে পাঠান।[২] ১২৪৪ সালে মিশর এবং সিরিয়া আবার সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং আ মানসুর সালিহ ইসমাইলের সংঘে যোগ দেন। তারা মিশরের দিকে অগ্রসর হন। সালিহ ইসমাইল গাজার দিকে, নাসির দাউদ জেরুজালেমের দিকে আর মানসুর আক্কার দিকে অগ্রসর হন। মানসুর শহরে পৌঁছানোর আগেই খোয়ারজেমীয়রা আবার ফোরাত পার হয়ে আইয়ুবীয়দের অঞ্চলে প্রবেশ করে। মানসুর তাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য এগিয়ে যান, কিন্তু লা ফোরবির যুদ্ধে তার বাহিনী পরাজিত হয় এবং তিনি অল্প কিছু অনুসারী নিয়ে পালিয়ে যান।[৩]
১২৪৬ সালের মার্চ মাসে সালখাদের ইযযুদ্দিনের সহায়তায় খওয়ারজেমীয়রা দামেস্ক অবরোধ করে এবং সালিহ ইসমাইলের সাথে যোগ দেয় যিনি এখন বালাবেকের অধিকারী। অবরোধ এতটাই গুরুতর ছিল যে বাসিন্দারা ক্যারিয়ন এবং কুকুরকে খেতে বাধ্য হয়েছিল বলে জানা গেছে। যাইহোক, মানসুর এবং আলেপ্পোর নাসির ইউসুফ একটি জোট তৈরি করেন এবং খাওয়ারেজমীয়দের মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তারা আশঙ্কা করছিলেন যে, তারা দামেস্ক দখল করলে সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। বিশেষ করে দামেস্ককে মুক্ত করার জন্য মানসুর দক্ষিণ সিরিয়ায় তার শত্রু সালিহ আইয়ুবের দখলকে শক্তিশালী করতে পারে বলে উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাই মানসুর তুর্কমেন এবং বেদুঈন ভাড়াটে সৈন্যদের একটি বাহিনীকে দামেস্কের দিকে নিয়ে যান। খোয়ারজেমীয় এবং তাদের মিত্ররা হিমসে হ্রদের কাছে মানসুরের সাথে লড়াই করে। যেখানে তারা একটি বড় পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছিল আর সিরিয়ায় খোয়ারেজমীয় ক্ষমতা চিরতরে শেষ হয়েছিল। পরবর্তীতে মানসুর বালাবেকে চলে যান যাকে সালিহ ইসমাইলের পুত্র আল-মনসুর মাহমুদ প্রতিরক্ষা করছিলেন। মানসুর ইব্রাহিম অনায়াসে বাইরের শহর দখল করেন, কিন্তু এর শক্তিশালী দুর্গে পৌঁছে পিছু হটে হিমসে ফিরে আসেন।[৪]
এই সময়ে সালিহ আইয়ুব মানসুরকে মিশরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, সম্ভবত তাকে দামেস্ক প্রদানের চুক্তি অনুসারে। তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করতে দ্বিধা করেননি, কিন্তু যখন তিনি দামেস্কে পৌঁছান তখন তিনি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি ২৮ জুন, ১২৪৬ সালে নায়রাবের ঘৌতা শহরে মারা যান এবং তার পুত্র আশরাফ মুসা তার স্থলাভিষিক্ত হন। মানসুরের অধীনে আইয়ুবীয়দের ক্ষুদ্রতম রাজত্ব হিমস সাম্রাজ্যিক বিষয়ে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল। কিন্তু তার মৃত্যুর সাথে সাথে এটি তার পুরাতন নিষ্ক্রিয়তায় ফিরে আসে।[৫]