মামলুক আলী নানুতুবি | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৭৮৯ |
মৃত্যু | ৭ অক্টোবর ১৮৫১ | (বয়স ৬১–৬২)
ধর্ম | ইসলাম |
সন্তান | মুহাম্মদ ইয়াকুব নানুতুবি (ছেলে) |
নাগরিকত্ব | মুগল ভারত |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | মাতুরিদী |
আত্মীয় | খলিল আহমদ সাহারানপুরী (নাতি) |
মামলুক আলী নানুতুবি (১৭৮৯ — ১৮৫১) একজন ভারতীয় সুন্নি মুসলিম পণ্ডিত যিনি জাকির হুসেইন দিল্লী কলেজে আরবি ভাষার প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি, রশিদ আহমেদ গাঙ্গোহি এবং মুহাম্মদ ইয়াকুব নানুতুবি।[১]
তার নাম মামলুক আল-আলী বা মামলুক আলী। তার নসব হল, মামলুক আলী ইবনে আহমদ আলী ইবনে গোলাম শরাফ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে আবদ ফাতাহ ইবনে মুহাম্মদ মুঈন ইবনে আবদ সামি ইবনে মুহাম্মদ হাশিম ইবনে শাহ মুহাম্মদ ইবনে কাজী তাহা ইবনে মোবারক ইবনে আমানউল্লাহ ইবনে জামালউদ্দীন ইবনে কাজী মীরান ইবনে মাজহারউদ্দিন ইবনে নাজমুদ্দীন সানী ইবনে নূরউদ্দীন রাব্বি ইবনে কিয়ামউদ্দিন ইবনে জিয়াউদ্দিন ইবনে নূরুদ্দীন সালিস ইবনে নাজমুদ্দীন ইবনে নূরউদ্দিন সানী ইবনে রুকনউদ্দিন ইবনে রাফি-উদ্দিন ইবনে বাহাউদ্দিন ইবনে শিহাবুদ্দীন ইবনে খাজা ইউসুফ ইবনে খলিল ইবনে সদ্দুদ্দীন ইবনে নূরউদ্দিন ইবনে সদরউদ্দীন আল-হাজ ইবনে ইসমাইল শহীদ ইবনে নূরউদ্দীন কিতাল ইবনে মাহমুদ ইবনে বাহাউদ্দিন ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে জাকারিয়া ইবনে নূর ইবনে সিরাহ ইবনে শাদি আস-সিদ্দিকী ইবনে ওয়াহেদউদ্দীন ইবনে মাসউদ ইবনে আবদুর রাজ্জাক ইবনে কাসিম ইবনে কাসিম ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর।[২]
মামলুক আলী ১৭৮৯ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশের নানুতায় জন্ম গ্রহণ করেন।[৩][৪] তার প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। তবে বলা হয়ে থাকে যে তিনি তার পরিবারের প্রবীণদের কাছ থেকে তার প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। নূরুল হাসান রশিদ কান্ধলভি অনুমান করেছেন যে, তার পড়াশোনা মুফতি ইলাহী বখশের আবদুর রহমন এবং আবদুর রহিমের শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে হয়েছিল। তিনি মুফতি ইলাহী বখশ কান্ধলভি এবং মুহাম্মদ কালান্দার জলালাবাদীর অধীানে মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেন। তিনি শাহ আবদুল আজিজের সাথে একটি প্রসঙ্গ অধ্যয়ন করেছেন বলে জানা যায়। আরেকটি বর্ণনায় আছে যে, তিনি আবদুল্লাহ খান আলভীর কাছ থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনি রশিদ উদ্দীন খানের অধীনে উচ্চতর পড়াশোনা শেষ করেন।[৫]
পড়াশোনা শেষ করে মামলুক আলী দিল্লিতে শিক্ষকতা শুরু করেন।[৬] ১৮২৫ সালের জুনে, তিনি জাকির হুসেইন দিল্লি কলেজে আরবি বিভাগের প্রভাষক পদে নিযুক্ত হন এবং ১৮৪১ সালের ৮ নভেম্বর প্রধান শিক্ষকের পদে পদোন্নতি পান।[৭] তিনি সারা জীবন এই কলেজের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। যৌক্তিক বিজ্ঞান, আরবি ভাষা, ফিকহ সম্পর্কিত বই পড়ানোর পাশাপাশি তিনি সিহাহ সিত্তার বইও পড়াতেন।
আসির আদ্রবির মতে, নানুতুবি তার কর্মজীবনের পুরো সময় দিল্লিতে শিক্ষাদানে কাটিয়েছিলেন। উক্ত যুগের জ্ঞাত পণ্ডিতগণ তার সাথে অধ্যয়ন করেছিলেন বলে জানা যায়।[৮]
তার উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে:[৯][১০][১১]
নানুতুবি ১৮৫১ সালের ৭ অক্টোবর জন্ডিসের কারণে মারা যান এবং শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর কবরস্থানের নিকটে নয়াদিল্লির মুন্হাদিয়ানে তাকে দাফন করা হয়।[১২][১৩]
তার পুত্র মুহাম্মদ ইয়াকুব নানুতুবি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রথম অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[১৪] মামুলুক আলীর কাছে দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি তার বেশিরভাগ বই পড়াশোনা করেছিলেন।[১৫] সুনানে আবু দাউদের ১৮ খণ্ডের ভাষ্য বাদলুল মাজহুদের লেখক খলিল আহমদ সাহারানপুরী ছিলেন নানুতুবির নাতি।[১৬]
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আহমদ খান তাকে এই বলে প্রশংসা করেছিলেন,
মামলুক আলী যে স্মরণশক্তি ধারণ করেতেন তা এতটাই গভীর ছিল যে যদি কারণবশত জ্ঞানের পুরো গ্রন্থাগারটি নষ্ট হয়ে যায় তবে মাওলানা তার স্মৃতির কোষের সিন্দুর থেকে আবার এটি লিখে ফেলতেন।[১৭]