উম্মুল মুমিনিন |
---|
|
মায়মুনা বিনতে আল-হারিস আল-হিলালিয়াহ (আরবি: ميمونة بنت الحارث الهلالية, Maymūnah bint al-Ḥārith al-Hilālīyah,৫৯৪-৬৭৩)[১] ছিলেন ইসলামের শেষ নবী মুহাম্মাদ(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর স্ত্রী। তার প্রকৃত নাম ছিল বাররাহ, কিন্তু মুহাম্মাদ(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার নাম পরিবর্তন করে মায়মুনা রেখেছিলেন।
তার পিতা আল-হারিস ইবনে হাজন ছিলেন মক্কা নগরীর হিলাল উপজাতিদের একজন। তার মাতা হিন্দ বিনতে আউফ ছিলেন ইয়েমে্নের হিমার নামক উপজাতিদের একজন। তার আপন বড় বোনের নাম ছিল লুবাবা বিনতে আল হারিস যিনি ছিলেন আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব অর্থাৎ রাসূল ﷺ এর চাচী। তার পিতৃ পক্ষের বোনেরা ছিলেন লায়লা, হাযায়লা আর আজ্জা। তার মাতৃ পক্ষের সহোদররা ছিলেন মাহমিইয়্যা ইবনে যাজী আল-জুবাইদী, আসমা বিনতে উমাইস (আবু বকর-এর স্ত্রী), সালমা বিনতে উমায়্যা (হামযা ইবনে আব্দুল্লাহ আল-মুত্তালিব এর স্ত্রী) এবং আওন ইবনে উমাইস।[২] ইবনে কাসির উল্ল্যেখ করেছেন, জয়নব বিনতে খুযায়মা (মুহাম্মাদ-এর স্ত্রী) ছিলেন তার আরেক বোন।[৩]
নবী 'ওমরা' পালনের পর ফেরার পথে মক্কা নগরী থেকে ১০ মাইল দূরে শরিফ নামক স্থানে ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে বিবাহ করেছিলেন;[৪] তখন মুহাম্মাদের(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বয়স ৫৮ এবং সম্ভবত মায়মুনার বয়স ৩০ বছরের কিছু কম বা বেশি ছিল।
৬৩২ সালে মুহাম্মাদের (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মায়মুনা তার সাথেই বসবাস করতেন।
মায়মুনার মৃত্যুর তারিখ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তাবারির মতে: "ইয়াজিদ ইবনে মুওয়াইয়া এর খিলাফত কালে ৬১ হিজরিতে [৬৮০-৬৮১] ময়মুনার মৃত্যু হয়েছিল। তিনি নবীর স্ত্রীদের মধ্যে সর্বশেষ স্ত্রী ছিলেন এবং তখন তাঁর বয়স ছিল ৮০ অথবা ৮১ বছর।"[৫] তাবারি আরও উল্ল্যেখ করেছেন, "মুহাম্মাদের (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মৃত্যুর পর মায়মুনা উম্মে সালামার কাছে ছিলেন।"[৬]
ইবনে কাছির লিখেছেন: "নবীজীর মৃত্যুর পরে মায়মুনা আরো চল্লিশ বছর মদিনাতে বসবাস করেছিলেন এবং ৫১ হিজরীতে ৮০ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন নবীজির স্ত্রীদের মধ্যে সর্বশেষ জন।"[৭] মুহাম্মদের (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্ত্রীদের মধ্যে কমপক্ষে চার জন (সাফিয়া, সাউদা, আয়িশা এবং উম্মে সালামা ) বিধবা স্ত্রী ৫১ হিজরী সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।
ইবনে হাজারও দেখিয়েছেন যে, 'মায়মুনা আয়িশার আগে মৃত্যুবরণ করেছিলেন'; "আমরা মদিনার দেওয়ালের উপর দাঁড়িয়ে ছিলাম, বাইরের দিকে তাকিয়েছিলাম… আয়েশা বলেছেন: 'হায় আল্লাহ! মাইয়মুনা আর নেই। সে ইন্তেকাল করেছে, আর এখন তুমি যা ইচ্ছা তাই করার জন্য মুক্ত। সে ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ধার্মিক এবং আত্নীয়দের প্রতি সবচেয়ে নিবেদিত।"[৮][৯]