মারো চারিত্রা | |
---|---|
পরিচালক | কৈলাস বলচন্দ |
প্রযোজক | রাম আরাঙ্গান্নাল |
রচয়িতা | কৈলাস বলচন্দ |
শ্রেষ্ঠাংশে | কমল হাসন সরিতা |
সুরকার | মনয়ঙ্গত সুব্রমণিয়ন বিশ্বনাথন |
চিত্রগ্রাহক | বি এস লোকনাথ |
সম্পাদক | এন আর কিট্টু |
পরিবেশক | আন্দাল প্রোডাকশন্স |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৬৯ মিনিট[১] |
দেশ | ভারত |
ভাষা | তেলুগু |
মারো চারিত্রা (তেলুগু: మరో చరిత్ర, অনুবাদ 'আরেকটি ইতিহাস') হচ্ছে ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি তেলুগু ভাষার চলচ্চিত্র। প্রণয়ধর্মী-আবেগপ্রধান এবং হৃদয়বিদারক-করুণ কাহিনী বিশিষ্ট এই চলচ্চিত্রটির পরিচালক ছিলেন তামিল চলচ্চিত্র জগতের তখনকার নামকরা পরিচালক কৈলাস বলচন্দ যিনি মূলত তামিল চলচ্চিত্রই বানাতেন তবে এই তেলুগু চলচ্চিত্র তিনি বানিয়ে অনেক সুনাম অর্জন করেন, চলচ্চিত্রটির কাহিনী তিনি নিজেই লিখেছিলেন, ব্যাপক দর্শকপ্রিয় এই চলচ্চিত্রটি অনেক আয় করেছিলো তেলুগু সহ তামিলভাষী অঞ্চলেও যদিও চলচ্চিত্রটি তেলুগু ভাষার ছিলো এবং তামিল ভাষায় অনুবাদ করা হয়নি তবে চলচ্চিত্রটির অনেক তামিল সংলাপ ছিলো। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন মনয়ঙ্গত সুব্রমণিয়ন বিশ্বনাথন (ষাট এবং সত্তরের দশকের খ্যাতিমান তামিল সঙ্গীতজ্ঞ) এবং তার সুর করা এই চলচ্চিত্রের তেলুগু গানগুলো আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। পরবর্তীতে তেলুগু চলচ্চিত্র জগতের কালজয়ী ধ্রুপদী চলচ্চিত্রের মর্যাদা পেয়ে যায় এই চলচ্চিত্রটি। চলচ্চিত্রটি মালয়ালমভাষীদের জন্য 'তিরাকাল এড়ুদিয়া কবিতা' নামে অনুবাদ করে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো।[২] ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ এবং কেরল রাজ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিলো এই চলচ্চিত্রটি।[৩] চলচ্চিত্রটির কাহিনী ছিলো তামিলভাষী এক ছেলে এবং তেলুগুভাষী এক মেয়ের প্রেম কাহিনী নিয়ে, হিন্দি ভাষায় চলচ্চিত্রটি কৈলাস বলচন্দ এক দুজে কে লিয়ে (১৯৮১) নামে পরিচালনা করেছিলেন এবং সেখানে তামিলভাষী ছেলে আর হিন্দিভাষী মেয়ের মধ্যকার প্রেম দেখানো হয়, সেটিও ছিলো তুমুল জনপ্রিয় এবং ব্যবসাসফল। চলচ্চিত্রটি ২০১০ সালে তেলুগু ভাষায় আবার বানানো হলেও ওটি ব্যবসার ক্ষেত্রে মুখ থুবড়ে পড়ে যায়।[৪] কমল হাসন আর সরিতার অভিনয় এবং প্রকাশভঙ্গিমা জনগণকে তীব্রভাবে আকৃষ্ট করেছিলো, কমল এবং সরিতা দুজনেরই পোশাক তখনকার সময়ের আধুনিক পোশাক ছিলো।[৫] ২০১৩ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সিএনএন-আইবিএন সংবাদ চ্যানেলের অনলাইন সংস্করণে এই চলচ্চিত্রকে ভারতের সেরা ১০০ চলচ্চিত্রের মধ্যে রাখা হয়েছিলো এবং ওখানে চলচ্চিত্রটির হিন্দি সংস্করণ এক দুজে কে লিয়েও ছিলো।[৬]
তামিলভাষী বলু তেলুগুভাষী স্বপ্নার প্রেমে পড়ে কিন্তু তাদের পরিবার এটা মেনে নেয়না, একদিকে তাদের পরিবার তাদের প্রেমের বিরুদ্ধে থাকে এবং অন্যদিকে একজন কামুক পুরুষ স্বপ্নার শ্লীলতাহানি করে। আর বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রের শেষে বলু এবং স্বপ্না দুজনেই মারা যায়।
অভিনেতা কমল হাসন একজন তামিল চলচ্চিত্র অভিনেতা ছিলেন, এবং জাতিসত্ত্বার দিক দিয়েও তিনি একজন তামিল ছিলেন। তার অভিনীত ১৯৭৪ সালের চলচ্চিত্র আভাল ওরু তোডার কাদাই-এর তেলুগু পুনঃনির্মাণ 'অন্থুলেনি কথা'তে কৈলাস বলচন্দ কমলকে সহ-অভিনেতা হিসেবে নিয়েছিলেন, এই চলচ্চিত্রটি ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় এবং কমল তেলুগু না জানলেও তিনি তার সংলাপগুলো নিজে নিজে ডাবিং করেছিলেন। ১৯৭৬ সালের কৈলাস বলচন্দের 'মনমাদা লীলাই'-এর তেলুগু ডাবকৃত সংস্করণ অন্ধ্র প্রদেশে মুক্তি পেয়েছিলো আর দর্শকরা কমলের অভিনয় পছন্দ করেছিলো। এইসব বিভিন্ন ঘটনা দেখে কৈলাস বলচন্দ কমলকে তেলুগু চলচ্চিত্র শিল্পে নায়ক হিসেবে পরিচয় করানোর ইচ্ছা রাখছিলেন[৭] এবং তিনি ঐ চিন্তা থেকেই 'মারো চারিত্রা' চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করেন, কমল যেহেতু একজন তামিল মানুষ তাই চলচ্চিত্রেও তাকে তামিলভাষী হিসেবে দেখান কৈলাস বলচন্দ। আর তেলুগুভাষী অভিনেত্রী সরিতা এবং মাধবীকে নেন।
রাম আরাঙ্গান্নাল চলচ্চিত্রটির প্রযোজনা করেন যিনি কৈলাস বলচন্দ পরিচালিত চলচ্চিত্র আগেও পরিচালনা করে এসেছিলেন।[৮] চলচ্চিত্রটি রঙিন বানানোর পরিকল্পনা ছিলো তবে বলচন্দ সাদাকালো ইচ্ছে করেই নির্মাণ করেন কারণ এতে চলচ্চিত্রটির কাহিনী বেশি আকর্ষণীয় হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেছিলেন। সরিতার এটিই ছিলো প্রথম চলচ্চিত্র আর মাধবী এর আগে দুটি তেলুগু চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ফেলেছিলেন। নায়িকা হিসেবে একেবারে নতুন তেলুগু অভিনেত্রীই চাচ্ছিলেন পরিচালক বলচন্দ আর তিনি অনেক মেয়ের অডিশন নেওয়ার পর সরিতাকে পছন্দ করেছিলেন।[৯]
চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭৮ সালের ১৯শে মে তারিখে। মুক্তির প্রথম সপ্তাহে চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে সাফল্য দেখাতে পারেনি।[৭] চলচ্চিত্র-সমালোচকেরা চলচ্চিত্রটির ব্যর্থতার জন্য মুখ্য নায়িকার গায়ের শ্যাম বর্ণকে দায়ী করেছিলেন।[৭] অবাক করে দেওয়ার মত চলচ্চিত্রটি মুক্তির দ্বিতীয় সপ্তাহে মানুষ অনেক পছন্দ করা শুরু করে এবং সেই দর্শকগুলো ছিলো তেলুগুভাষী, অন্ধ্র প্রদেশের বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছিলো।[৭] প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ুতে তামিল ভাষায় অনুবাদ ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয় এবং ওখানেও দর্শকরা কাহিনী অনেক পছন্দ করেছিলো, এছাড়াও কর্ণাটক রাজ্যেও কন্নড় ভাষায় অনুবাদ ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো চলচ্চিত্রটি তবে কেরল রাজ্যে মালয়ালম ভাষায় অনুবাদ করে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো।
কৈলাস বলচন্দ চলচ্চিত্রটিকে তার নিজের মাতৃভাষা তামিল ভাষায় বানাতে চাচ্ছিলেন এবং কমল হাসনকে আবার ঐ চলচ্চিত্রেও নায়ক হিসেবে নিতে চাচ্ছিলেন তবে কমল আপত্তি জানিয়ে বলেছিলেন যে, এই মারো চারিত্রা চলচ্চিত্রটিতেই অনেক তামিল সংলাপ আছে আর তামিলনাড়ুর অনেক মানুষ চলচ্চিত্রটিকে পছন্দ করেছে, তাই এটার তামিল পুনঃনির্মাণ দরকার নেই।[১০] কিন্তু বলচন্দ চলচ্চিত্রটির হিন্দি পুনঃনির্মাণ বানাতে চাইলে কমল রাজী হন আর হিন্দি ভাষায় এক দুজে কে লিয়ে নামে তৈরি হয়ে যায় চলচ্চিত্রটি এবং ওখানে বলচন্দ নায়িকা হিসেবে সরিতার পরিবর্তে রতি অগ্নিহোত্রীকে নিয়েছিলেন যিনি ছিলেন জাতিগতভাবে একজন পাঞ্জাবি তবে তিনি তামিল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আসছিলেন সত্তরের দশকের শেষের দিক থেকে এবং তিনি কমলের সঙ্গেও উল্লাসা পারাভাইগাল নামের একটি তামিল চলচ্চিত্রে এর আগে অভিনয় করে ফেলেছিলেন।
২০০৫ সালে কন্নড় ভাষায় 'লাভ স্টোরি' নামের একটি চলচ্চিত্র বের হয় যেটি ছিলো 'মারো চারিত্রা' চলচ্চিত্রের হুবহু নকল এবং দর্শক একটুও পছন্দ করেনি চলচ্চিত্রটি।[১১] ২০১০ সালে তেলুগু ভাষায় 'মারো চারিত্রা' নামে আবার একটি একই কাহিনী সংবলিত চলচ্চিত্র বানান রবি যাদব তবে ওটিও দর্শক একটুও পছন্দ করেনি।
চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন মনয়ঙ্গত সুব্রমণিয়ন বিশ্বনাথন যিনি একজন তামিল জাতির মানুষ ছিলেন, তেলুগু ভাষা তেমন একটা বুঝতেননা তিনি এবং গানগুলোর সুর করতে তার কিছুটা বেগ পেতে হয়েছিলো, তিনি তামিল ভাষায় অনুবাদ করে প্রথমে গানগুলোর সুর করেছিলেন; কৈলাস বলচন্দও যেহেতু একজন তামিল ছিলেন এবং বিশ্বনাথন যেহেতু ষাটের দশকের একজন জনপ্রিয় তামিল চলচ্চিত্র সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন তাই তাকে তেলুগু চলচ্চিত্রেও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নিয়েছিলেন বলচন্দ, বিশ্বনাথন আরো কিছু তেলুগু চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন। মারো চারিত্রা'র গানগুলো অনেক দর্শকপ্রিয় হয়েছিলো।
গানের শিরোনাম | ||||
---|---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | গীতিকার | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
১. | "ভালে ভালে মোগাড়িভয়" | আত্রেয়া, র্যান্ডর গাই | এস পি বলসুব্রাহ্মণ, এল আর ঈশ্বরী | |
২. | "কালিসি উন্টে কালাড়ু সুখামু" | আত্রেয়া | এস পি বলসুব্রাহ্মণ, রামোলা | |
৩. | "পাড়াহারেল্লাকু নীলো নালো" | আত্রেয়া | এস জনকী | |
৪. | "ভিদি চেয়ু ভিন্থালানি" | আত্রেয়া | বাণী জয়রাম | |
৫. | "ইয়ে তিগা পুভুন্নু" | আত্রেয়া | পি সুশীলা, কমল হাসন | |
৬. | "ইয়ে তিগা পুভুন্নু (দুঃখ)" | আত্রেয়া | এস পি বলসুব্রাহ্মণ |
கே. பாலசந்தர் இயக்கத்தில் கமல் நடித்த "மரோசரித்ரா" சென்னையில் 600 நாள் ஓடியது
கமல் நடித்த தெலுங்குப்படம்: தோல்வியில் தொடங்கி வெற்றியில் முடிந்த "மரோசரித்ரா"