মার্ক আর. শোঅল্টার | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | মার্ক রবার্ট শোঅল্টার ডিসেম্বর ৫, ১৯৫৭ আবিংটন, পেনসিলভানিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
জাতীয়তা | মার্কিন |
মাতৃশিক্ষায়তন | ওবারলিন কলেজ (বি.এ.); কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় (এম.এসসি.), (পিএইচ.ডি.) |
পরিচিতির কারণ | বার্হস্পত্য গসামার বলয়, শনির উপগ্রহ প্যান, ইউরেনাসের উপগ্রহ ম্যাব ও কিউপিড, ইউরেনাসের মিউ ও নিউ বলয়, নেপচুনের উপগ্রহ হিপোক্যাম্প, প্লুটোর উপগ্রহ কারবারোস ও স্টিক্সের আবিষ্কর্তা অথবা সহ-আবিষ্কর্তা |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফ্র্যাংক ইয়েলিন |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, গ্রহবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | সেটি ইনস্টিটিউট |
মার্ক রবার্ট শোঅল্টার (ইংরেজি: Mark Robert Showalter; জন্ম: ৫ ডিসেম্বর, ১৯৫৭) হলেন সেটি ইনস্টিটিউটের একজন সিনিয়র রিসার্চ সায়েন্টিস্ট।[১] তিনি ছয়টি প্রাকৃতিক উপগ্রহ ও তিনটি গ্রহীয় বলয় আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি নাসার প্ল্যানেটারি ডেটা সিস্টেম রিংস নোডের প্রধান অনুসন্ধায়ী, শনিতে ক্যাসিনি-হাইগেন্স অভিযানের সহ-অনুসন্ধায়ী এবং প্লুটোয় নিউ হোরাইজনস অভিযানের কাজকর্মের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।[২]
শোঅল্টার জন্মগ্রহণ করেছিলেন পেনসিলভানিয়ার অ্যাবিংটনে। শৈশবে তিনি বিজ্ঞান-ভিত্তিক খেলনা নিয়ে খেলতে ভালোবাসতেন। কৈশোরে বিদ্যালয়ে পাঠগ্রহণকালে একটি দূরবীন কেনার অর্থ জোগাড় করতে তিনি লনে ঘাস ছাঁটার কাজ করেছিলেন। ১৯৭৯ সালে ওবারলিন কলেজ তিনি পদার্থবিদ্যা ও গণিতে বি.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন। স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ হলে প্রথম দিকে তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানকে পেশা হিসেবে গ্রহণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। কিন্তু ভয়েজার ২ বৃহস্পতির যে আলোকচিত্রগুলি পৃথিবীতে প্রেরণ করে সেগুলি দেখে তিনি সেই ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেন।[৩]
১৯৮২ সালে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৮৫ সালে কর্নেল থেকেই পিএইচডি করেন।[৩][৪] তাঁর গবেষণাপত্রটি ছিল বৃহস্পতির বলয়-সংক্রান্ত। এই গবেষণাপত্রেই তিনি তাঁর দ্বারা বৃহস্পতির গসামার বলয়টি আবিষ্কারের কথা বলেন।[ক][৫]
১৯৯০ সালে দশ বছরের পুরনো ভয়েজার তথ্যাবলি ব্যবহার করে শোঅল্টয়ার শনির অষ্টাদশ তথা সর্ব-অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক উপগ্রহ প্যান আবিষ্কার করেন। উপগ্রহটি অভ্যন্তরভাগে শনিকে প্রদক্ষিণ করে এবং রাখালিয়া উপগ্রহের কাজ করে শনির বলয়ের এনকে ফাঁকটিকে খুলে রাখে।[৬][৭]
২০০৩ সালে শোঅল্টার ও জ্যাক জে. লিসায়ার হাবস স্পেস টেলিস্কোপ থেকে গৃহীত আলোকচিত্র থেকে ইউরেনাসের দু’টি নতুন উপগ্রহ (ম্যাব ও কিউপিড) আবিষ্কার করেন।[৭][৮] ২০০৬ সালে তাঁরা একই তথ্যউৎস থেকে সেই গ্রহেরই দু’টি অত্যন্ত অস্পষ্ট বলয়ের (মিউ ও নিউ বলয়) আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন।[৯][১০]
১৯৯৪ সালের জুলাই মাসে শ্যুমেকার-লেভি ৯ ধূমকেতুর সঙ্গে বৃহস্পতির সংঘর্ষের সময় বৃহস্পতির বলয়ে যে কুণ্ডলায়িত উল্লম্ব কুঞ্চন সৃষ্টি হয়েছিল, ২০১০ সালে শোঅল্টারই তা আবিষ্কার করেন। ১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে একটি অজ্ঞাত সংঘর্ষের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একগুচ্ছ ক্ষুদ্রতর কুঞ্চনের সৃষ্টি হয়। শোঅল্টার ও তাঁর সহ-গবেষকেরা শনির ডি বলয়ে অনুরূপ কুণ্ডলায়িত নকশা আবিষ্কার করেন।[১১][১২][১৩][১৪]
প্লুটোর নিকটবর্তী অঞ্চলে নিউ হোরাইজনস মহাকাশযানটি কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে তা নির্ধারণ করার ব্যাপারে শোঅল্টার নিউ হোরাইজনস দলের সহায়তা করেন। ২০১১ সালে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে প্লুটোর একটি অস্পষ্ট ধূলির বলয় অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি প্লুটোর চতুর্থ উপগ্রহ কারবারোস আবিষ্কার করেন।[৭][১৫] ২০১২ সালের জুলাই মাসে নিউ হোরাইজনস দলের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েই শোঅল্টার প্লুটোর পঞ্চম উপগ্রহ স্টিক্স আবিষ্কার করেন।[১৬][১৭]
২০১৩ সালের ১৫ জুলাই শোঅল্টারের নেতৃত্বে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল ২০০৪ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ কর্তৃক গৃহীত আলোকচিত্রগুলি থেকে নেপচুনের ইতিপূর্বে অজ্ঞাত চতুর্দশ উপগ্রহটি আবিষ্কার করেন। পরবর্তীকালে এটির নামকরণ করা হয় হিপোক্যাম্প। অনুমান করা হয়, এটির ব্যাস ৩৪.৮ কিলোমিটার।[১৮]
শোঅল্টার একজন উৎসুক স্কুবা ডাইভার ও আলোকচিত্রশিল্পী। তিনি ফ্র্যাংক ইয়েলিনকে বিবাহ করেন। তাঁরা ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করেন।[২][১৯]
মঙ্গল-অতিক্রমণকারী গ্রহাণু ১৮৪৯৯ শোঅল্টার তাঁর নামে নামাঙ্কিত।