মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল

পূর্ব উপকূল
East Coast
আটলান্টিক উপকূল
উপকূল
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের অন্তর্গত রাজ্যসমূহ। আটলান্টিক মহাসাগর বরাবর উপকূলীয় রাজ্যদের গাঢ় লাল রং করা হয়েছে। পূর্ব উপকূলের অন্তর্গত স্থলবেষ্টিত রাজ্যদের হালকা লাল রং করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের অন্তর্গত রাজ্যসমূহ। আটলান্টিক মহাসাগর বরাবর উপকূলীয় রাজ্যদের গাঢ় লাল রং করা হয়েছে। পূর্ব উপকূলের অন্তর্গত স্থলবেষ্টিত রাজ্যদের হালকা লাল রং করা হয়েছে।
দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
উপকূলীয় রাজ্যসমূহ
অন্যান্য রাজ্য ও অঞ্চলসমূহ
বৃহত্তম শহরনিউ ইয়র্ক
বৃহত্তম মহানগর এলাকানিউ ইয়র্ক
প্রধান শহরসমূহ
জনসংখ্যা (২০১৭ সালের অনুমান)[]
 • মোট১১,৮০,৪২,৬২৭
সময় অঞ্চলপূর্বাঞ্চলীয় (ইউটিসি−০৫:০০)
মধ্যাঞ্চলীয় (ইউটিসি-০৬:০০)
 • গ্রীষ্মকালীন (দিসস)পূর্বাঞ্চলীয় দিবালোক (ইউটিসি−০৪:০০)
-০৫:০০ (ইউটিসি)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল (ইংরেজি: East Coast কিংবা Eastern Seaboard) বা আটলান্টিক উপকূল (ইংরেজি: Atlantic Coast কিংবা Atlantic Seaboard) বলতে আটলান্টিক মহাসাগর বরাবর যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলকে বোঝায়। ১৭৭৬ সালে আটলান্টিক মহাসাগর বরাবর ১৩টি ব্রিটিশ উপনিবেশ (থার্টিন কলোনিজ) নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল, আর এই আটলান্টিক উপকূল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

মূলত আটলান্টিক উপকূলীয় রাজ্যগুলো মিলে এই অঞ্চল গঠন করছে। এই রাজ্যগুলি হলো কানেকটিকাট, ডেলাওয়্যার, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, ফ্লোরিডা, ভার্জিনিয়া, ম্যাসাচুসেটস, মেইন, মেরিল্যান্ড, রোড আইল্যান্ডসাউথ ক্যারোলাইনা। এছাড়া স্থলবেষ্টিত ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, পেনসিলভেনিয়াভার্মন্ট রাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়াকেও এই অঞ্চলের অন্তর্গত করা হয়।[]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

উত্তর আমেরিকায় গ্রেট ব্রিটেনের ১৩টি উপনিবেশ, যারা একত্রে "থার্টিন কলোনিজ" (Thirteen Colonies) নামে পরিচিত, আটলান্টিক উপকূল বরাবর অবস্থিত। এছাড়া আরও দুটি মার্কিন রাজ্য তৎকালীন ১৩টি উপনিবেশের অন্তর্গত ছিল না। ১৬৭৭ সালে মেইন ম্যাসাচুসেটস উপনিবেশের অন্তর্গত হয়েছিল।[] ফ্লোরিডা প্রথমদিকে ব্রিটেন ও পরে স্পেন দ্বারা শাসিত ছিল এবং ১৮২১ সালে এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্গত হয়েছিল।

ভূগোল ও জলবায়ু

[সম্পাদনা]

জনপরিসংখ্যান

[সম্পাদনা]

২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক উপকূলবর্তী রাজ্যগুলোর মোট জনসংখ্যা ১১,২৬,৪২,৫০৩, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৬%। নিউ ইয়র্ক একইসঙ্গে পূর্ব উপকূলের বৃহত্তম শহর ও মহানগর এলাকা। এছাড়া পূর্ব উপকূল যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল উপকূলীয় অঞ্চল।[]

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের প্রধান শহরসমূহ
শহর চিত্র অঙ্গরাজ্য শহরের জনসংখ্যা
(২০১৮ সালের অনুমান)
মহানগর এলাকার জনসংখ্যা
(২০১৮ সালের অনুমান)
আটলান্টা  জর্জিয়া ৪,৯৮,০৪৪ ৫৯,৪৯,৯৫১
এলিজাবেথ  নিউ জার্সি ১,২৮,৮৮৫ ১,৯৯,৭৯,৪৭৭
ওয়াশিংটন  ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া ৭,০৫,৭৪৯ ৬২,১৬,৫৮৯
জার্সি সিটি  নিউ জার্সি ২,৬৫,৫৩৯ ১,৯৯,৭৯,৪৭৭
জ্যাকসনভিল  ফ্লোরিডা ৯,০৩,৮৮৯ ১৫,২৩,৬১৫
নিউ ইয়র্ক  নিউ ইয়র্ক ৮৩,৯৮,৭৪৮ ১,৯৯,৭৯,৪৭৭
নিউয়ার্ক  নিউ জার্সি ২,৮২,০৯০ ১,৯৭,৯৪,৭৭
ফিলাডেলফিয়া  পেনসিলভেনিয়া ১৫,৮৪,১৩৮ ৬০,৯৬,১২০
ফোর্ট লডারডেল  ফ্লোরিডা ১,৮২,৫৯৫ ৫৭,৬২,৭১৭
বস্টন  ম্যাসাচুসেট্‌স ৬,৯৪,৫৮৩ ৪৬,২৮,৯১০
মায়ামি  ফ্লোরিডা ৪,৭০,৯১৪ ৬১,৫৮,৮২৪

সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]
যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহর নিউ ইয়র্কের ব্যস্তময় রাস্তাঘাট, জানুয়ারি ২০২০।

পূর্ব উপকূল যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসকদের প্রাথমিক প্রবেশপথ এবং এটি ইউরোপ, ক্যারিবীয় অঞ্চললাতিন আমেরিকা অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলে বৈচিত্র্যপূর্ণ বসতি গড়ে উঠেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এখানকার বৈচিত্র্য অনেক বেশি। একদিকে, দক্ষিণ ফ্লোরিডায় লাতিন আমেরিকার সংস্কৃতির প্রভাব লক্ষ করা যায়। অন্যদিকে, মিড-আটলান্টিক অঞ্চলে আইরিশ, ইতালীয়, ইংরেজ, জার্মান ও ফরাসি সংস্কৃতির দৃঢ় প্রভাব রয়েছে। নিউ ইয়র্ক মহানগর এলাকায় "লিটল ইন্ডিয়া" নামক একাধিক প্রবাসী ভারতীয় ছিটমহল এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের অপর উদাহরণ।

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। নিউ ইয়র্ক যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহর এবং বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক কেন্দ্র। নিউ ইয়র্কের মিডটাউন ম্যানহাটন বিশ্বের বৃহত্তম কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকাওয়াশিংটন, ডি.সি. যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ও রাজনৈতিক স্নায়ুকেন্দ্র।

মায়ামি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র। শীতকালে মায়ামি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের উষ্ণতম মহানগর, যার ফলে এটি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে প্রধান পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক আন্তর্জাতিক ব্যাংক মায়ামিতে অবস্থিত, আর মায়ামিতে অবস্থিত ৪৩৯টি সুউচ্চ ভবনের মধ্যে ৬৮টি ভবনের উচ্চতা ১৫০ মিটার (৪৯০ ফুট)-এর বেশি। যাত্রী ট্রাফিক ও ক্রুজ লাইনের সংখ্যা উভয়ের ভিত্তিতে মায়ামি বন্দর বিশ্বের ব্যস্ততম ক্রুজ বন্দর। প্রতি বছর ৫৫ লাখের বেশি যাত্রী এই বন্দর অতিক্রম করে। ব্রাজিলের পরেই ফ্লোরিডা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কমলালেবু উৎপাদক।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "East Coast States 2020"। এপ্রিল ১২, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১২, ২০২০ 
  2. East Coast Region Energy Sector Risk Profile (পিডিএফ), US Department of Energy Office of Electricity Delivery & Energy Reliability, সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৭ 
  3. "1500-1667 Contact & Conflict"Maine History Online। সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮ 
  4. 2010 Census: Resident Population Data ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত অক্টোবর ১৯, ২০১৩ তারিখে

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]