![]() ২০১৮ সালে শোজেই ইরানের হয়ে | |||
ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মাসুদ সোলায়মানি শোজেই | ||
জন্ম | ৯ জুন ১৯৮৪ | ||
জন্ম স্থান | শিরাজ, ইরান | ||
উচ্চতা | ১.৮৫ মিটার[১] | ||
মাঠে অবস্থান | এটাকিং মিডফিল্ডার | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | ট্র্যাক্টর সাজি | ||
জার্সি নম্বর | ৭ | ||
যুব পর্যায় | |||
১৯৯৯-২০০০ | সানাত নাফট | ||
২০০০-২০০২ | সাইপা এফসি | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
২০০২-২০০৩ | সানাত নাফট | ||
২০০৩-২০০৬ | সাইফা এফসি | ||
২০০৬-২০০৮ | আল শারজা | ||
২০০৮-২০১৩ | ওসাসুনা | ||
২০১৩-২০১৪ | লাস পালমাস | ||
২০১৪-২০১৫ | আল শাহনিয়া | ||
২০১৫-২০১৬ | আল গারাফা | ||
২০১৬-২০১৭ | পেনিওনিয়াস | ||
২০১৮ | এথেন্স এফসি | ||
২০১৮– | ট্র্যাক্টর সাজি | ||
জাতীয় দল | |||
২০০৫ | ইরান বি | ||
২০০৪– | ইরান | ||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
মাসুদ সোলায়মানি শোজেই (ফার্সি: مسعود سلیمانی شجاعی; জন্ম: ৯ জুন ১৯৮৪) একজন ইরানী পেশাদার ফুটবলার, যিনি ট্রাক্টর সাঝি এফসি এবং ইরান জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলেন। ২০০৪ সাল থেকে তিনি ইরানের হয়ে ৩টি বিশ্বকাপ এবং ৩টি এশিয়া কাপে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
শোজেই ইরানের শিরাজ শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং বেশীরভাগ সময়েই আবাদান এবং তেহরানে বসবাস করেন।[২] তিনি সানাত নাফট এফসির হয়ে নিজের ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর ইরান প্রো লিগের ক্লাব সাইপা এফসিতে যোগ দেন। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের পর শোজেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্লাব আল শারজা এসসিতে যোগ দেন। ৩ অক্টোবরে এমিরেটস ক্লাবের বিপক্ষে ১ম গোল করেন।
২০০৮ সালের ২৩ জুনে শোজেই ৩ বছরের চুক্তিতে স্প্যানিশ ক্লাব ওসাসুনাতে যোগ দেয়।[৩] ৩১ আগস্টে লা লিগায় অভিষিক্ত হন, ৩২ মিনিট খেলে ভিলারিয়ালের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেন।[৪] প্রথম দুই মৌসুমে তিনি সবসময়ে দলের বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন। ২০১১ সালে চুক্তির মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধি করেন। ২০১১-১২ মৌসুমে ইনজুরির জন্য পুরো মৌসুম খেলতে পারেনি। ২০১৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে মাঠে ফেরার পর লেভান্তের বিপক্ষে একটি গোল করেন, ম্যাচটিতে ওসাসুনা ২-০ গোলে জয়লাভ করেন।[৫] ২০১৩ সালের জুনে ওসাসুনা তাকে ছেড়ে দেয়। রিয়াল ভায়াদোলিদে যোগ দেয়ার কথা থাকলেও পরবর্তিতে আর যোগ দেননি।[৬]
২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর শোজেই স্পেনের আরেক ক্লাব সেগুন্দা ডিভিশনের ক্লাব লাস পালমাসে ১ বছরের চুক্তিতে যোগ দেন।[৭] কোপা দেলরে'তে সাবাদেল এফসির বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে গোল করেন, ম্যাচটি তার দল ৩-১ গোলে জয়লাভ করে।[৮]
২০১৪ সালের ১৫ মার্চে একই দলের বিপক্ষে লিগে জোড়া গোল এবং একটি এসিস্ট করেন, ম্যাচটি লাস পালমাস ৫-০ গোলের বিশাল জয় পায়।[৯]
২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের পর ১৪ ডিসেম্বরে শোজেই রিয়াল জারাগোজার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে কাতার স্টার্স লিগের ক্লাব আল-শাহানিয়ায় যোগ দেন।[১০] ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তিনি আল সাদ ক্লাবের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করে দলকে ৩-১ গোলে জয়লাভ করান।[১১] ১ বছর পর তার ক্লাব লিগ থেকে অবনমন করলে তিনি আল-ঘারাফা স্পোর্টস ক্লাবে ১ মিলিয়ন ডলারে যোগ দেন।[১২]
২০১৬ সালের ২২ শে জুলাই শোযেই গ্রিস সুপারলিগের ক্লাব পেনিওনাস এফসিতে ১ বছরের চুক্তিতে যোগ দেন।[১৩] ভালো একটি মৌসুম কাটানোর পর ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করে।[১৪][১৫] ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর গ্রিসের আরেক ক্লাব এথেন্স এফসির সাথে চুক্তি করেন।[১৬] ৬ জানুয়ারি তিনি এনাসতেসিয়া বাসেকতাসের বিপক্ষে ম্যাচের ২য় আর্ধে অভিষিক্ত হন এবং তার ১ এসিস্টে তার দল ৪-১ গোলে জয়লাভ করে।[১৭] এর ৩ দিন পর একই ক্লাবের বিপক্ষে তার একমাত্র এসিস্টে ১-০ গোলে জয়লাভ করে এথেন্স এফসি। ২০১৮ সালের ১ মার্চে শোজেই ডোমেস্টিক কাপের সেমি ফাইনালে এথলিটিকি এনোসি লারিসা এফসির বিপক্ষে ১টি গোল করলেও তার দল ২-১ গোলে পরাজিত হয়।[১৮]
শোজেই কোচ ব্রাঙ্কো ইভাঙ্কোভিচের অধীনে ইরান জাতীয় অনূর্ধ্ব-২৩ দলে সুযোগ পান। ২০০৪ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে লাওসের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য ডাক পান। বাছাইপর্বে ১টি ম্যাচে সুযোগ পান। শোজেই ২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে নিয়মিত ইরানের হয়ে খেলছে।[১৯] ২০১৪ সালের ১ জুন কার্লোস কুয়েরোজের অধীনে বিশ্বকাপ দলে অন্তুর্ভুক্ত হন।[২০] বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ১ম ম্যাচে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন এবং পরবর্তী ২ ম্যাচে আর্জেন্টিনা এবং বসনিয়ার বিপক্ষে মুল একাদশের সুযোগ পান। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর শোজেই ২০১৫ এএফসি এশিয়া কাপের জন্য জাতীয় দলে ডাক পান।[২১] আসরের প্রথম ম্যাচে বাহরাইনের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়লাভ করে ইরান, ম্যাচের ২য় গোলটি করেন শোজেই। শোজেই ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে চীন এবং উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ইরানের হয়ে অধিনাকত্ব করেন।[২২][২৩] ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট ইরানের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ রেজা দাভারাজানি ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন শোজেই ও তার সতীর্থ এহসান হাজসাফি তাদের ক্লাব পেনিয়োনিয়সের হয়ে ইজরাইলি ক্লাব মাক্কাবি হাইফার বিপক্ষে খেলায় তাদেরকে আর জাতীয় দলে নেয়া হবেনা।[২৪] ফুটবল ফেডারেশনের তদন্তের পর হাজসাফি জাতীয় দলে নভেম্বরে ফেরে এবং শোজেই জানায় তাদের ক্লাব তাদেরকে খেলার জন্য চাপ দিয়েছিল।[২৫]
২০১৮ সালের ১৮ মার্চে শোজেই তিউনেশিয়া এবং আলজেরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের জন্য জাতীয় দলে ডাক পান,[২৬] ইরানের সংসদে একজন সাংসদ তাদের সমালোচনা করে তাদেরকে আজীবন নিষিদ্ধের আবেদন জানায়।[২৭] কিছুদিন পর তিনি ১ম ইরানি ফুটবলার হিসেবে ৩টি বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ১৫ জুন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়লাভ করে ইরান, তবে শোজেই পরবর্তী ২ ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি।
শোজেই ২০০৯ সালের ১৭ জুন ইরানের সবুজ আন্দোলন সমর্থন করেন, ২০১০ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শোজেইসহ পাঁচজন ফুটবলার সবুজ ব্রেসলেট পড়ে খেলতে নামে।[২৮] শোজেই রেডিও ফার্দা'র কাছে এক সাক্ষাৎকারে ইরান ফুটবলের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন এবং শিশুদের উপড় যৌন নির্যাতন নিয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কথা বলেন। এরপর বেশ কয়েকবার ইরানের ফুটবল ফেডারেশনের দ্বারা তলব হয়েছেন। এছাড়াও ইরানের ফুটবল স্টেডিয়ামে নারীদের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কথা বলেন। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানীর সাথে সাক্ষাতে নিষেধাজ্ঞার তুলে নেয়ার অনুরোধ করেন।[২৯]