মিলনকুমার ব্যানার্জি | |
---|---|
ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল | |
কাজের মেয়াদ ১৯৯২ – ১৯৯৬ | |
কাজের মেয়াদ ২০০৪ – ২০০৯ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯২৮ |
মৃত্যু | ২০ জুলাই ২০১০ নতুন দিল্লি ভারত |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
সন্তান | দেবল ব্যানার্জি (পুত্র) গৌরব ব্যানার্জি (পুত্র) |
পিতামাতা | অমিয়চরণ ব্যানার্জি (পিতা) প্রভাদেবী (মাতা) |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | আইনজীবী |
পুরস্কার | পদ্মবিভূষণ (২০০৫) |
মিলনকুমার ব্যানার্জি (আনু. ১৯২৮ - ২০ জুলাই ২০১০) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি আইনজ্ঞ, যিনি ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এবং ২০০৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন এবং এর পূর্বে ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি সলিসিটর জেনারেলও ছিলেন। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারত সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ দ্বারা সম্মানিত হন।[১][২]
মিলন ব্যানার্জির জন্ম ব্রিটিশ ভারতের যুক্তপ্রদেশ অধুনা উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদে এক ব্রাহ্ম পরিবারে। পিতা অধ্যাপক অমিয়চরণ ব্যানার্জি ছিলেন খ্যাতনামা গণিতবিদ, এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। মাতা প্রভাদেবী ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং এলাহাবাদ মিউনিসিপ্যাল বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, কৈলাশ নাথ কাটজু প্রমুখ চল্লিশ সদস্যের অন্ততম। মিলন ব্যানার্জির পড়াশোনা এলাহাবাদেই। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে এল.এলবি পাশ করেন এবং ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় হতে এল.এলএম পাশের পর দেশে ফিরে আসেন।
প্রথমে তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টে ব্যবহারজীবির কাজ শুরু করেন। এরপর কিছুদিন তিনি কলকাতা উচ্চ আদালতেও প্র্যাকটিস করেন। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে তিনি বরিষ্ঠ আইনজীবী মনোনীত হন এবং আদালতের স্থায়ী সদস্য হন। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এবং সাত বছর পর সলিসিটর জেনারেল পদে আসীন হন। পি. ভি. নরসিংহ রাও-এর প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে নভেম্বর তিনি প্রথমবার ভারতের আটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন এবং ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন। এই সময়েই তিনি অযোধ্যা রামজন্মভূমি মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি অবগত করান এবং নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে সতর্ক করেন। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দের অযোধ্যা আইন বলে কিছু নির্দিষ্ট এলাকার অধিগ্রহণের বৈধতা বহাল রাখার মামলার রায়টি ছিল তার পঞ্চাশ বছরের কর্মজীবনের যুগান্তকারী ঘটনা।[১] পরে মনমোহন সিংহের নেতৃত্বে ইউপিএ-১ সরকার গঠিত হলে মিলন ব্যানার্জি ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় ভারতের আটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন এবং ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন।
মিলন ব্যানার্জি তার দীর্ঘ পঞ্চাশ বৎসরের কর্মজীবনে বহু যুগান্তকারী মামলায় জড়িত ছিলেন। এলাহাবাদ হাইকোর্টে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নাগরিকত্ব সংক্রান্ত মামলা এবং সুপ্রিম কোর্টে তাকে ভারতের নাগরিক বলে স্বীকৃতি দেওয়া, তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের বৈধতা ও ক্ষমতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা, ভারতরত্ন সহ পদ্ম পুরস্কার সম্বন্ধিত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।[২]
দ্বিতীয়বার আটর্নি জেনারেল হওয়ার পর ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে মায়াবতীর সঙ্গে ইউপিএ সরকারের সম্ভাব্য জোট পরিকল্পনায় মায়াবতীর তাজ করিডোর মামলা হতে অব্যহতি দেওয়ার প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্ট সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে আটর্নি জেনারেল রিপোর্ট উপেক্ষা করতে বলে।
২০০৯ খ্রিস্টাব্দে বোফর্স কেলেঙ্কারিতে অট্টাভিও কোয়াত্রোচিকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য তার মতামতকে "অ্যাটর্নি জেনারেলের অবস্থানকে অবমূল্যায়ন ও অবক্ষয়" হিসাবে দেখে। [৩]
মিলনকুমার ব্যানার্জি ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন দিল্লিতে প্রয়াত হন। তার স্ত্রী অবশ্য তার আগেই মারা যান। তাদের দুই পুত্রই আইনজীবি। তারা হলেন- দেবল ব্যানার্জি ও গৌরব ব্যানার্জি।