তালিকার নম্বর | STS 5 |
---|---|
প্রচলিত নাম | Mrs. Ples |
প্রজাতি | অস্ট্রালোপিথেকাস আফ্রিকানাস |
বয়স | সাড়ে একুশ লক্ষ বছর |
আবিষ্কারের স্থান | স্টের্কফন্টেইন, দক্ষিণ আফ্রিকা |
আবিষ্কারের তারিখ | ১৮ এপ্রিল ১৯৪৭ |
আবিষ্কারক | রবার্ট ব্রুম, জন টি. রবিনসন |
মিসেস প্লেস অস্ট্রালোপিথেকাস আফ্রিকানাস প্রজাতির আবিষ্কৃত সম্পূর্ণ জীবাশ্ম; যার জনপ্রিয় নাম এই মিসেস. প্লেস। এটি উত্তর আফ্রিকায় পাওয়া গিয়েছে। বেশিরভাগ অস্ট্রালোপিথেকাস জীবাশ্ম স্টারকফোনটেইনের কাছে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এটি ট্রান্সভাল প্রদেশের জোহান্সবার্গ থেকে ৪০ কিমি উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত। ১৯৪৭ সালের ১৮ এপ্রিল রবার্ট ব্রুম ও জন টি. রবিনসন এই জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন। ব্রুমের বোমা দ্বারা খনন করায় মিসেস প্লেসের খুলি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এবং কিছু টুকরো আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। তা সত্ত্বেও প্রাক মানবের আবিষ্কৃত জীবাশ্ম সমূহের মধ্যে মিসেস/মি. প্লিস হচ্ছে এ যাবৎকালের প্রাপ্ত সবচেয়ে নিখুঁত জীবাশ্ম খুলি। বর্তমানে এই খুলি উগান্ডার জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শিত হয়েছে।
ব্রুমের তরুণ সহযোগী; "মিসেস প্লেস" নামকরণ করেন। এই নামটা এসেছে বৈজ্ঞানিক নাম প্লেসিয়ানথ্রোপাস ট্রান্সভালেনসিস (ট্রান্সভাল এর কাছাকাছি মানুষ) এর প্রথম শব্দ প্লেসিয়ানথ্রোপাস থেকে। এই বৈজ্ঞানিক নাম ব্রুম প্রথমে দিতে চেয়েছিলেন, পরবর্তীতে এর নামকরণ করা হয় অস্ট্রালোপিথেকাস আফ্রিকানাস। বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রবন্ধে এই নমুনার নাম দেওয়া হয়েছিল এসটিএস ৫।[১]
এর গণ হচ্ছে অস্ট্রালোপিথেকাস; যা হোমো গণেরই (মানব প্রজাতি এই গণেরই অন্তর্ভুক্ত) পূর্বপুরুষ। যদিও এই জীবাশ্মের করোটি শিম্পাঞ্জির সাথে সাদৃশ্যপুর্ন কিন্তু মিসেস প্লেস মানুষের ন্যায় সোজা হয়ে দাঁড়াতে সক্ষম ছিল। এটা নৃবিজ্ঞানীদের কাছে বিষ্ময়কর ছিল; কারণ এই মিসেস প্লেসের মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা ছিল মাত্র ৪৮৫ ঘনসেন্টিমিটার (২৯.৬ ঘনইঞ্চি)।[২] নৃবিজ্ঞানীদের মহলে একটা ধারণ ছিল, মস্তিষ্কের আকার যত বড় হতে থাকবে, মানুষের পুর্বপ্রজাতি গুলো ততই দুই পায়ে হাটতে শিখবে। কিন্তু মিসেস প্লেস ছোট মস্তিষ্কের হওয়া সত্ত্বেও দুই পায়ে দাঁড়ানো প্রমাণ করে দেয়; মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি পাবার পূর্বেই প্রাক মানব প্রজাতি দুই পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম ছিল।
"মিসেস প্লেসের" লিঙ্গ কোনটি তা নির্ধারিত নয়। তাই তিনি মি. প্লেসও হতে পারেন। এছাড়াও এক্সরের মাধ্যমে এই জীবাশ্মের দাঁত পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে এই জীবাশ্মের মালিক হয়তো কিশোর ছিলেন। তাই তিনি মিস প্লেস অথবা মাস্টার প্লেসও হতে পারেন।
নৃবিজ্ঞানী অধ্যাপক ফেডরিক ই. গ্রিন এই জীবাশ্মের যৌনতা নির্ধারণের জন্য দন্তবিন্যাসের উপর গবেষণা করেন।[৩] জীবাশ্মের উপর সিটি স্ক্যান করার মাধ্যমে তিনি সিদ্ধান্তে উপনীত হন, এই জীবাশ্মের মালিক এক মধ্যবয়সী নারী। তবে তার গবেষণার ফলাফল নিয়ে বিতর্ক আছে; কারণ একেবারে বিপরীত ফলাফলও এসেছে। এই জীবাশ্মের বয়স ইউরেনিয়াম লেড কৌশল প্রয়োগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ লক্ষ ৫০ হাজার বছর।[৪]