মীনা কান্দাসামি | |
---|---|
জন্ম | ইলাভেনিল কান্দাসামি ১৯৮৪ (বয়স ৩৯–৪০) |
ছদ্মনাম | মীনা |
পেশা | লেখক, নারীবাদী, সমাজকর্মী, অনুবাদক |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
ইলাভেনিল মীনা কান্দাসামি একজন ভারতীয় কবি, ঔপন্যাসিক, অনুবাদক, সমাজকর্মী ও নারীবাদী যিনি তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে বাস করেন।[১] তিনি নারী ও দলিতদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করেন। ২০০৬ সালে বার হয় তার কবিতার বই টাচ এবং এর চার বছর পর বার হয় মিজ মিলিটান্সি। বইদ্বয়ের জন্য তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। ২০০১-২০০২ থেকে তিনি দ্বিমাসিক ইংরেজি সাময়িকী দলিত সম্পাদনা করে আসছেন।[২] আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক লেখার প্রোগ্রামে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। সাহিত্যকর্মের বাইরে তিনি নারী, রাজনীতি, দলিত, দুর্নীতি প্রভৃতি বিষয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি সরব। তিনি আউটলুক ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দুর মত পত্রিকায় কলাম লিখে থাকেন।[৩][৪][৫] ২০১২ সালে হায়দ্রাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গরুর মাংস খাওয়া বিতর্কে অংশ নিয়ে তিনি আলোচিত-সমালোচিত হন।[৬]
১৯৮৪ সালে এক তামিল পরিবারে জন্ম নেন তিনি। তার পিতামাতা দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়য়ে অধ্যাপনা করতেন।[১][৭][৮] তার পিতামাতা তার নাম ইলাভেনিল রাখেন। এরপর তিনি লেখালেখি করার সময় নিজের নাম মীনা রাখেন।[৯] চেন্নাইয়ের আন্না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজভাষাবিজ্ঞানে ডক্টরেট অব ফিলোসফি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।[১] তিনি ১৭ বছর বয়স থেকে কাব্যচর্চা শুরু করেন।[১০] এরপর দলিত সম্প্রদায়ের লেখকদের বই ইংরেজিতে অনুবাদ শুরু করেন তিনি।[১১]
তার লেখনীতে ফুটে ওঠে নারীদের বঞ্চনার কথা, ফুটে ওঠে দলিতদের অধিকার আদায়ের কথা।[১২] ২০০৬ সালে তার লেখা কবিতার বই টাচ প্রকাশিত হয়, যেটির ভূমিকা লিখেছিলেন কমলা সুরাইয়া।[১] বইটি পাঁচটা ভাষায় অনূদিত হয়। এরপর তার বই মিজ মিলিটান্সি প্রকাশিত হয়।[১] বইটি জাতপাত বিরোধী ও নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে লেখা। মাস্কারা, মাই লাভার্স স্পিকস অব রেপ এর জন্য তিনি পুরস্কৃত হয়েছিলেন।[১৩] তার লেখনী প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সংগ্রহ ও জার্নালে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: অ্যান্থলজি অব কন্টেম্পোরারি ইন্ডিয়ান পোয়েট্রি, দ্য লিটল ম্যাগাজিন, কাব্য ভারতী, দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আউটলুক, তেহেলকা ইত্যাদি।[১৪][১৫] ২০০৯ সালে আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারন্যাশনাল রাইটিং প্রোগ্রামে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় হিসেবে তিনি ওখানে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি বিভিন্ন কবিতা উৎসবে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, আয়াঙ্কালি নামের এক দলিত নেতার জীবনীগ্রন্থ যৌথভাবে রচনা করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে কিলভেনমানি গণহত্যা নিয়ে দ্য জিপসি গডেস শিরোনামে বই লিখেন।[১০]
নারী ও দলিতদের অধিকার আদায়ে তিনি সদা তৎপর। তার লেখনীতে ফুটে ওঠে তার দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি নারী ও দলিতদের বিপদে আপদে তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। তাদের প্রতি ঘটা অনাচার অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।[১৬] সমাজে ঘটা অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হওয়ার জন্য তাকে শিকার হতে হয় হুমকির। তিনি এসবের পরোয়া করেন না। তিনি নারী ও দলিতদের সাহায্য অব্যাহত রাখেন।
২০১২ সালে ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলের 'খাদ্যে ফ্যাসিবাদ' এর বিরোধিতা করে ক্যাম্পাসে বিফ ফেস্টিভালের আয়োজন করে। এতে তিনি ছাড়াও ২০০ জন শিক্ষক ও ছাত্র অংশ নেন। তিনি সেখানে অনুষ্ঠানের সপক্ষে বক্তৃতা করেন। এরপর ডানপন্থী সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বিদ্যায়তনকে রণক্ষেত্রে পরিণত করে।[১৭] মীনা কান্দাসামিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে ডানপন্থী সংগঠন ও সংগঠন সংশ্লিষ্টরা।[১৬][১৮]
দ্য নেটওয়ার্ক অব উইমেন ইন মিডিয়া ইন্ডিয়া তার প্রতি আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানায়।[১৯] তিনি ক্যাম্পাসে তার দেখা সহিংসতার সমালোচনা করে আউটলুক ইন্ডিয়ায় নিবন্ধ লিখেছিলেন।[২০]
তিনি তামিল ভাষায় বহু কবিতা ও কবিতার বই অনুবাদ করেছেন।[২১] এছাড়াও তিনি দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায় সাহিত্যচর্চা করা বিভিন্ন লেখকদের বই ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন।
তিনি মালয়লাম ভাষার চলচ্চিত্র ওরাঅলপ্পোক্কাম এ অভিনয় করেছেন।[২২][২৩]