মুন্ডা ভাষা পরিবারের দুটি শাখার মধ্যে উত্তর মুন্ডা শাখার ভাষাগুলো বেশি প্রচলিত। এই শাখার সাঁওতালি ভাষা সবচেয়ে বেশি মানুষ বলে এবং ভারতে এটি একটি সরকারি স্বীকৃত ভাষা। দক্ষিণ মুন্ডা শাখার তুলনায় উত্তর মুন্ডার বক্তার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। সাঁওতালির পরে, মুন্ডারি ও হো ভাষা বক্তার সংখ্যায় যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এরপর রয়েছে কোরকু ও সোরা ভাষা। বাকি মুন্ডা ভাষাগুলো বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট জনগোষ্ঠী ব্যবহার করে এবং এই ভাষাগুলোর তেমন বিবরণ পাওয়া যায় না।[১২]
মুন্ডা ভাষাগুলোর বৈশিষ্ট্য: মুন্ডা ভাষায় তিনটি সংখ্যা ব্যবহার করা হয় - একবচন, দ্বিবচন এবং বহুবচন। মুন্ডা ভাষায় দুটি লিঙ্গ ব্যবহার করা হয় - সজীব এবং নির্জীব। 'আমরা' বলার সময় মুন্ডা ভাষায় দুটি ভাষা ব্যবহার করা হয় - সমষ্টিবাচক (বক্তা নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করেন) এবং ব্যক্তিবাচক (বক্তা নিজেকে বাদ দেন)।[১৩] মুন্ডা ভাষায় কাল নির্দেশ করার জন্য প্রত্যয় বা সহায়ক ক্রিয়ার ব্যবহার করা হয়।[১৪][১৫] মুন্ডা ভাষায় শব্দের আংশিক, সম্পূর্ণ ও জটিল পুনরাবৃত্তি ব্যবহার করা হয়। মুন্ডা ভাষা বহুসংশ্লেষী এবং সমীভূত শব্দ-নির্মাণকারী। মুন্ডা ভাষায় শব্দের মাঝখানে ব্যতীত ব্যঞ্জনধ্বনির ক্রমিক সমাহার বিরল।[১৬][১৭]
বেশিরভাগ ভাষাবিদ, যেমন পল সিডওয়েল (২০১৮), মনে করেন যে প্রত্ন-মুন্ডা ভাষা সম্ভবত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোথাও প্রত্ন-অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষা থেকে আলাদা হয়েছিল। প্রায় ৪০০০-৩৫০০ বছর আগে ( আনু. ২০০০ – আনু. ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে) এটি বর্তমান ওড়িশার উপকূলে পৌঁছায় এবং ইন্দো-আর্যদের আগমনের পর এই অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।[১৮]
রাউ ও সিডওয়েল (২০১৯)[১৯][২০] এবং ব্ল্যাঞ্চ (২০১৯)[২১] মনে করেন যে প্রাক-প্রত্ন-মুন্ডা ভাষা স্থলপথে নয়, বরং সামুদ্রিক পথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহানদী নদীর তীরে এসে পৌঁছেছিল। এরপর মুন্ডা ভাষা মহানদী অববাহিকায় ছড়িয়ে পড়ে। ২০২১ সালের গবেষণায় দেখা গেছে যে মুন্ডা ভাষা পূর্ব উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং পূর্ব-ইন্দো-আর্য ভাষাগুলোর ওপর প্রভাব ফেলেছিল।[২২][২৩]
মুন্ডা ভাষাগোষ্ঠী পাঁচটি স্পষ্ট শাখায় বিভক্ত (করকু একটি বিচ্ছিন্ন ভাষা হিসেবে, রেমো, সাভারা, খেরওয়ারি এবং খারিয়া-জুয়াং)। তবে, এই শাখাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
ডিফ্লথ (২০০৫) কোরাপুতকে বজায় রাখেন (অ্যান্ডারসন এটিকে প্রত্যাখ্যান করেন নিচে দেখুন), কিন্তু দক্ষিণ মুণ্ডার ধারণাটি বাতিল করে খারিয়া-জুয়াংকে উত্তরের ভাষাগুলোর সাথে স্থাপন করেন:
যাইহোক, ২০০১ সালে, অ্যান্ডারসন খারিয়া এবং জুয়াং-কে জুয়াং-খারিয়া শাখা থেকে আলাদা করেন এবং তার পূর্ববর্তী গুতোব-রেমো-গটাʔ শাখা থেকে গটাʔ-কেও বাদ দেন। সুতরাং, তার ২০০১ সালের প্রস্তাবনা দক্ষিণ মুণ্ডার জন্য ৫টি শাখা নিয়ে আসে।
অ্যান্ডারসন (২০০১) কোরাপুটের বৈধতাকে প্রত্যাখ্যান করার পাশাপাশি ডিফ্লথ (১৯৭৪) এর তত্ত্বটিকে অনুসরণ করেন। তিনি আকারগত তুলনার (morphological comparison) ভিত্তিতে প্রস্তাব করেন যে প্রত্ন-দক্ষিণ মুণ্ডা সরাসরি ডিফ্লথের তিনটি কন্যা শাখায় (Daughter groups) বিভক্ত হয়েছে: খারিয়া-জুয়াং, সোরা-গোরাম (সাভারা), এবং গুতোব-রেমো-গটাঁ (রেমো)।[২৬]
তার দক্ষিণ মুণ্ডা শাখায় নিম্নলিখিত পাঁচটি শাখা রয়েছে, যেখানে উত্তর মুণ্ডা শাখাটি ডিফ্লথ (১৯৭৪) এবং অ্যান্ডারসন (১৯৯৯)-এর অনুরূপ।
বিঃদ্রঃ সংযোগ (Linkage) "↔" প্রতীকটি বিশেষ উদ্ভাবনী সমোপ্রকরণকে নির্দেশ করে (কাঠামোগত, শাব্দিক)। অস্ট্রোনেশিয়ান এবং পাপুয়ান ভাষাবিজ্ঞানে ম্যালকম রস একে "সংযোগ" বলে অভিহিত করেছেন।
সিডওয়েল এবং রাউ (২০১৫: ৩১৯, ৩৪০-৩৬৩) মূল-মুন্ডা ভাষার আদিরূপগুলো পুনর্গঠন করেছেন।[২৮] এরপর থেকে রাউ (২০১৯) এই মূল-মুন্ডা পুনর্গঠন প্রক্রিয়া আরও পরিমার্জিত ও উন্নত করেছেন।[২৯][৩০]
↑Kidwai, Ayesha (২০০৮), "Gregory D. S. Anderson the Munda Verb: Typological Perspectives", Annual Review of South Asian Languages and Linguistics, Trends in Linguistics. Studies and Monographs [TiLSM], Berlin, New York: Mouton de Gruyter, পৃষ্ঠা 265–272, আইএসবিএন978-3-11-021150-4, ডিওআই:10.1515/9783110211504.4.265উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Anderson, Gregory D. S. (৭ মে ২০১৮), Urdze, Aina, সম্পাদক, "Reduplication in the Munda languages", Non-Prototypical Reduplication, Berlin, Boston: De Gruyter, পৃষ্ঠা 35–70, আইএসবিএন978-3-11-059932-9, ডিওআই:10.1515/9783110599329-002উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Kidwai, Ayesha (২০০৮), "Gregory D. S. Anderson the Munda Verb: Typological Perspectives", Annual Review of South Asian Languages and Linguistics, Trends in Linguistics. Studies and Monographs [TiLSM], Berlin, New York: Mouton de Gruyter, পৃষ্ঠা 265–272, আইএসবিএন978-3-11-021150-4, ডিওআই:10.1515/9783110211504.4.265উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Anderson, Gregory D. S. (১ জানুয়ারি ২০১৪), "5 Overview of the Munda Languages", The Handbook of Austroasiatic Languages (2 vols), BRILL, পৃষ্ঠা 364–414, আইএসবিএন978-90-04-28357-2, ডিওআই:10.1163/9789004283572_006উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Rau, Felix; Sidwell, Paul (২০১৯)। "The Munda Maritime Hypothesis"। Journal of the Southeast Asian Linguistics Society (JSEALS)। 12 (2)। hdl:10524/52454। আইএসএসএন1836-6821।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Rau, Felix and Paul Sidwell 2019. "The Maritime Munda Hypothesis." ICAAL 8, Chiang Mai, Thailand, 29–31 August 2019. ডিওআই:10.5281/zenodo.3365316
↑Ivani, Jessica K; Paudyal, Netra; Peterson, John (2021). Indo-Aryan – a house divided? Evidence for the east–west Indo-Aryan divide and its significance for the study of northern South Asia. Journal of South Asian Languages and Linguistics, 7(2):287-326. ডিওআই:10.1515/jsall-2021-2029
↑Anderson, Gregory D.S. (1999). "A new classification of the Munda languages: Evidence from comparative verb morphology." Paper presented at 209th meeting of the American Oriental Society, Baltimore, MD.
↑Anderson, G.D.S. (২০০৮)। ""Gtaʔ" The Munda Languages. Routledge Language Family Series. London: Routledge. pp. 682-763"। Routledge Language Family Series (3): 682–763।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Anderson, Gregory D S (২০০১)। A New Classification of South Munda: Evidence from Comparative Verb Morphology। Indian Linguistics। 62। Poona: Linguistic Society of India। পৃষ্ঠা 21–36।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Sidwell, Paul. 2015. "Austroasiatic classification." In Jenny, Mathias and Paul Sidwell, eds (2015). The Handbook of Austroasiatic Languages. Leiden: Brill.
↑Sidwell, Paul and Felix Rau (2015). "Austroasiatic Comparative-Historical Reconstruction: An Overview." In Jenny, Mathias and Paul Sidwell, eds (2015). The Handbook of Austroasiatic Languages. Leiden: Brill.
Anderson, Gregory D S (২০০৭)। The Munda verb: typological perspectives। Trends in linguistics। 174। Berlin: Mouton de Gruyter। আইএসবিএন978-3-11-018965-0।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Anderson, Gregory D S, সম্পাদক (২০০৮)। Munda Languages। Routledge Language Family Series। 3। Routledge। আইএসবিএন978-0-415-32890-6।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Anderson, Gregory D. S. (২০১৫)। "Prosody, phonological domains and the structure of roots, stems and words in the Munda languages in a comparative/historical light."। Journal of South Asian Languages and Linguistics। 2 (2): 163–183। এসটুসিআইডি63980668। ডিওআই:10.1515/jsall-2015-0009।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Anderson, Gregory D. S.; Boyle, John P. (২০০২)। "Switch-Reference in South Munda"। Macken, Marlys A.। Papers from the 10th Annual Meeting of the Southeast Asian Linguistics Society(পিডিএফ)। Tempe, AZ: Arizona State University, South East Asian Studies Program। পৃষ্ঠা 39–54। ২০১৫-০৬-১৬ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Brown, E. K., সম্পাদক (২০০৬)। "Munda Languages"। Encyclopedia of Languages and Linguistics। Oxford: Elsevier Press।
Donegan, Patricia; Stampe, David (২০০২)। "South-East Asian Features in the Munda Languages: Evidence for the Analytic-to-Synthetic Drift of Munda"। Chew, Patrick। Proceedings of the 28th Annual Meeting of the Berkeley Linguistics Society, Special Session on Tibeto-Burman and Southeast Asian Linguistics, in honour of Prof. James A. Matisoff। Berkeley, CA: Berkeley Linguistics Society। পৃষ্ঠা 111–129।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Newberry, J (২০০০)। North Munda hieroglyphics। Victoria, BC: J Newberry।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Śarmā, Devīdatta (২০০৩)। Munda: sub-stratum of Tibeto-Himalayan languages। Studies in Tibeto-Himalayan languages। 7। New Delhi: Mittal Publications। আইএসবিএন81-7099-860-3।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Varma, Siddheshwar (১৯৭৮)। Munda and Dravidian languages: a linguistic analysis। Hoshiarpur: Vishveshvaranand Vishva Bandhu Institute of Sanskrit and Indological Studies, Panjab University। ওসিএলসি25852225।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Zide, Norman H.; Anderson, G. D. S. (১৯৯৯)। Bhaskararao, P., সম্পাদক। "The Proto-Munda Verb and Some Connections with Mon-Khmer"। Working Papers International Symposium on South Asian Languages Contact and Convergence, and Typology। Tokyo: 401–421।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Zide, Norman H.; Anderson, Gregory D. S. (২০০১)। "The Proto-Munda Verb: Some Connections with Mon-Khmer"। Subbarao, K. V.; Bhaskararao, P.। Yearbook of South-Asian Languages and Linguistics। Delhi: Sage Publications। পৃষ্ঠা 517–540। ডিওআই:10.1515/9783110245264.517।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Anderson, Gregory D. S.; Zide, Norman H. (২০০১)। "Recent Advances in the Reconstruction of the Proto-Munda Verb"। Brinton, Laurel J.। Historical Linguistics 1999: Selected papers from the 14th International Conference on Historical Linguistics, Vancouver, 9–13 August 1999। Current Issues in Linguistic Theory। 215। Amsterdam: Benjamins। পৃষ্ঠা 13–30। আইএসবিএন978-90-272-3722-4। ডিওআই:10.1075/cilt.215.03and।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Rau, Paul; Sidwell, Felix (২০১৯)। The Maritime Munda Hypothesis। ICAAL 8, Chiang Mai, Thailand, 29–31 August 2019। ডিওআই:10.5281/zenodo.3365316।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Rau, Felix; Sidwell, Paul (২০১৯)। "The Maritime Munda Hypothesis"। Journal of the Southeast Asian Linguistics Society। 12 (2): 31–53। hdl:10524/52454।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)