মুম্বই মনোরেল | |
---|---|
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |
মালিকানায় | মুম্বই মহানগর অঞ্চল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এমএমআরডিএ) |
সেবা উপভোগকারী এলাকা | মুম্বই শহর ও মুম্বই শহরতলি |
অবস্থান | মুম্বই,মহারাষ্ট্র, ভারত |
পরিবহনের ধরন | স্ট্র্যাডল-বিম মনোরেল |
লাইনের (চক্রপথের) সংখ্যা | ১ |
বিরতিস্থলের (স্টেশন) সংখ্যা | ১৭ |
বাৎসরিক যাত্রীসংখ্যা | ১২ লাখ |
প্রধান কার্যালয় | মুম্বই,মহারাষ্ট্র |
চলাচল | |
চালুর তারিখ | ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ |
রেলগাড়ির দৈর্ঘ্য | ৪ |
দুই রেলগাড়ীর মধ্যবর্তী সময় |
|
কারিগরি তথ্য | |
মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য | ১৯.৫৪ কিলোমিটার (১২.১৪ মাইল)[২] |
পথের (ট্র্যাক) সংখ্যা | ২ |
বিদ্যুতায়ন | ৭৫০ ভোল্ট ডিসি তৃতীয় রেল |
গড় গতিবেগ | ৬৫ কিলোমিটার (৪০ মাইল) |
শীর্ষ গতিবেগ | ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) |
মুম্বই মনোরেল হল মহারাষ্ট্রের মুম্বই শহরের একটি মনোরেল ব্যবস্থা, যা শহরে গণপরিবহনের একটি বড় সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। প্রকল্পটি মুম্বই মহানগর অঞ্চল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এমএমআরডিএ) দ্বারা বাস্তবায়িত ও পরিচালিত হয়। এই মনোরেল ব্যবস্থাটি হল ১৯২০-এর দশকে কুন্দেলা ভ্যালি রেলওয়ে ও পাতিয়ালা স্টেট মনোরেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ভারতের প্রথম মনোরেল ব্যবস্থা। ব্যবস্থাটির প্রথম পর্যায় ২০১৪ সালে জনসাধারণের জন্য আংশিকভাবে খোলা হয়, এর পরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়।
মুম্বই মহানগর অঞ্চল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এমএমআরডিএ) প্রথম ২০০৫ সালে একটি মনোরেল প্রস্তাব করেছিল।[৩] এমএমআরডিএ-র মতে, শহরে চলাচলকারী বাস পরিষেবাটি খুব ধীর গতিতে জনাকীর্ণ ও সংকীর্ণ এলাকায় চলাচল করে, এইভাবে যাত্রীদের কোন সুবিধা দেয় না এবং যানজট বৃদ্ধি করে। এমএমআরডিএ উল্লেখ করেছিল, যে মনোরেল শহরের অনেক অংশকে সংযুক্ত করবে যা শহরতলি রেল ব্যবস্থা বা প্রস্তাবিত মেট্রো রেল ব্যবস্থা দ্বারা সংযুক্ত ছিল না। সংস্থাটি আরও বলেছিল, যে মনোরেলটি মেট্রো ও শহরতলি রেল ব্যবস্থায় একটি দক্ষ সহযোগী পরিবহন হিসাবে কাজ করবে, যা যাত্রীদের জন্য দক্ষ, নিরাপদ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী মূল্যের গণপরিবহন সরবরাহ করবে।[৪]
মুম্বইতে প্রথম মনোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বেশিরভাগই ২০১৪ সাল থেকে করা হয়েছিল। কিন্তু বহু বছর ধরে বিজ্ঞপ্তির বাইরে কিছুই আসেনি। প্রস্তাবিত লাইনটি চেম্বুর হয়ে জ্যাকব সার্কেল, ওয়াদালা ও মহুলকে সংযুক্ত করবে, যা বিদ্যমান মুম্বই শহরতলি রেলকে একটি ফিডার পরিষেবা প্রদান করবে।[৫] লারসেন অ্যান্ড টুব্রোকে ২০০৮ সালের ১১ই নভেম্বর মালয়েশিয়ার অংশীদার স্কোমি ইঞ্জিনিয়ারিং বিএইচডি-এর সঙ্গে ২০২৯ সাল পর্যন্ত মনোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ₹২৪.৬ বিলিয়নের (ইউএস$৩৩০ মিলিয়ন) চুক্তি প্রদান করা হয়েছিল।[৬]
মনোরেল পরিষেবার খরচ ২০১০ সালে ₹২.০ বিলিয়ন (প্রায় ₹৮৫০ মিলিয়ন (ইউএস$১১ মিলিয়ন) প্রতি কিমি) অনুমান করা হয়েছিল। আনুমানিক ১৩৫ কিলোমিটার (৮৪ মাইল) লাইন ২০১১ সাল থেকে ২০৩১ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।[৭]
মহারাষ্ট্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বাণ ২০০৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি চেম্বুরের একার্স ক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।[৮] এমএমআরডিএ দুটি ধাপে লাইন নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল। প্রথম অংশটি দ্বীপ শহরের উপকণ্ঠে ওয়াদালাকে উত্তর-পূর্বে চেম্বুরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে এবং দ্বিতীয় অংশটি ওয়াদালাকে দক্ষিণ মুম্বইয়ের জ্যাকব সার্কেলের সাথে সংযুক্ত করেছে।[৯] প্রকল্পের মূল সময়সীমা ২০১১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ছিল।[১০] প্রকল্পটি জমি সংক্রান্ত সমস্যা, সীমানা অপসারণ, নাগরিক সংস্থা ও রেলওয়ের কাছ থেকে অনুমতি পেতে বিলম্ব,[১১] এবং সমাপ্তির জন্য বেশ কয়েকটি সময়সীমা অতিক্রম করার কারণে বিলম্বিত হয়েছিল। প্রথম পর্বের জন্য সময়সীমা হিসাবে ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাস, ২০১১ সালের মে মাস, ২০১১ সালের নভেম্বর মাস, ২০১২ সালের মে মাস, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাস, ২০১৩ সালের জুন মাস, ২০১৩ সালের আগস্ট মাস, ২০১৩ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর,[১২] ২০১৩ সালের অক্টোবর মাস ও ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাস সমূহকে ঘোষণা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্বের জন্য ২০১১ সালের মে মাস, ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাস, ২০১২ সালের মে মাস, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাস, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাস, ২০১৪ সালের জুন মাস, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস ও ২০১৫ সালের মার্চ মাস ঘোষিত সময়সীমা ছিল।[১৩] আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট অনিল গালগালির দায়ের করা তথ্যের অধিকার (আরটিআই) অনুরোধে প্রকাশ করা হয়েছিল, যে মনোরেল চালু করতে তিন বছরের বিলম্ব প্রাথমিকভাবে রুটের পথ পরিবর্তনের কারণে হয়েছিল, যা প্রকল্পেকে আরও ব্যয় বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করেছিল।[১৪]
১০৮-মিটার পথে পরীক্ষামূলক ট্রেন পরিচালনা ২০১০ সালের ২৬শে জানুয়ারি সফলভাবে পরিচালিত হয়েছিল।[১৫] ওয়াদালা থেকে ভক্তি পার্ক মনোরেল স্টেশন পর্যন্ত এক কিলোমিটারের পরীক্ষা ২০১২ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি চালানো হয়েছিল।[১৬] সম্পূর্ণ রুটের প্রথম পরীক্ষা এমএমআরডিএ কর্তৃক ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে চালানো হয়েছিল।[১০]
এমএমআরডিএ ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে ঘোষণা করেছিল, যে এটি চেম্বুর-ওয়াদালা অংশের জন্য নিরাপত্তা শংসাপত্র কর্তৃপক্ষ বা সেফটি সার্টিফিকেশন অথরিটির (ইঞ্জিনিয়ার) কাছে একটি আবেদন জমা দিয়েছে। সেফটি সার্টিফিকেশন অথরিটি নথিপত্রের যাচাই করে, এবং করিডোরটি শারীরিকভাবে পরিদর্শন করে, এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুধুমাত্র নিরাপত্তা শংসাপত্র কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ার পরই শুরু করা সম্ভব ছিল।[১৭] বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাসমূহ ইলেকট্রিক্যাল ইন্সপেক্টর জেনারেল দ্বারা প্রত্যয়িত হয়েছিল।[১৬] ঠিকাদার এলঅ্যান্ডটি ও স্কোমি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কনসোর্টিয়াম, একজন স্বাধীন পরিদর্শক দ্বারা নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়েছিল। সিঙ্গাপুরের এসএমআরটি কর্পোরেশন ও রেলওয়ে নিরাপত্তার অবসরপ্রাপ্ত কমিশনার আর.সি. গার্গ দ্বারা প্রাতিষ্ঠানিক নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়েছিল।[১৮] চূড়ান্ত নিরাপত্তা শংসাপত্র ২০ জানুয়ারি জারি করা হয়েছিল।[১৯][২০] নিরাপত্তা শংসাপত্রটি তারপর রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল, যা ব্যবস্থাটি চালু করার জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবস্থার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের নিয়ম উল্লেখ করা হয়েছিল, যার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন প্রয়োজন ছিল।[২১]
২০১৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি, উদ্বোধনের সময় লাইন ১-এর সর্বনিম্ন ভাড়া ₹৫ ছিল।
মনোরেল ট্রায়াল চালানোর সময় মুম্বই মেট্রোপলিটন রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এমএমআরডিএ) দ্বারা পরিচালিত সমীক্ষা অনুসারে, এটি পাওয়া গেছে যে মনোরেল ৬৫-৮৫ ডেসিবেলের মধ্যে শব্দ উৎপন্ন করে, যা একটি বিইএসটি বাসের ৯৫ ডেসিবেল শব্দের মাত্রা থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম।[২২]
মনোরেলটির সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার/ঘন্টা (৫০ মাইল), গড় গতি ৬৫ কিলোমিটার/ঘন্টা (৪০ মাইল)[২৩] এবং স্টেশনসমূহে যাত্রাবিরতি সময় সহ সামগ্রিক গতি প্রায় ৩১ কিলোমিটার/ঘন্টা (১৯ মাইল)।[৭]
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; times
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি