শায়খুল আলম পীর আলাউদ্দিন সিদ্দিকী | |
---|---|
پِیر مُحَمَّد عَلَاؤالدّین صِدِیقِی | |
নেরিয়ান শরীফের ২য় তত্ত্বাবধায়ক | |
অফিসে ১১ এপ্রিল ১৯৭৫ – ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | |
পূর্বসূরী | গোলাম মহিউদ্দিন গজনভী |
উত্তরসূরী | সুলতানুল আরেফিন সিদ্দিকী |
মহিউদ্দিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম উপাচার্য | |
অফিসে ২০০০ – ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | |
পূর্বসূরী | পদ সংস্থাপিত |
উত্তরসূরী | সুলতানুল আরেফিন সিদ্দিকী |
মহিউদ্দিন ইসলামী মেডিকেল কলেজের ১ম উপাচার্য | |
অফিসে ২০০৯ – ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | |
পূর্বসূরী | পদ সংস্থাপিত |
উত্তরসূরী | সুলতানুল আরেফিন সিদ্দিকী |
জমিয়ত-এ-উলামা-এ-আহলে সুন্নাত আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের সভাপতি | |
অফিসে অজানা – ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | |
উপাধি | শায়খুল আলম |
প্রাতিষ্ঠানিক নাম | মুহাম্মদ আলাউদ্দিন |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | [১] বা ১ জানুয়ারি ১৯৩৮[২] | ১ জানুয়ারি ১৯৩৬
মৃত্যু | ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭[৩] | (বয়স ৭৯)
সমাধিস্থল | নেরিয়ান শরীফ, আজাদ কাশ্মীর, পাকিস্তান |
ধর্ম | ইসলাম |
সন্তান | সুলতানুল আরেফিন সিদ্দিকী নুরুল আরেফিন সিদ্দিকী |
পিতামাতা |
|
সম্প্রদায় | আহলে সুন্নাত, বেরলভী |
আন্দোলন |
|
তরিকা | নকশবন্দিয়া মোহরভীয়া গজনভীয়া সিদ্দিকীয়া |
যে জন্য পরিচিত | দরসে মসনভী |
কাজ | ধর্মপ্রচারক, সুফি |
প্রতিষ্ঠান | মহিউদ্দিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় নেরিয়ান শরীফ মহিউদ্দিন ইসলামী মেডিকেল কলেজ মিরপুর আজাদ কাশ্মীর |
এর প্রতিষ্ঠাতা | মহিউদ্দিন ট্রাস্ট[৪] নুর টিভি |
মুসলিম নেতা | |
পূর্বসূরী | গোলাম মহিউদ্দিন গজনভী |
উত্তরসূরী | সুলতানুল আরেফিন সিদ্দিকী |
পুরস্কার | ইনস্টিটিউট অফ পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইনসপ্যাড) কর্তৃক লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড |
সম্মান | বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিম (২০১২–২০১৮) |
মুহাম্মদ আলাউদ্দিন সিদ্দিকী (উর্দু: پیر محمد علاؤالدین صدیقی; ১ জানুয়ারি ১৯৩৮ – ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭) ছিলেন একজন ইসলামি সুফি পণ্ডিত ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব।
তিনি এআরওয়াই কিউ টিভি এবং নুর টিভিতে ইসলামি শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতেন।[৫] তিনি পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডে ধর্মীয় ও অধর্মীয় শিক্ষার জন্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।[৬] তিনি আজাদ কাশ্মীর অঞ্চলে দুটি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন: মিরপুরের মহিউদ্দিন ইসলামী মেডিকেল কলেজ এবং নেরিয়ান শরীফে মহিউদ্দিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।[৭][৮][৯] তিনি ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সাতবার ৫০০ জন প্রভাবশালী মুসলিমদের তালিকায় ছিলেন।[১০]
আলাউদ্দিন সিদ্দিকী ১৯৩৮ সালের ১লা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন গজনভী।[১১] তিনি তার ২য় সন্তান ছিলেন।
আলাউদ্দিন সিদ্দিকী তার পিতা গোলাম মহিউদ্দীন গজনভীর সান্নিধ্যে তার প্রাথমিক ইসলামী শিক্ষা অধ্যয়ন করেন। পরে, তিনি হাজরোতে জামিয়া হাক্কাইক আল উলূমে মিশকাত শরীফ এবং জালালাইন অধ্যয়ন করেন। আরও পড়াশোনার প্রতি তার আবেগ তাকে জামিয়া নঈমীয়া লাহোরে নিয়ে আসে যেখানে তিনি মুহাম্মদ হোসাইন নঈমীর কাছ থেকে পাঠ শেষ করেন। এরপর তিনি ওয়াজিরাবাদে আসেন, যেখানে তিনি আবদুল ঘুফার হাযারভীর সাথে দাওরা ই কুরআনে অংশ নেন। এরপর তিনি ফয়সালাবাদে সরদার আহমদ চিশতীর কাছে হাদিস মুবারাকাহ শিক্ষা সমাপ্ত করার জন্য আসেন। সরদার আহমদ চিশতী তাকে পাঠ সমাপ্ত করেন এবং দস্তর-ই-ফজিলত পরিধান করান।[১২]
আলাউদ্দিন সিদ্দিকী ২০১২ সালের ৬ অক্টোবর লন্ডনের পার্লামেন্টের বাইরে একটি বিক্ষোভের ডাক দেন যেখানে সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র ইনোসেন্স অফ মুসলিমস-এর প্রতি তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন, যেটাতে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (দ.)-এর মর্যাদাকে অবমাননা করা হয়েছে। তিনি মুসলিম উম্মাহকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিভেদ দূর করে ইসলামের নবীর পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি ইসলামভীতির বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যফ্রন্টের গুরুত্বের ওপর বক্তৃতা করেন।[১৩]
শনিবার, অক্টোবর ২০১২ সালে, হাজার হাজার মুসলিম লন্ডনে পার্লামেন্ট হাউসের বাইরে সমবেত হয়ে মুহাম্মদ (দ.)-কে সম্মান করার গুরুত্ব সম্পর্কে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। "ইসলামভীতি বিরোধী সাম্য জোট" শীর্ষক এই বিক্ষোভে ইসলামী সম্প্রদায়ের সকল উপসম্প্রদায়ের মুসলমানরা অংশ নিয়েছিলেন, যার মধ্যে সুন্নি ও শিয়া উভয় ইসলামের বক্তারাও ছিলেন।[১৪]
১০ জুন ২০১২-এ আলাউদ্দিন সিদ্দিকী জাতিসংঘের চিন্তাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অফ পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইনসপ্যাড) কর্তৃক মানবিক, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত হন।[১৫]
আলাউদ্দিন সিদ্দিকীর নাম ৫০০ জন প্রভাবশালী মুসলমানের তালিকায় (৩য় সংস্করণ থেকে নবম সংস্করণ পর্যন্ত) সাতবার এসেছে। যুক্তরাজ্যর "প্রচারক ও আধ্যাত্মিক নেতাদের" তালিকায় তার নাম ছিল।[১৬]
সর্বশেষ তার নামটি ৯ম সংস্করণে (২০১৮) তার মৃত্যুর পর "দ্য ওবিটুয়ারিজ" বিভাগে প্রকাশিত হয়েছিল।[১৭]
আলাউদ্দিন সিদ্দিকী অসুস্থতার পর ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার লন্ডনে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।[১৮]
তার জন্য দুটি জানাজার নামাজ পড়া হয়, একটি অস্টিন পার্কের বার্মিংহামে এবং অন্যটি পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের নেরিয়ান শরীফে। বার্মিংহামের অস্টিন পার্কে তার ছোট ছেলে নুরুল আরেফিন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২০,০০০ এরও বেশি লোক অংশগ্রহণ করেছিল।[১৯] তার দ্বিতীয় জানাজা তার নিজ শহর নেরিয়ান শরীফে অনুষ্ঠিত হয় এবং তার বড় ছেলে সুলতানুল আরেফিন সিদ্দিকী এতে নেতৃত্ব দেন। এতে ৫০,০০০-এরও বেশি লোক উপস্থিত ছিলেন।[২০]
পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের দরবার-এ-আলিয়া নেরিয়ান শরীফে আলাউদ্দিন সিদ্দিকীকে দাফন করা হয়।[২১]