আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে তাহির ইবনে আবদুল্লাহ (আরবি: أبو عبد الله محمد بن طاهر بن عبد الله, মৃত্যু আনুমানিক ৯১০) ছিলেন খোরাসানের শেষ তাহিরি গভর্নর। তিনি ৮৬২ থেকে ৮৭৩ সাল পর্যন্ত শাসন করেছেন।
তার পিতা তাহির ইবনে আবদুল্লাহ ৮৬২ সালে মারা যান। এরপর খলিফা প্রথমে তাহিরের ভাই মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে তাহিরকে একই পদে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি এই পদ গ্রহণে অসম্মতি জানালে মুহাম্মদ ইবনে তাহিরকে গভর্নর নিয়োগ দেয়া হয়। তবে খোরাসানের অন্যান্য তাহিরি গভর্নরদের মত তাকে ইরাক ও বাগদাদের সামরিক গভর্নরের উপাধি প্রদান করা হয়নি। এসব উপাধি মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহকে প্রদান করা হয়।
পিতার উত্তরসুরি হওয়ার দুই বছর পর হাসান ইবনে জায়েদ ইবনে মুহাম্মদের নেতৃত্বে সংঘটিত জায়েদি বিদ্রোহের ফলে তাবারিস্তান হস্তচ্যুত হয়। তাহিরিরা এই প্রদেশ পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। ৮৬৭ সালে সিস্তানের সাফারি আমির ইয়াকুব ইবনুল লাইস আল-সাফার হেরাত দখন করে এর তাহিরি গভর্নরকে বন্দী করেন। ইয়াকুবকে প্রতিহত করার জন্য সামানি ইবরাহিম ইবনে লাইসের নেতৃত্ব সেনাদল পাঠানো হয় কিন্তু তারা পরাজিত হয়। এরপর মুহাম্মদ ইবনে তাহির সমঝোতা করতে বাধ্য হন।
তার শাসনের দুর্বলতার ফলে খোরাসানে তাহিরি শাসনের অবসান হয়। ৮৭৩ সালে ইয়াকুব রাজধানী নিশাপুরের দিকে অগ্রসর হন। মুহাম্মদ বন্দী হন এবং তিন বছর বন্দী জীবনযাপন করেন।৮৭৬ সালে দাইর আল-আকুলের যুদ্ধে সাফারিরা পরাজিত হওয়ার পর তিনি মুক্তি পান। মুক্তির পর খলিফা তাকে পুনরায় খোরাসানের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেন কিন্তু তিনি এরপর আর খোরাসানে নিজ কর্তৃত্ব স্থাপন করেননি। খোরাসানের কয়েকজন সাফারি বিরোধী ব্যক্তি যেমন আহমাদ আল-খুজিস্তানি ও রাফি ইবনে হারসামা তাদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে খুতবায় মুহাম্মদের নাম ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু মুহাম্মদ ক্ষমতার চর্চা থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন।[১]
মুক্তির পর তিনি বাগদাদে বসবাস শুরু করেন। মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে তাহির মারা যাওয়ার পর তার ভাই উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে তাহির তার পদ লাভ করেন। মুহাম্মদ ইবনে তাহির এসময় উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহর পদ গ্রহণে ইচ্ছুক ছিলেন। তাদের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা পরবর্তী কয়েক বছর ধরে চলেছে। ৮৭৯ সালে সাফারি ইয়াকুব মারা যান এবং তার ভাই আমর বিন লাইস তার উত্তরসুরি হন। খোরাসানের গভর্নর হিসেবে আমর পূর্বের তাহিরিদের মত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে থাকেন।
৮৮৫ সালে তিনি উবাইদুল্লাহর বদলে বাগদাদের গভর্নর হন এবং পূর্বের মত খোরাসানের গভর্নর উপাধি লাভ করেন। তবে পূর্বের মত তিনি খোরাসানে নিজ শাসন প্রতিষ্ঠা করেননি।[২] ৯১০ সালের দিকে তিনি মারা যান।[৩]
পূর্বসূরী তাহির ইবনে আবদুল্লাহ |
খোরাসানের তাহিরি গভর্নর ৮৬২–৮৭৩ |
খোরাসান সাফারিদের হস্তগত হয় |
পূর্বসূরী উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে তাহির |
বাগদাদের তাহিরি গভর্নর ৮৮৫–৮৮৯ |
উত্তরসূরী উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে তাহির |