মেজর জেনারেল মুহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ | |
---|---|
![]() | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | জোড়াহাট, আসাম, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত | ১৭ মার্চ ১৯০৩
মৃত্যু | ৩১ মার্চ ১৯৭৬ ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৭৩)
সমাধিস্থল | আজিমপুর গোরস্থান |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | কটন কলেজ |
ধর্ম | ইসলাম |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য | ![]() ![]() |
কাজের মেয়াদ | ![]() ![]() |
পদ | মেজর জেনারেল |
কমান্ড | লিংকনশায়ার রেজিমেন্ট কুমায়ুন রেজিমেন্ট আসাম রেজিমেন্ট ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট |
যুদ্ধ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৪৭ |
মুহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ (১৭ মার্চ ১৯০৩ – ৩১ মার্চ ১৯৭৬) একজন বাঙালি ক্রীড়াবিদ ও সেনাকর্মকর্তা ছিলেন। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রথম বাঙালি মেজর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[১]
মুহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ ১৭ মার্চ ১৯০৩ ব্রিটিশ ভারতের আসামের জোড়াহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আসামের প্রথম মুসলিম আইসিএস অফিসার আবদুল মজিদের ছেলে। তার বড় ভাই এনামুল মজিদ ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং বোন জোবায়দা আতাউর রহমান ছিলেন ব্রিটিশ আসাম বিধানসভার প্রথম নারী সভাপতি।[২]
তিনি আসামের গুয়াহাটির কটন কলেজে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। ১৯২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি রয়্যাল মিলিটারি কলেজ, সানহার্ডসে যোগ দেন। তিনিই প্রথম বাংলাভাষী মুসলিম ছিলেন যিনি সানহর্স্ট থেকে স্নাতক হন।
মুহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯২২ সালে রয়্যাল মিলিটারি কলেজে সানহর্স্টে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ২৭ আগস্ট ১৯২৪ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আনট্যাচড তালিকায় কমিশন লাভ করেন। কমিশনের পরে তিনি এক বছরের জন্য ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর লিংকনশায়ার রেজিমেন্টের দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নের সাথে যুক্ত ছিলেন। ৩১ অক্টোবর ১৯২৫ সালে তিনি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে স্বীকৃত হন এবং চতুর্থ ব্যাটালিয়ন ১৯ তম হায়দরাবাদ রেজিমেন্টে নিয়োগ পান। ২৭ নভেম্বর ১৯২৬ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। ২৭ আগস্ট ১৯৩৩ সালে ক্যাপ্টেন, ১ ডিসেম্বর ১৯৪১ সালে মেজর। আসাম রেজিমেন্টের হয়ে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা ও ব্রিটিশ মালয়েশিয়ায় দায়িত্ব পালন করেন।[১]
১৯৪৭ সালে মুহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তাকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।[৩] তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৯ ডিভিশনের জিওসি হন। তিনি আইয়ুব খানের চেয়ে ২ বছরের সিনিয়র হলেও আইয়ুব খান এইচএম তাকে অতিক্রম করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক হন। রাওয়ালপিন্ডি ষড়যন্ত্রে তার নাম উঠলেও পরে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন।[১]
১৯৬২ সালে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করে কিছুদিন করাচিতে অবস্থান করেন। পরে পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে আসেন এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বসবাস করতে শুরু করেন।
১৯৭১ সালের ২২ মার্চ মেজর জেনারেল মুহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ এবং কর্নেল এমএজি ওসমানীর নেতৃত্বে অবসরপ্রাপ্ত বাঙালি সেনারা বায়তুল মোকাররম থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মিছিল করে স্বাধীনতার আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে। এরপর সৈন্যদের পক্ষ থেকে তিনি সহ কয়েকজন নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাত করেন এবং আনুগত্যের নিদর্শন স্বরূপ একটি তরবারি উপহার দেন।
জুলাইয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে মার্শাল ল’ সদর দপ্তরে এবং পরে কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করে রাখে। জেনারেল ওসমানীকে বন্দি করার ব্যাপারে সহযোগিতা করা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে সাক্ষী হওয়ার জন্য তাকে চাপ দেওয়া হয়। তিনি তা প্রত্যাখ্যান করলে সেনাবাহিনী তার উপর নির্যাতন চালায়।[১]
তিনি আবদুর রহিমের কন্যার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[২]
তিনি ১৯৭৬ সালের ৩১ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান।[১][৪] তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়।[৫]