মুহাম্মাদের বিরুদ্ধ সমালোচনা

মুহাম্মাদ এবং সন্ন্যাসী সার্জিয়াস (বহিরা), ১৫০৮ সালে ছবিটি আঁকেন ডাচ শিল্পী লুকাস ভ্যান লেইডেন। প্রাচীন খ্রিস্টীয় সমালোচনায় দাবি করা হয় যে, বহিরা নামক প্রচলিত ধর্মমত বিরোধী খ্রিষ্টান পাদ্রী মুহাম্মাদকে এমন সব বিপথগামী কথা বলেছিলেন যা পরবর্তীতে কোরআনকে প্রভাবিত করে।[]

মুহাম্মদের সময়ের অমুসলিম আরব সমসাময়িকরা ইসলামী নবী মুহাম্মদকে একেশ্বরবাদ প্রচারের জন্য এবং আরবের ইহুদি গোত্রগুলো মুহাম্মাদ "অবৈধভাবে বাইবেলের বর্ণনা ও ব্যক্তিত্বগুলোকে দখল করেছেন এবং ইহুদি ধর্মকে অবমাননা করেছেন" এমন দাবি তুলে প্রথম সমালোচনা করেছিলেন।[] এই কারণে, মধ্যযুগীয় ইহুদি লেখকরা সাধারণত তাকে অবমাননাকর উপনাম হা-মেশুগ্গা (হিব্রু: מְשֻׁגָּע‬, অর্থাৎ "পাগল" বা "অভিশপ্ত ব্যক্তি") নামে উল্লেখ করতেন।[][][]

মধ্যযুগে বিভিন্ন পশ্চিমা এবং বাইজেন্টাইন খ্রিস্টান চিন্তাবিদ মুহাম্মদকে ঘৃণিত ব্যক্তি, মিথ্যা নবী এবং এমনকি খ্রিস্টবিরোধী হিসেবে গণ্য করতেন। খ্রিস্টান সমাজে তিনি প্রায়ই একজন ভ্রষ্টবাদী বা শয়তানের দ্বারা অভিভূত ব্যক্তি হিসেবে দেখা হতেন। থমাস অ্যাকুইনাস মুহাম্মদ কর্তৃক ধর্মীয় বিষয়গুলো পরিচালনার ধরন এবং পরকাল সম্পর্কে তার বর্ণিত "ইন্দ্রিয়সুখ" প্রদানের প্রতিশ্রুতি সমালোচনা করেছিলেন।[][]

আধুনিক সমালোচনাগুলো নবী মুহাম্মদের নবী হিসেবে আন্তরিকতা, নৈতিকতা, তার বিবাহ, দাসমালিকানা এবং তার মানসিক অবস্থার উপর নিয়ে করা হয়েছে। মুহাম্মদ শত্রুদের প্রতি "মদিনায় বনু কুরাইজা গোত্রের ওপর আক্রমণের ঘটনা নির্মমতা" - র মতো অভিযোগেরও মুখোমুখি হয়েছেন।[][][১০]

বিরুদ্ধ সমালোচনা

[সম্পাদনা]

প্রাক্তন মুসলিম নাস্তিক/অজ্ঞেয়বাদীদের দ্বারা বিরুদ্ধ সমালোচনা

[সম্পাদনা]

ইবনে আল-রাওয়ান্দি, আল-মা’আরি এবং আবু ইসা আল-ওয়ারাক বিখ্যাত ছিলেন ধর্মের সমালোচক হিসেবে যারা মুহাম্মাদের নৈতিকতার সমালোচনা করেছিলেন।[১১]

ইহুদীদের দ্বারা বিরুদ্ধ সমালোচনা

[সম্পাদনা]

মধ্যযুগে ইহুদীরা মুহাম্মাদকে হিব্রু ভাষায় হা-মেশুগ্গাহ্ যার অর্থ হচ্ছে পাগল বলে অভিহিত করতেন। শব্দটি মুহাম্মাদের ক্ষেত্রে বলা হত তার কর্মকাণ্ড দেখে।[১২]

খ্রিষ্টানদের দ্বারা বিরুদ্ধ সমালোচনা

[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদের মৃত্যুর অল্প কিছু কাল পর আরব অঞ্চলের খ্রিষ্টানরা মুহাম্মাদকে মিথ্যা নবী এবং রক্তপিপাসু বলে দাবী করেন।[১৩] জন অব দামাস্কাস (৬৭৬-৭৪৯) নামের এক ব্যক্তি মুহাম্মাদের কুরআন বিষয়ে বলেছিলেন যে, ওটি হচ্ছে বাইবেলের নকল।[১৪] আরো বহু খ্রিষ্টান ধর্মগুরু মুহাম্মাদকে খুনী, ভণ্ড এবং নারীসক্ত পাগল বলে অভিহিত করতেন, তারা তাকে যীশুবিরোধী শয়তান বলে যীশুর অনুসারীদেরকে সতর্ক থাকতে বলতেন।[১৫] জন অব দামাস্কাস তার 'ফাউন্ট অব উইসডোম' বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় 'কনসার্নিং হেরেসিয' এ খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের অনেক বর্ণনা করেন। অধ্যায়টিতে জন মুহাম্মাদকে মিথ্যা নবী এবং একজন যীশুবিরোধী বলেন।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. From Writings, by St John of Damascus, The Fathers of the Church, vol. 37 (Washington, DC: Catholic University of America Press, 1958), pp. 153–60. Posted 26 March 2006 to The Othordox Christian Information Center – St. John of Damascus’s Critique of Islam
  2. "MOHAMMED - JewishEncyclopedia.com"jewishencyclopedia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০১-২৬ 
  3. Stillman, Norman A. (২০১০)। The Jews of Arab lands: a history and source book (Nachdr সংস্করণ)। Philadelphia: Jewish Publ. Soc. of America। আইএসবিএন 978-0-8276-0198-7 
  4. Warraq, Ibn (২০১০-০৬-০৩)। Defending the West: A Critique of Edward Said's Orientalism (ইংরেজি ভাষায়)। Prometheus Books। আইএসবিএন 978-1-61592-020-4 
  5. M.D, Andrew G. Bostom (২০১১-১১-২৯)। Legacy of Islamic Antisemitism: From Sacred Texts to Solemn History (ইংরেজি ভাষায়)। Prometheus Books। আইএসবিএন 978-1-61592-011-2 
  6. Quinn, Frederick (২০০৮)। The sum of all heresies: the image of Islam in Western thought। Oxford ; New York: Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-532563-8ওসিএলসি 86038323 
  7. Goddard, Hugh (২০০০)। A history of Christian-Muslim relations। Chicago: New Amsterdam Books। আইএসবিএন 978-1-56663-340-6 
  8. Cimino, Richard (২০০৫)। ""No God in Common:" American Evangelical Discourse on Islam after 9/11"Review of Religious Research47 (2): 162–174। আইএসএসএন 0034-673Xডিওআই:10.2307/3512048 
  9. Willis, John Ralph (২০১৪)। Slaves and Slavery in Africa: Volume One: Islam and the Ideology of Enslavement। Hoboken: Taylor and Francis। আইএসবিএন 978-0-7146-3142-4 
  10. Watt, W. Montgomery (১৯৫২)। "The Condemnation of the Jews of Band Qurayzah"The Muslim World (ইংরেজি ভাষায়)। 42 (3): 160–171। আইএসএসএন 1478-1913ডিওআই:10.1111/j.1478-1913.1952.tb02149.x 
  11. The Clash of Fundamentalisms: Crusades, Jihads and Modernity; Ali, T., Verso, 2003, Pages 55-56
  12. Norman A. Stillman (১৯৭৯)। The Jews of Arab lands: a history and source book। Jewish Publication Society। পৃষ্ঠা 236। আইএসবিএন 978-0-8276-0198-7। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০১১ 
  13. Walter Emil Kaegi, Jr., "Initial Byzantine Reactions to the Arab Conquest", Church History, Vol. 38, No. 2 (Jun., 1969), p. 139–49, p. 139–42, quoting from Doctrina Jacobi nuper baptizati 86–87
  14. http://orthodoxinfo.com/general/stjohn_islam.aspx
  15. Husain, Ed (২০০৭)। The Islamist। Penguin। পৃষ্ঠা 146On a personal level, my relationship with God had deteriorated. ... as I had become more active in the Hizb, my inner consciousness of God had hit an all-time low. "We sermonized about the need for Muslims to return to Islam, but many of the shabab [activists] did not know how to pray. I witnessed at least four new converts to Islam at different university campuses, convinced of the superiority of the `Islamic political ideology` ... but lacking basic knowledge of worship.