মুহাম্মাদের স্মৃতিচিহ্ন

Box with a part of Muhammad's beard. Maulâna Rumi mausoleum, Konya, Turkey

মুহাম্মাদের স্মৃতিচিহ্ন বা নিদর্শনগুলো ইসলাম ধর্মে পবিত্র বলে বিবেচিত হয় এবং এগুলো সরাসরি মহানবীর সাথে সম্পর্কিত। প্রাচীনকাল থেকেই ইসলামে নিদর্শন পূজার একটি দীর্ঘস্থায়ী রীতি আছে, যার মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতীকসমূহ। ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় যে, ইসলাম ধর্মের প্রথম দিকের কিছু অনুসারী নিদর্শন পূজার রীতি অনুসরণ করতেন। অষ্টাদশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত সুন্নি ইসলামের বিভিন্ন অঞ্চলে এই প্রথা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সালাফিবাদ ও ওয়াহাবিবাদের মতো সংস্কারবাদী আন্দোলনের উত্থানের পর এর তীব্র বিরোধিতা শুরু হয়। এসব মতবাদ নিদর্শন পূজার সাথে শিরক বা মূর্তিপূজার সম্পর্ক খুঁজে পায় এবং এর কঠোর সমালোচনা করে। এর ফলশ্রুতিতে বর্তমান যুগের কিছু মুসলমান নিদর্শন পূজাকে সম্পূর্ণই অস্বীকার করে থাকেন।

প্রসিদ্ধ নিদর্শনসমূহের মধ্যে কয়েকটি ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত তোপকাপি প্রাসাদে সংরক্ষিত আছে। প্রাসাদের 'হিরকাই শরীফ ওদাসি' (পবিত্র আলখাল্লার কক্ষ) নামের অংশে এই নিদর্শনগুলো সযত্নে রাখা হয়। এছাড়া, কাশ্মীরের হযরতবালেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে, যার মধ্যে মহানবী (সা.)-এর একগুচ্ছ চুল অন্যতম।

ফরাসি অভিযাত্রী জঁ-বাতিস্ত তাভের্নিয়ে সপ্তদশ শতাব্দীতে কনস্টান্টিনোপলের (বর্তমান ইস্তাম্বুল) দুই কোষাধ্যক্ষের সাথে আলোচনার প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলেন। তারা মহানবীর আলখাল্লা, নিদর্শন ও মোহরের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছিলেন। এর প্রায় দুই শতাব্দী পরে আরেক লেখক চার্লস হোয়াইট ওই একই নিদর্শনসমূহ নিয়ে রচনা করেন। এর সাথে তিনি মহানবী (সা.)-এর দাড়ি, একটি দাঁত ও পায়ের ছাপের বর্ণনা সংযোজন করেন। শেষোক্তটি অর্থাৎ পায়ের ছাপ তিনি নিজ চোখে দেখার সৌভাগ্য লাভ করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]