মূল্যমান (ইংরেজি: Face Value) শব্দটি সাধারণত আর্থিক ক্ষেত্র এবং বিনিয়োগে ব্যবহৃত হয়, যেখানে এটি একটি সম্পদের মূল্যের একটি নির্দিষ্ট দিক নির্দেশ করে।[১][২] মূলত, মূল্যমান হলো কোনো আর্থিক উপকরণ বা চুক্তির মুদ্রিত, নির্ধারিত, বা ঘোষিত মান।[৩] এটি বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক উপকরণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন বন্ড, মুদ্রা, চেক, স্টক ইত্যাদি। মূল্যমান কেবলমাত্র মুদ্রিত মানকে নির্দেশ করে এবং এর বাজার মূল্য থেকে ভিন্ন হতে পারে।[৪]
বন্ডের ক্ষেত্রে মূল্যমান হলো বন্ডের মুদ্রিত মূল্য, যা বন্ড ইস্যুকর্তা বন্ডধারীকে নির্দিষ্ট সময় শেষে প্রদান করবে। একে সাধারণত পার ভ্যালু বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো বন্ডের মূল্যমান হয় ১০০০ টাকা, তবে বন্ডধারীকে মেয়াদ শেষে ১০০০ টাকা প্রদান করা হবে, যদিও বন্ডটি বাজারে অন্য মূল্যে বেচাকেনা হতে পারে।[৫]
স্টক বা শেয়ারের ক্ষেত্রে মূল্যমান হলো শেয়ারের মুদ্রিত মান। যদিও শেয়ারের বাজার মূল্য অনেক সময় এই মুদ্রিত মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি বা কম হতে পারে। মূল্যমানের ভিত্তিতে কোনো কোম্পানির প্রাথমিক মূলধন নির্ধারিত হয়।[৪]
চেক বা মুদ্রার ক্ষেত্রে মূল্যমান হলো চেক বা মুদ্রায় উল্লেখিত অর্থের পরিমাণ। উদাহরণস্বরূপ, একটি ৫০০ টাকার নোটের মূল্যমান ৫০০ টাকা, এবং এটি দেশের মধ্যে আইনসম্মত লেনদেনে ৫০০ টাকা মূল্য হিসেবে গৃহীত হবে।[৪]
মূল্যমান এবং বাজারমূল্যের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। মূল্যমান হলো নির্দিষ্ট বা ঘোষিত মূল্য, কিন্তু বাজারমূল্য হলো বাজারে সম্পদটির প্রকৃত বেচাকেনার মূল্য, যা সরবরাহ এবং চাহিদার ভিত্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বন্ডের মূল্যমান ১০০০ টাকা হলেও বাজারে সেটি ৯৫০ বা ১০৫০ টাকায় বেচাকেনা হতে পারে, যা তার বাজারমূল্য নির্দেশ করে।