মৃণাল দত্ত চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৯ মে ২০১৫ পুনে, মহারাষ্ট্র, ভারত | (বয়স ৮১)
অন্যান্য নাম | এমডিসি |
পেশা | তত্ত্বীয় অর্থনীতিবিদ লেখক শিক্ষকতা |
কর্মজীবন | ১৯৬৬–২০০৮ |
পরিচিতির কারণ | অর্থনীতির শিক্ষক লেখক |
পুরস্কার | পদ্মভূষণ |
মৃণাল দত্ত-চৌধুরী (১৯৩৪ - ২০১৫) হলেন একজন ভারতীয় তাত্ত্বিক অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং দিল্লি স্কুল অফ ইকোনমিক্সের অধ্যাপক[১] যিনি এমডিসি নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন।[২] তিনি ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি, প্রিন্সটনের সদস্য ছিলেন।[৩] সাহিত্য ও শিক্ষায় অবদানের জন্য ভারত সরকার তাকে ২০০৫ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণে ভূষিত করে।[৪]
মৃণাল দত্ত চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৪ জানুয়ারী ব্রিটিশ ভারতের পূর্ববঙ্গের আসামের কাছাড়ের একটি ছোট গ্রাম শ্রীগৌরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার কলেজ শিক্ষা শান্তিনিকেতনে সম্পন্ন করেন যেখানে তিনি অমর্ত্য সেন, যিনি পরে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন এবং সুখময় চক্রবর্তীকে সহপাঠী হিসাবে পেয়েছিলেন। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ হতে স্নাতকোত্তর শিক্ষা সম্পন্ন করেন। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ডক্টরেট অধ্যয়ন করার জন্য তিনি পূর্ণ বেতনের বৃত্তি পান এবং পল স্যামুয়েলসন, যিনি অর্থনীতিতে প্রথম আমেরিকান হিসাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ও পরবর্তীতে নিউ ইয়র্ক টাইমস কর্তৃক ২০শ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষায়তনিক অর্থনীতিবিদ হিসাবে চিহ্নিত হন, তার তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে নির্দেশনা দান করেন। এমআইটি-তে থাকাকালীন তিনি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রবার্ট সোলো, ফ্রাঙ্কো মোডিগ্লিয়ানি এবং কেনেথ অ্যারোর অধীনে অধ্যয়ন করার সুযোগ লাভ করার পাশাপাশি জোসেফ স্টিগলিটজ এবং জর্জ আকেরলফের নিকটও শিক্ষা গ্রহণ করেন যারা পরবর্তীতে নোবেল পুরস্কার জিতেন।
দত্ত চৌধুরী ১৯৬৬ সালে অর্থনীতিতে তার পিএইচডি সম্পন্ন করে একই বছর ভারতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটে তার কর্মজীবন শুরু করার জন্য ভারতে ফিরে আসেন এবং পরবর্তী দুই বছর সেখানে এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে দিল্লি স্কুল অব ইকোনমিক্সে চলে যান, কথিত আছে কে. এন. রাজের আমন্ত্রণে, যিনি ভারতের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পরিচায়ক অধ্যায়ের লেখক, অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে এবং ১৯৯৯ সালে তার অবসরগ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত তিনি সেখানে কাজ করেন। এখানে কাজ করাকালীন,১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি অর্থনীতি বিভাগের প্রধান এবং ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে, মিনেসোটা ইউনিভার্সিটি এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দত্ত চৌধুরী ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি, প্রিন্সটন-এর একজন সদস্য। তাকে বেশ কয়েকটি নিবন্ধ রচনার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়, যার মধ্যে রয়েছে জার্নাল অফ ইকোনমিক পার্সপেক্টিভস-এ প্রকাশিত বাজারের ব্যর্থতা এবং সরকারের ব্যর্থতা (১৯৯০) শীর্ষক নিবন্ধ এবং ইকোনমি-ওয়াইড মডেল এবং ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানিং বইতে বহু-আঞ্চলিক অর্থনীতির জন্য আন্তঃশিল্প পরিকল্পনা মডেলের ৭৫-পৃষ্ঠার অধ্যায় হিসাবে পাঠ্যগুলোতে অবদান। তিনি লুই লেফেবারের সাথে "রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট এক্সপেরিয়েন্স এবং প্রসপেক্টস ইন সাউথ অ্যান্ড সাউথইস্ট এশিয়া" বইটিতে সহ-লেখক হিসাবে যুক্ত ছিলেন এবং "ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড চেঞ্জ: এসেস ইন অনার অফ কে. এন. রাজ" শিরোনামে অপর একটি বই সম্পাদনা করেন। মনমোহন সিংয়ের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং সিং অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর ১৯৯১ সালে ভারতের অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময় দত্ত চৌধুরী তাকে অনেক নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রণয়নে সহায়তা করেন এবং সিং অর্থমন্ত্রী ও পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বেসরকারী থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের সদস্য হিসাবে তিনি ভূমিকা পালন করেন। ভারত সরকার ২০০৫ সালে তাকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ প্রদান করেন।