মেইকটিলা

মেইকটিলা
မိတ္ထီလာမြို့
শহর
মেইকটিলার স্কাইলাইন
মেইকটিলা মিয়ানমার-এ অবস্থিত
মেইকটিলা
মেইকটিলা
মিয়ানমারে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২০°৫৩′০″ উত্তর ৯৫°৫৩′০″ পূর্ব / ২০.৮৮৩৩৩° উত্তর ৯৫.৮৮৩৩৩° পূর্ব / 20.88333; 95.88333
রাষ্ট্র মিয়ানমার
বিভাগ মান্দালয় অঞ্চল
জেলামেইকটিলা জেলা
পৌরসভামেইকটিলা পৌরসভা
জনসংখ্যা (২০০৫)
 • EthnicitiesBamar Karen Shan
 • ReligionsTheravada Buddhism
সময় অঞ্চলMST (ইউটিসি+৬.৩০)

মেইকটিলা (বর্মী: မိတ္ထီလာမြို့; এমএলসিটিএস: mit thi la mrui.; বর্মী উচ্চারণ: [meɪʔtʰìlà mjo̰]) মধ্য মিয়ানমারের মান্দালয় অঞ্চলের মেইকটিলা হ্রদের তীরবর্তী একটি শহর, যা বাগান-তাউঞ্জি (Bagan-Taunggyi), ইয়াঙ্গুন-মান্দালয়, মেইকটিলা-মিইঞ্জাঁ (Meiktila-Myingyan) সড়কের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এর কৌশলগত অবস্থানের কারণে, মেইকটিলায় মিয়ানমার বিমান বাহিনীর কেন্দ্রীয় দপ্তর এবং মেইকটিলা বিমান ঘাঁটি অবস্থিত।[] দেশের প্রধান মহাকাশ প্রকৌশল বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মিয়ানমার মহাকাশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেইকটিলাতেই অবস্থিত।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে পরিখায় বসবাসরত একটি বর্মী পরিবার একজন ব্রিটিশ সেনার সাথে একসাথে চা পান করছে; ১০ মার্চ ১৯৪৫।

মেইকটিলা নামটি এসেছে প্রাচীন ভারতীয় রাজ্য মিথিলা -এর নাম থেকে।

মেইকটিলার ইতিহাস ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছে মধ্য মিয়ানমারের শুষ্ক অঞ্চলের সাথে, যেখানে বামা বা বর্মী জনগোষ্ঠীর বাস। অন্তত ১১শ শতক থেকে ১৯শ শতক অব্দি, ১৮৮৫ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ঊর্ধ্ব মিয়ানমার দখল করে নেওয়ার আগ পর্যন্ত, এই অঞ্চলটি বিভিন্ন বর্মী রাজ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

মেইকটিলা ছিল ১৯৪৫ সালের মেইকটিলা এবং মান্দালয়ের লড়াই এর অংশ, যখন ব্রিটিশ কমান্ডার উইলিয়াম স্লিম এর নেতৃত্বাধীন মিত্র বাহিনী জাপানি বাহিনীকে পরাজিত করে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর পরই, মেইকটিলা কিছুদিনের জন্য বিদ্রোহী কারেন বাহিনীর দখলে ছিল।

২২ মার্চ ২০১৩ তারিখে, এখানে দুই দিনব্যাপী মুসলিম-বিরোধী দাঙ্গা'র পর জরুরী অবস্থা জারি করা হয়। এ ঘটনায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও ১২,০০০ এর বেশি গৃহচ্যুত হয়, যার প্রায় সবাই ছিল মুসলমান।[][] এই সহিংসতা পরবর্তীকালে মিয়ানমারের অক্‌পো (Okpho) ও গোবিঙ্গক (Gyobingauk) - সহ অন্যান্য স্থানেও ছড়িয়ে পড়ে।[]

ভূগোল

[সম্পাদনা]

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় শুষ্ক অঞ্চলের সবচেয়ে পূর্বে অবস্থিত জেলা হচ্ছে মেইকটিলা।[] এটা ওয়ান্দউইন (Wundwin), মিন্‌জ্যান (Myingyan), ইয়ামেথিন (Yamethin) এর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এবং পূর্বে শান প্রদেশের সাথে সংলগ্ন। এর প্রধান একটি দিক হচ্ছে মেইকটিলা হ্রদ, সেচ ও পানির জন্য সৃষ্ট একটি কৃত্রিম জলাধার। এটা দৈর্ঘ্যে ৭ মাইল (১১ কিমি) এবং প্রস্থে ০.৫ মাইল (০.৮০ কিমি)।[] মন্দাই বাঁধ দ্বারা এই হ্রদে পানি সরবরাহ করা হয়।

জলবায়ু

[সম্পাদনা]

মেইকটিলার জলবায়ু ক্রান্তীয় সাভানা জলবায়ু (কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে, Aw)। তাপমাত্রা সারা বছরই মোটামুটি উষ্ণ থাকে, বর্ষাকাল (মার্চ-মে) আসার আগের মাসগুলোতে উত্তাপ বেশি থাকে, গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ °সে (৯৭ °ফা) এর আশেপাশে হয়ে থাকে। এখানে শুষ্ক শীতকাল (নভেম্বর-এপ্রিল) এবং আর্দ্র গ্রীষ্মকাল (মে-অক্টোবর) পরিলক্ষিত হয়।

মেইকটিলা (১৯৮১-২০১০)-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) ২৯.৯
(৮৫.৮)
৩৩.০
(৯১.৪)
৩৬.৫
(৯৭.৭)
৩৮.৪
(১০১.১)
৩৬.০
(৯৬.৮)
৩৩.০
(৯১.৪)
৩২.৭
(৯০.৯)
৩২.৩
(৯০.১)
৩২.৭
(৯০.৯)
৩২.৫
(৯০.৫)
২৯.৬
(৮৫.৩)
২৮.৮
(৮৩.৮)
৩৩.০
(৯১.৪)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) ১৪.৬
(৫৮.৩)
১৬.৭
(৬২.১)
২১.১
(৭০.০)
২৫.০
(৭৭.০)
২৫.২
(৭৭.৪)
২৪.৬
(৭৬.৩)
২৪.৪
(৭৫.৯)
২৪.৩
(৭৫.৭)
২৪.২
(৭৫.৬)
২৩.৪
(৭৪.১)
২০.০
(৬৮.০)
১৬.০
(৬০.৮)
২১.৬
(৭০.৯)
বৃষ্টিপাতের গড় মিমি (ইঞ্চি) ২.৩
(০.০৯)
১.৮
(০.০৭)
১০.০
(০.৩৯)
২৫.৫
(১.০০)
১২৬.৪
(৪.৯৮)
১০৩.৮
(৪.০৯)
৭৫.৪
(২.৯৭)
১২১.০
(৪.৭৬)
১৫০.৬
(৫.৯৩)
১৪৭.৪
(৫.৮০)
৪১.৫
(১.৬৩)
৭.২
(০.২৮)
৮১২.৯
(৩২.০০)
উৎস: নরওয়েজীয় আবহাওয়াবিদ্যা ইনস্টিটিউট []

সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]

এ শহরের নামকরা প্যাগোডাগুলো হচ্ছে- শ্বেমিন্‌তিন (Shwemyintin), শ্বেইন্‌মি (Shweyinmi), নাগায়োঁ (Nagayon), ইয়েলে (Yele), সুতং পি (Sutaung Pyi), ফাউং দাও উ (Hpaung Daw U) এবং ফাউংদাউ (Phaungdawoo)।

শিক্ষা

[সম্পাদনা]

মেইকটিলাতে মিয়ানমার মহাকাশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এর অবস্থান, যা একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আঞ্চলিক মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় যেমন- মেইকটিলা বিশ্ববিদ্যালয়, মেইকটিলা অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার বিশ্ববিদ্যালয়, মেইকটিলা প্রযুক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেইকটিলা শিক্ষা মহাবিদ্যালয় এর অবস্থানও এখানে।

শহরের ছয়টি সরকারি মৌলিক শিক্ষা উচ্চ বিদ্যালয়ের মধ্যে, বিইএইচএস ১ মেইকটিলা বা রয়্যাল উচ্চ বিদ্যালয় কে সবচেয়ে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে গণ্য করা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

সামরিক বাহিনী

[সম্পাদনা]

মেইকটিলায় মিয়ানমার বিমান বাহিনীর দুটি ঘাঁটি রয়েছে:

  • মেইকটিলা বিমান ঘাঁটি এবং কেন্দ্রীয় কমান্ডের দপ্তর
  • শান্তে বিমান ঘাঁটি - মেইকটিলার উত্তরে পিইন্‌থারিয়ার এ অবস্থিত

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Min Lwin (২০০৮-১২-০১)। "Junta Orders Major Air Force Base Relocated"। The Irrawaddy News। ২০০৮-১২-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "State of emergency in Burmese town"BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-০৩-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১২ 
  3. [১]
  4. https://www.economist.com/news/asia/21574506-sectarian-violence-was-not-supposed-be-part-myanmars-bright-new-direction-when-lid-blows Communal violence in Myanmar: When the lid blows off
  5. চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Meiktila"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ18 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 82–83। 
  6. "Myanmar Climate Report" (পিডিএফ)। Norwegian Meteorological Institute। পৃষ্ঠা 23–36। ৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৮