মেইম মাদিয়র বোয়ে | |
---|---|
সেনেগালের ৭ম প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ৩ মার্চ ২০০১ – ৪ নভেম্বর ২০০২ | |
রাষ্ট্রপতি | আবদুলায়ে ওয়েডে |
পূর্বসূরী | মুস্তাফা নিয়াসে |
উত্তরসূরী | ইদ্রিসা সেক |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯৪০ (বয়স ৮৪–৮৫) সেন্ট-লুই্, ফরাসি পশ্চিম আফ্রিকা (বর্তমান সেনেগাল) |
রাজনৈতিক দল | ডেমোক্রেটিক পার্টি |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ডাকার বিশ্ববিদ্যালয় ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল স্কুল ফর দ্য জুডিশিয়ারি |
মেইম মাদিয়র বোয়ে (জন্ম ১৯৪০[১]) ছিলেন সেনেগালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। ২০০১ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি এই দ্বায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি সেন্ট-লুইসের একটি আইনজীবী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার তিন ভাইয়ের মতো তিনিও ডাকার এবং প্যারিসে আইন-শিক্ষা গ্রহণ করেন। তার বাবা প্রথমদিকে একজন কেরানি থাকলেও পরবর্তীকালে বেলিফ হন। তিনি তার নিজ শহরের ফায়দারবে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্নাতক অর্জন করেন। ১৯৬৩ সালে, তিনি ডাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও অর্থনৈতিক বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি হন এবং তারপর ১৯৬৯ পর্যন্ত প্যারিসের ন্যাশনাল সেন্টার ফর জুডিশিয়াল স্টাডিজ (সিএনইজে) এ তার প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান।[২]
তিনি তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় সেনেগালিজ বিচার বিভাগে কাটিয়েছেন। তিনি পরপর ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর, বিচারক এবং ডাকারের স্থানীয় প্রথম শ্রেণীর আদালতের প্রথম সহ-সভাপতি এবং আপিল আদালতের চেম্বার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সেনেগালিজ আইনজীবীদের সমিতির একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম মহিলা সভাপতি ছিলেন,[১] তারপর ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০০ সালের এপ্রিল পর্যন্তপ শ্চিম আফ্রিকান ব্যাংকিং কোম্পানি (কম্পাগনি ব্যানকায়ার ডি ল 'আফ্রিকো অক্সিডেন্টাল, সিবিএও) এর পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন .দায়িত্ব পালন করেন।[৩] বতিনি১৯৭৮ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী আইনজীবী ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি একজন পেশাদার, বুদ্ধিমান এবং সৎ হিসাবে সকলের নিকট সম্মানিত ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন মুসলিম উগ্র নারীবাদী, তালাকপ্রাপ্তা এবং দুই সন্তানের জননী। রাষ্ট্রপতি আবদু দিউফের সাথে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকায় তিনি তার সততা এবং স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য বিচার ব্যবস্থায় উচ্চ পদ গ্রহণ করেননি।[৪]
২০০০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আবদুলায়ে ওয়েডের বিজয়ের পর, বোয়ে ২০০০ সালের এপ্রিল মাসে বিচারমন্ত্রী হন।[৩][৫] কিন্তু তখন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে মতান্তর দেখা দেয়। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অন্য একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। তারপর প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা নিয়াস পদত্যাগ করেন এবং সংসদ নির্বাচনের দুই মাস আগে ২০০১ সালে ৩ মার্চে রাষ্ট্রপতি ওয়েড বোয়েকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। আইনসভায় রাষ্ট্রপতি ওয়েডের সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাব ছিল এবং ৩০ টিরও বেশি নির্দলীয় নারী সংগঠন নির্বাচনের আগে একটি প্রচারাভিযানের আয়োজন করেছিল যাতে আইনসভায় আরও নারী আসন বাড়ানো হয়। বোয়ে শুধু একজন নারীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন নির্দলীয়। তাই তার নিয়োগ ছিল রাষ্ট্রপতির জন্য সুবিধাজনক।[৬] তিনি নতুন সরকারের বিচার মন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেন।[৭] পরবর্তী নির্বাচনে ওয়েড বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান। সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়লেও তা ১৯ শতাংশের বেশি ছিল না। ২০০১ সালের এপ্রিল মাসের সংসদ নির্বাচনের পর, বোয়েকে ১০ মে ২০০১ তারিখে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ১২ মে নিযুক্ত সরকারে বিচার মন্ত্রী হিসাবে প্রতিস্থাপিত হন।[৮][৯]
বোয়ের দ্বিতীয় সরকারে ২৫ জন মন্ত্রীর পাঁচজন মহিলা ছিলেন, আগের সরকারে ছিলেন দুজন। এটি ছিল বোয়ের জন্য একটি চমৎকার বিজয়। কিন্তু সরকার যথেষ্ট অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে শক্তিশালী করা, বেতন বৃদ্ধি, তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব কমানো এবং কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতি করার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রীরা নতুন এবং অনভিজ্ঞ ছিলেন এবং জোটের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বোয়ে রাষ্ট্রপতির অধস্তন ছিলেন, এবং ওয়েড ছিলেন সুস্পষ্ট কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা সম্পন্ন একজন গতিশীল নেতা[১০] বোয়ে এবং তার সরকারকে ৪ নভেম্বর ২০০২ সালে রাষ্ট্রপতি বরখাস্ত করেন, ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে এমভি জোলা সমুদ্র বিপর্যয়ে বোয়ের প্রতিক্রিয়ার কারণে।[১১] এটি সর্বকালের সবচেয়ে খারাপ জাহাজ বিপর্যয়ের মধ্যে একটি ছিল। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ফেরি ডুবে ১৮০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়। বোয়ে বলেছিলেন যে ক্রুদের ব্যর্থতার বদলে দুর্ঘটনাটি আবহাওয়ার কারণে হয়েছিল। কিন্তু অনতিবিলম্বেই উচ্চ-স্তরের ত্রুটির অভিযোগ ওঠে। ফলে নৌবাহিনীর প্রধানকে বরখাস্ত করা হয় এবং দুই মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়।[১২]
পরবর্তীতে ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে, সশস্ত্র সংঘর্ষে বেসামরিক লোকদের সুরক্ষার প্রচারের জন্য আফ্রিকান ইউনিয়নের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে আলফা ওমার কোনারি মাদিয়র বোয়েকে নিযুক্ত করেন।[১৩]
২০০৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, ফ্রান্সের একজন বিচারক জুলা দুর্যোগের ঘটনায় বোয়েসহ আটজনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।[১৪] সেনেগাল সরকার এটি প্রত্যাখ্যান করে এবং জবাবে সমন জারি করা বিচারকের বিরুদ্ধে বিচারের সিদ্ধান্ত নেয়।[১৫] প্যারিস কোর্ট অফ আপিল ২০০৯ সালের জুনের মাঝামাঝি সময়ে বোয়ের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করে।[১৬]
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী {{{before}}} |
{{{title}}} | উত্তরসূরী {{{after}}} |