মেচ

মেচ পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় বসবাসকারী এক তপসীলভুক্ত উপজাতি। মেচ জনজাতির মানুষেরা ইন্দো-মঙ্গলীয় জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এঁরা বড়ো ভাষায় কথা বলেন, যা ভোট-বর্মা ভাষার অন্তর্গত। বলা হয় যে অসমীয়া ভাষা অনেকাংশেই বিভিন্নো বড়ো মুলিও ভাষার দ্বারা প্রভাবিত।[]বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ মেচ সম্প্রদাযের মানুষ নিজেদের বড়ো বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন।

মেচ জাতির উতপত্তি নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। অনেকে মনে করেন যে, মেচ নামটা সম্ভবত তরাই এর মেচী নদীর থেকে এসেছে। একটি মেচ কিংবদন্তি থেকে জানা যায় যে মেচ সম্প্রদাযের পূর্বপুরুষেরা মেচী নদীর কাছাকাছি অঞ্চলে বাস করতেন। তবে একথাও মনে করা হয় যে মেচ নামটি "ম্লেচ্ছ" কথাটি থেকে এসেছে।[] তবে একথা ঠিক যে, মেচেরা এক অতি প্রাচীন জাতি। অনেকে মনে করেন যে, কোচবিহারের কোচ রাজারা পঞ্চদশ শতকের এক মেচ সর্দার হরিদাস মণ্ডলের বংশধর।

অতীতে মেচ জাতির লোকেরা ঝুম চাষে অভ্যস্ত ছিলেন। লাঙ্গল ও বলদের সাহায্যে কৃষি কাজ তাদের অজানা ছিলো।[] ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্য ভাগ থেকেই এর পরিবর্তন শুরু হলো। মেচেরা লাঙ্গলের সাহায্যে চাষাবাদ করতে শুরু করলেন। বলা হয় যে খুব তাড়াতাড়ি তারা আধুনিক প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ রপ্ত করে ফেলেছিলেন। সান্ডার নামক এক ব্রিটিশ সমীক্ষক মেচেদের মধ্যে দ্রুত উন্নতি লক্ষ করেছিলেন।

মেচ মহিলারা রেশমের গূটিপোকা পালন ও রেশম উত্পাদনে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। মেচ গৃহে আজও বাঁশের তাঁত যন্ত্র দেখতে পাওয়া যায় ।

পাদটীকা

[সম্পাদনা]
  1. Kishor Deori, Chuperemago(1997)
  2. Sanyal, Charu Chandra (1973), "The Meches and the Totos: two sub-Himalayan tribes of North Bengal", University of North Bengal.
  3. Hodgson, B.H., "Miscellaneous Essays Relating to Indian Subjects, Volume 1".