মেরি পুথিসসেরিল ভার্গিস | |
---|---|
জন্ম | কোচি, কেরালা | ২১ মে ১৯২৫
মৃত্যু | ১৭ ডিসেম্বর ১৯৮৬ ভেলোর, তামিলনাড়ু | (বয়স ৬১)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা | এমবিবিএস, শারীরিক চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে ফেলোশিপ |
মেডিকেল কর্মজীবন | |
পেশা | চিকিৎসক |
ক্ষেত্র | শারীরিক ওষুধ ও পুনর্বাসন |
প্রতিষ্ঠান | খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজ, ভেলোর |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | পদ্মশ্রী ১৯৭২ |
মেরি পুথিসসেরিল ভার্গিস (১৯২৫–১৯৮৬) ভারতের একজন চিকিৎসক, যিনি দেশে শারীরিক ওষুধ ও পুনর্বাসনের অগ্রগামীদের মধ্যে একজন ছিলেন। ১৯৬৩ সালে, তিনি ভেলোরর খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজের শারীরিক ওষুধ ও পুনর্বাসন বিভাগের দায়িত্ব নেন। এখানে ভারতে প্রথম, আবাসিক রোগীর সুবিধা নিয়ে, এই বিভাগটি তৈরী হয়। তিনি ১৯৬৬ সালে দেশের প্রথম আবাসিক রোগী পুনর্বাসন বিভাগ প্রতিষ্ঠার সাথেই, বিভাগের সেবা সম্প্রসারণেও উদ্যোগী হন।[১] ওষুধের ক্ষেত্রে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ, ১৯৭২ সালে, ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করেন।[২]
তার স্মৃতিতে, মেরি ভার্গিস ট্রাস্ট, একটি পুরস্কার প্রদান করছে, এবং প্রথম ড. মেরি ভার্গিস পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, ২০১২ সালে এস. রামকৃষ্ণন কে, পুনর্বাসিতদের ক্ষমতার অধিকারী করার ক্ষেত্রে উৎকর্ষ দেখাবার জন্য। তিনি অমর সেবা সঙ্গমের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি।[৩][৪]
মেরি ভার্গিস ভারতের, কেরালা রাজ্যের কোচির চেরাই গ্রামে, একটি সমৃদ্ধ পরিবারে, জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা স্থানীয় গির্জা ও সম্প্রদায়ের মধ্যে একজন সম্মানিত নেতা ছিলেন। পরিবারের আট সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সপ্তম। বড়দের মধ্যে ছিলেন তার বোন আন্নামা, আলেআম্মা, থাংকাম্মা, এবং ভাই জন, জর্জ এবং জোসেফ। মার্থা তার ছোট বোন ছিলেন। চেরাইয়ের ইউনিয়ন হাই স্কুলে পড়াশোনা করার পর, তার কলেজ অধ্যয়নের জন্য, মেরি, এর্নাকুলামের মহারাজা'স কলেজে ভর্তি হন। তিনি ১৯৪৬ এবং ১৯৫২ সালের মধ্যে ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজে মেডিসিনে স্নাতক প্রশিক্ষণ পান। সেখানে, কোর্সে ভর্তির পর প্রথমবারের মতো, তিনি ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা, ডাঃ ইদা এস স্কুডারের দেখা পেয়েছিলেন। ওষুধে তার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর, স্ত্রীরোগ-সম্বন্ধীয় শল্যচিকিৎসা বিভাগে বিশেষজ্ঞ হওয়ার জন্য, তিনি স্ত্রীরোগবিদ্যা বিভাগে যোগ দেন।[৫]
সেখানে কাজ করার সময়, তিনি ১৯৫৪ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন, যার ফলে তার পুরো মেরুদন্ডে আঘাতে লাগে। তিনি কোমরের নিচ থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যান। তার আঘাতের চিকিৎসা করেন ড. পল ব্র্যান্ড, যিনি পরবর্তীকালে তার পরামর্শদাতা হয়ে উঠেছিলেন এবং যাঁর অধীনে তিনি কুষ্ঠরোগীর পুনর্বাসন সম্পর্কিত অস্ত্রোপচারে দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। ডাঃ পল ব্র্যান্ড দেখিয়েছিলেন যে তিনি তার হুইলচেয়ারে বসে হ্যানসেন'স রোগীর হাতে অস্ত্রোপচার করতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ায় পার্থের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে পুনর্বাসনের ওপর একটি কোর্স করার পর, ভার্গিস, এই কাজের একজন অগ্রণী ডা. হাওয়ার্ড এ রাস্কের অধীনে, নিউ ইয়র্কের ইনস্টিটিউট অফ ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটিশনে একটি ফেলোশিপ পান। ১৯৬২ সালে তার ফেলোশিপ সম্পন্ন করার পর, তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজ, শারীরিক ওষুধ ও পুনর্বাসন বিভাগ এর প্রধান হন। তিনি ১৯৬৬ সালে পুনর্বাসন ইনস্টিটিউটটি শুরু করেন, এবং দেশে প্রথম সম্পূর্ণ কার্যকরী শারীরিক পুনর্বাসন বিভাগের নেতৃত্ব দান করেন। তিনি মূলত মেরুদণ্ডের আঘাত, কুষ্ঠ, এবং মস্তিষ্কের আঘাতযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য পুনর্বাসন সেবা প্রদানে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজে কাজ করেন।[৬]
"টেক মাই হ্যান্ড: দ্য রিমার্কেবল স্টোরি অফ ড. মেরি ভার্গিস" শিরোনামে তার জীবনী, ডরোথি ক্লার্ক উইলসন দ্বারা লিখিত, ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত হয়।
ঔষধ ক্ষেত্রে, বিশেষতঃ, ভারতে শারীরিক পুনর্বাসন ক্ষেত্রে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ, ১৯৭২ সালে মেরি ভার্গিস ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শ্রী. ভি.ভি. গিরির হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ভিশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।
ভার্গিস ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বরে ভেলোরে মারা যান। তার প্রতিষ্ঠিত পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানটি তার সম্মানে নামাংকৃত করা হয়েছে। ১৯৮৬ সালে মেরির প্রতিষ্ঠিত মেরি ভার্গিস ট্রাস্ট, শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রাস্ট যৌথভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের, পুনর্বাসন মেটাতে বার্ষিক এক অনুষ্ঠান, রিহ্যাব মেলা, পরিচালনা করে।[৭] ২০১২ সালে, "মেরি ভার্গিস পুরস্কার প্রতিষ্ঠান"টি তৈরী হয়েছিল।
ভেলোরের বাগায়ামের পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবন্ধী মানুষের সাহায্য অব্যাহত রেখেছে। ইনস্টিটিউটটি মেরুদন্ডে আঘাত, স্ট্রোক, মস্তিষ্কের আঘাত, অঙ্গহানি (হারানো প্রত্যঙ্গ), সেরিব্রাল পলসি সহ শিশু এবং অন্যান্য অনেক কম সাধারণ সমস্যাগুলির চিকিৎসা করে। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে এমন একটি পরিষেবা শুরু করার জন্য ড. মেরিকে এখনো স্মরণ করা হয়।
বছর | প্রাপক | সংস্থা |
---|---|---|
২০১২ | এস. রামকৃষ্ণন[৩] | অমর সেবা সঙ্গম, তামিলনাড়ু |
২০১৩ | কে. ভি. রাবিয়া[৮] | চলনম, কেরল |
২০১৪ | এন.এস. হেমা[৯] | দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ পিপল উইথ ডিসএবিলিটি, কর্ণাটক |
২০১৫ | সি. অ্যান্টনিসামি[১০] | দ্য ওয়ার্থ ট্রাস্ট, কটপডি, তামিলনাড়ু |