مہرگڑھ مهرګړ | |
বিকল্প নাম | Mehrgahr, Merhgarh, Merhgahr |
---|---|
অবস্থান | ধাদার, বেলুচিস্তান, পাকিস্তান |
অঞ্চল | দক্ষিণ এশিয়া |
স্থানাঙ্ক | ২৯°২৩′ উত্তর ৬৭°৩৭′ পূর্ব / ২৯.৩৮৩° উত্তর ৬৭.৬১৭° পূর্ব |
ইতিহাস | |
প্রতিষ্ঠিত | আনুমানিক ৭,০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ |
পরিত্যক্ত | আনুমানিক ২,৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ |
সময়কাল | নব্যপ্রস্তরযুগীয় |
স্থান নোটসমূহ | |
খননের তারিখ | ১৯৭৪–১৯৮৬, ১৯৯৭-২০০০ |
প্রত্নতত্ত্ববিদ | জাঁ ফ্রাঁসোয়া জারিজ এবং রিচার্ড মিডৌ |
মেহেরগড় (Urdu : مﮩرگڑھ , বেলুচ : Mehrgaŕh) একটি নব্যপ্রস্তরযুগীয় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, যার সময়কাল ৭,০০০ - ২৫০০/২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। এটি পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কাচ্চি সমভূমিতে অবস্থিত সিন্ধু উপত্যকার পশ্চিমে এবং বর্তমান পাকিস্তানের কোয়েটা, কালাত ও সিবি শহরের মধ্যে এবং বোলান গিরিখাতের নিকটে। ফরাসী প্রত্নতাত্ত্বিক জাঁ ফ্রাঁসোয়া জারিজ ও ক্যাথরিন জারিজ পরিচালিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক দল ১৯৭৪ সালে এই স্থানটি আবিষ্কার করেন এবং ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে এর খননকাজ চালিয়ে যান।
এখন পর্যন্ত মোট ছয়টি টিলা থেকে প্রায় ৩২,০০০ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করা হয়েছে। মেহেরগড়ের মোট ক্ষেত্রফল ৪৯৫ একর (২ বর্গকিলোমিটার), এখানকার প্রথম বসতি ছিল এর উত্তর-পূর্ব কোণের একটি ছোট্ট কৃষিনির্ভর গ্রাম, যার সময়কাল ৭,০০০ থেকে ৫,৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মাঝামাঝি।
মেহেরগড় সভ্যতার প্রথম পর্যায় (৭,০০০ - ৫,৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) ছিল মৃৎশিল্পপূর্ব নব্যপ্রস্তরযুগীয় (aceramic neolithic)। কিছু অর্ধ-যাযাবর জাতির লোক গম ও যব চাষ এবং ভেড়া, ছাগল ও গাভী জাতীয় গবাদিপশু পালনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের প্রাথমিক কৃষিব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। এখানকার অধিকাংশ ঘরবাড়ি ছিল চার কামরাবিশিষ্ট কাদামাটির তৈরি। এখানে বেশকিছু কবরের সন্ধান পাওয়া গেছে, যার ভেতরে ছিল ঝুড়ি, পাথর এবং হাড়ের সরঞ্জাম, জপমালা, চুড়ি, দুল এবং মানুষ ছাড়াও মাঝেমধ্যে বলি দেওয়া পশুর কঙ্কাল ইত্যাদি। এখানে প্রাপ্ত প্রত্নবস্তুর মধ্যে রয়েছে ঝিনুকের খোল, চুনাপাথর, টারকোয়েজ, ল্যাপিস লাজুলি এবং বেলেপাথরের অলঙ্কার, বিভিন্ন প্রাণী ও নারীর মূর্তি ইত্যাদি। সমুদ্রতীর ও বর্তমান আফগানিস্তানের বাদাখশান (লাপিস লাজুলির মূল উৎস) থেকে এত দূরে ঝিনুকের খোল ও লাপিস লাজুলির প্রাপ্তি ঐসব অঞ্চলের সাথে এই সভ্যতার যোগাযোগের প্রমাণ দেয়। একটা কবরের মধ্যে একটা এবং উপর থেকে আরও বেশ কয়েকটা একপৃষ্ঠীয় প্রস্তর কুঠার (single ground stone axe) পাওয়া গিয়েছিল, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাপ্ত এজাতীয় প্রাচীনতম নিদর্শন।
মেহেরগড়ের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায় কিলি গুল মোহাম্মদ নামক আরেকটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের সমকালীন, তাই এ অঞ্চলের মৃৎশিল্পপূর্ব নবপ্রস্তরযুগীয় পর্যায়কে (৭,০০০ - ৫,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) 'কিলি গুল মুহাম্মাদ পর্যায়' বলা হয়, যদিও কিলি গুল মুহাম্মাদ স্থানটি ৫,৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের। [১]
২০০১ সালে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা প্রাচীন মেহেরগড় সভ্যতার দু'জন লোকের দেহাবশেষ নিয়ে গবেষণাকালে আবিষ্কার করেন, এই সভ্যতার লোকেরা আদি দন্তচিকিৎসা সম্পর্কে জানতো। ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে বৈজ্ঞানিক জার্নাল "নেচারে" ঘোষণা করা হয়, জীবিত মানুষের দাঁত বাঁধানোর প্রাচীনতম (এবং প্রথম প্রারম্ভিক নবপ্রস্তরযুগীয়) প্রমাণ মেহেরগড়ে পাওয়া গেছে। লেখকদের মতে, তাদের আবিষ্কার ঐ অঞ্চলের প্রারম্ভিক কৃষিভিত্তিক সভ্যতার আদি দন্তচিকিৎসার ঐতিহ্যকে নির্দেশ করে। "এখানে আমরা পাকিস্তানের নবপ্রস্তরযুগীয় গোরস্থানে আবিষ্কৃত নয়জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির এগারোটি বাঁধানো দন্তমুকুট বর্ণনা করেছি যা ৫,৫০০ থেকে ৯,০০০ বছর আগের। এগুলো প্রারম্ভিক কৃষিভিত্তিক সভ্যতায় এক প্রকার আদি দন্তচিকিৎসার দীর্ঘ ঐতিহ্যের প্রমাণ।"[২]