মৈথিলী শরণ গুপ্ত | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
![]() | |||||||||
জন্ম | চিরগাঁও, উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত | ৩ আগস্ট ১৮৮৬||||||||
মৃত্যু | ১২ ডিসেম্বর ১৯৬৪ ভারত | (বয়স ৭৮)||||||||
পেশা | কবি, রাজনীতিবিদ, নাট্যকার, অনুবাদক | ||||||||
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | ম্যাকডোনাল হাই স্কুল ঝাঁসি | ||||||||
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | পদ্মভূষণ (১৯৫৪) | ||||||||
দাম্পত্যসঙ্গী | শ্রীমতি সারজু দেবী | ||||||||
সন্তান | উর্মিল চরণ গুপ্ত | ||||||||
আত্মীয় | সিয়ারামশরণ গুপ্ত | ||||||||
|
মৈথিলী শরণ গুপ্ত[১] (৩ আগস্ট ১৮৮৬ - ১২ ডিসেম্বর ১৯৬৪) ছিলেন আধুনিক হিন্দি সাহিত্যের অন্যতম ভারতীয় হিন্দি কবি।[২] তাকে খড়ি বোলি ভাষার কবিতার পথপ্রদর্শকদের একজন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তার সমসাময়িক অধিকাংশ হিন্দি কবিই ব্রজভাষাতেই কবিতা লিখতেন।[৩] কবিতা লেখার পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন জাতীয়তাবাদী।
তিনি ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের ঝাঁসি জেলার চিরগাঁও-এ জন্মগ্রহণ করেন।[৪] গাহোই বানিয়া সম্প্রদায়ের কাঁকনে বংশের একটি পরিবারে তার জন্ম। জমিদার বংশে জন্ম হলেও তার জন্মের সময় পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ভাল ছিল না।[৫] তার পিতার নাম শেঠ রামচরণ গুপ্ত।[৪] মায়ের নাম ছিল কাশীবাই। তার পিতা এবং তার ভাই শেরামশরণ গুপ্ত উভয়েই বিশিষ্ট কবি ছিলেন।[৪] ছোটবেলায় মৈথিলী শরণের স্কুলে যেতে একেবারেই ভাল লাগত না, তাই তার বাবা বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন।[৪] শৈশবে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি এবং বাংলা অধ্যয়ন করেন।[৪] তার শিক্ষাগুরু ছিলেন বিশিষ্ট হিন্দি লেখক ও প্রথম হিন্দি মাসিক সরস্বতী পত্রিকার সম্পাদক মহাবীর প্রসাদ দ্বিবেদী। ১৮৯৫ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে তার বিবাহ হয়।[৬]
সরস্বতী পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কবিতা লিখে মৈথিলী শরণ হিন্দি সাহিত্যের জগতে প্রবেশ করেন। ১৯০৯ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ রঙ্গ মে ভাং ইন্ডিয়ান প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়। স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন তার ভারত ভারতী প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থে রচিত জাতীয়তাবাদী কবিতাগুলি ভারতীয়দের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যারা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছিলেন। তার অনেক লেখায় পৌরাণিক প্রভাব রয়েছে। তার রচিত বিখ্যাত মহাকাব্য ‘সাকেত’ রামায়ণের উল্লেখযোগ্য চরিত্র লক্ষ্মণের স্ত্রী উর্মিলাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে।
রামধারী সিং দিনকর এবং মাখনলাল চতুর্বেদীর কবিদের মতো তার রচনাগুলি দেশাত্মবোধক পটভূমির উপর ভিত্তি করে রচিত।[৪] তার কবিতা খড়িবোলি ভাষাতে লেখা ছন্দহীন কিন্তু আধুনিক কবিতার বৈশিষ্ট্যে সম্মুজ্জ্বল। তিনি একজন ধার্মিক মানুষ ছিলেন। তাই তার রচনায় ধার্মিকভাবের প্রভাব দেখা যায়।[৪]
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর তাকে রাজ্যসভার সাম্মানিক সদস্যও করা হয়। রাজ্যসভায় থাকাকালীন তিনি অন্যান্য সদস্যদের সামনে তার মতামত রাখার জন্য কবিতা ব্যবহার করতেন। ১৯৬৪ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন।
তিনি ভারতীয় অসামরিক তৃতীয় সর্বোচ্চ (তখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ) সম্মান পদ্মভূষণের প্রাপক ছিলেন(১৯৫৪)।[৭]
মৈথিলী শরণ গুপ্তের লেখা ভারত-ভারতী (১৯১২)[৮] বইটির ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ব্যাপকভাবে উদ্ধৃত হয়। এই অবদানের জন্য মহাত্মা গান্ধী তাকে ‘রাষ্ট্রকবি’ উপাধি[৪] দিয়েছিলেন।