মোচে নদী

মোচে নদী
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
মোহনাপ্রশান্ত মহাসাগর

মোচে নদী (স্পেনীয় ভাষা - Rio Moche) হল উত্তর-পশ্চিম পেরুর একটি নদী। এর দৈর্ঘ্য ১০২ কিলোমিটার। আন্দিজ পর্বতের ৩৯৮৮ মিটার উচ্চতায় কিরুভিলচা গ্রামের কাছে লাগুয়ানা গ্রন্দে হ্রদ থেকে এর উৎপত্তি। এরপর পশ্চিমবাহী এই নদী পেরুর দেপাতমেন্তো দে লা লিবারতাদ বা লা লিবারতাদ অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে গিয়ে পড়েছে। বর্ষাকালে এই নদী প্রতি সেকেন্ডে ৫৫৬.৮ ঘনমিটার পর্যন্ত জল বহন করে থাকে বলে দেখা গেছে। তবে শুখা মরশুমে এই নদীর খাত মোটামুটি শুকনোই থাকে। ফলে মোচে নদীর সারা বছরের গড় জল বহনের পরিমাপ মাত্র ৯.৫৩ ঘনমিটার প্রতি সেকেন্ড।[] এই নদীর উপত্যকা সাধারণভাবে মোচে উপত্যকা নামে পরিচিত।

উৎস মুখে এই নদীর নাম রিও গ্রন্দে। এরপর কিছুটা প্রবাহিত হয়ে স্থানীয়ভাবে এই নদী সান লোরেনথো নামেও পরিচিত হয়। তবে উৎসমুখ থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে সান হুয়ান শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হবার সময়ই এই নদীকে মোচে নদী বলে অভিহিত করা শুরু হয়। এরপর সমুদ্রে মোহনা পর্যন্ত এই নদী এই নামেই পরিচিত।

উপত্যকা

[সম্পাদনা]

মোচে উপত্যকার আয়তন প্রায় ২৭০০ বর্গ কিলোমিটার। প্রায় ১০,৫০০ হেক্টর জমিতে খালের সাহায্যে এই নদী থেকে জলসেচের মাধ্যমে এই উপত্যকায় চাষবাস হয়ে থাকে।[] অবশ্য এই নদীর জল ব্যবহার করে সেচের মাধ্যমে কৃষিব্যবস্থা গড়ে ওঠার ঐতিহ্য বহু প্রাচীন। পেরুর সুপ্রাচীন মোচে সভ্যতা (১০০ - ৮০০ খ্রিষ্টাব্দ) ও পরবর্তী চিমু সভ্যতার (১২৫০ - ১৪৭০ খ্রিষ্টাব্দ) বিকাশে এই নদী ও তার উপত্যকার বিশেষ ভূমিকা আছে। এই নদীর জল ব্যবহার করে যে বিস্তীর্ণ এলাকায় তারা চাষের ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল, তার প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।[]

মোচে নদীর প্রবাহপথে সবচেয়ে বড় শহর হল ত্রুহিলিও। পেরুর এই তৃতীয় বৃহত্তম শহরটি নদীর নিম্নগতিতে এই নদীর উপত্যকাতেই অবস্থিত। যে মোচেভিক্তর লারচো শহরের কাছে মোচে নদী সমুদ্রে পড়েছে, সেগুলিও বাস্তবে ত্রুহিলিও পৌর এলাকারই অন্তর্ভুক্ত।

উপনদী

[সম্পাদনা]

মোচে উপত্যকা আরও অনেকগুলি ছোট ছোট নদী বিধৌত। এগুলির বেশির ভাগেরই উৎসস্থল আন্দিজ পর্বতের সুউচ্চ ভূমি এবং এগুলি সবকটিই মোচে নদীরই উপনদী।

  • পশ্চিমবাহী এই নদীর ডানদিকের উপনদীগুলি হল -
    • রিও মোতিল
    • রিও চোতা
    • রিও ওতুথকো
    • রিও কাতুয়ে
  • আর বামদিক থেকে এসে পড়া মূল উপনদীটি হল -
    • রিও চানচাকাপ

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Ministerio de Agricultura del Perú (ed.). "Principales cuencas a nivel nacional". সংগৃহীত ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫।
  2. সুমিতা দাস: কলম্বাস-পূর্ব আমেরিকা: মুছে দেওয়া সভ্যতার ইতিহাস. কোলকাতা, পিপলস বুক সোসাইটি, ২০১৪। আইএসবিএন ৮১-৮৫৩৮৩-৬২-৬. পৃঃ - ৯১ - ৯২।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]