মোনাজাইট

Monazite
Monazite-(Ce)
সাধারণ তথ্য
শ্রেণীPhosphate minerals
রাসায়নিক সূত্র(Ce,La,Th)PO4
স্ত্রুনজ শ্রেণীবিভাগ8.AD.50
স্ফটিক ভারসাম্যP21/n
সনাক্তকরণ
বর্ণReddish brown, brown, pale yellow, pink, green, gray
স্ফটিক রীতিCommonly as prismatic or wedge-shaped crystals
স্ফটিক পদ্ধতিMonoclinic
যমজContact twins common
বিদারণDistinct on [100] poor on [010]
ফাটলConchoidal to uneven
কাঠিন্য মাত্রা5.0–5.5
ঔজ্জ্বল্যResinous, vitreous to adamantine
ডোরা বা বর্ণচ্ছটাWhite
স্বচ্ছতাTranslucent to opaque
আপেক্ষিক গুরুত্ব4.6–5.7 (4.98–5.43 for monazite-Ce)
আলোকিক বৈশিষ্ট্যBiaxial (+)
প্রতিসরাঙ্কnα = 1.770–1.793
nβ = 1.778–1.800
nγ = 1.823–1.860
PleochroismWeak
২ভি কোণ10–26°
গলনাংক1900–2100
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য Radioactive if uranium and/or thorium-rich, dull brown cathodoluminescence, paramagnetic
তথ্যসূত্র[][]

মোনাজাইট এক প্রকার লালচে-বাদামী ফসফেট খনিজ যাতে পৃথিবীর দুষ্প্রাপ্য উপাদানগুলো আছে। সংমিশ্রণে পরিবর্তনের কারণে মোনাজাইটকে খনিজের একটি গ্রুপ হিসাবে ধরা হয়। [] যাতে সবথেকে বেশি প্রাপ্য প্রজাতি হচ্ছে মোনাজাইট (Ce), যা গ্রুপটির সেরিয়াম বেজড সদস্য। [] এটি সাধারণত ছোট ছোট আলগা স্ফটিকারে পাওয়া যায়। মোহস স্কেলের খনিজ দৃঢ়তায় এর কাঠিন্য ৫.০ থেকে ৫.৫ পর্যন্ত পাওয়া যায় এবং ইহা যথেষ্ট ঘনও, প্রায় 4.6 থেকে 5.7 গ্রাম/ঘন সেন্টিমিটার। খনিজের উপাদানের হিসাবে অন্তত চারটি আলাদা প্রকারের মোনাজাইট পাওয়া যায় (সম্পূর্ণ আলাদা প্রজাতি): []

মোনাজাইট (Ce), (Ce,La,Nd,Th)ফসফেট (সবথেকে বেশি পাওয়া যায়), মোনাজাইট (La), (La,Ce,Nd)ফসফেট, মোনাজাইট (Nd), (Nd,La,Ce)ফসফেট, মোনাজাইট (Sm), (Sm,Gd,Ce,Th)ফসফেট

ক্যাটাগরিঃ খনিজ ফসফেট

ফর্মুলাঃ (Ce, La, Th)ফসফেট

স্ট্রাঞ্জ শ্রেণিবিভাগঃ  8.AD.50

স্ফটিলের বর্ণঃ একরঙা

স্ফটিকের প্রকারঃ প্রিজম্যাটিক (২/মিটার) (অনুরূপ H-M সিম্বল)

শনাক্তকরণঃ

রঙঃ লালচে বাদামি, বাদামি, ফ্যাকাশে হলুদ, গোলাপি, সবুজ, ধূসর

স্ফটিকের স্বভাবঃ সাধারণত প্রিজম্যাটিক অথবা কীলক আকৃতির স্ফটিক। 

দ্বৈততাঃ সংস্পর্শে আসলে দেখা যায়।

খাজঃ স্বতন্ত্রতা (১০০) দুর্বলতা (১০)

ফাটলঃ অসমতার ক্ষেত্রে।

মোহস স্কেল দৃঢ়তাঃ ৫.০ - ৫.৫

আলোকদীপ্তিতাঃ রজনীয়, এডামানটাইন প্রতিরোধী

রেখাঃ সাদা

ডায়াফানেইটিঃ স্বচ্ছ থেকে অস্বচ্ছ।

মাধ্যাকর্ষণের নির্দিষ্টতাঃ ৪.৬ - ৫.৭ (৪.৯৮ - ৫.৪৩ মোনাজাইট - Ce এর জন্য)

আলোকিক বৈশিষ্ট্যঃ দ্বিখণ্ডিত (+)

প্রতিসরণ সূচকঃ nα = 1.770–1.793 nβ = 1.778–1.800 nγ = 1.823–1.860

প্লোক্রোসিজমঃ দুর্বল।

2V কোণঃ ১০-২৬ ডিগ্রী

গলনাংকঃ ১৯০০-২১০০

অন্যান্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যঃ অতিরিক্ত ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের উপস্থিতিতে তেজস্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে। ক্যাথোডে আলোক বিচ্ছুরণ ও প্যারাচৌম্বকীয় ধর্ম প্রদর্শন করে।

বন্ধনীতে থাকা উপাদানসমূহ খনিজে প্রাপ্ত তাদের আপেক্ষিক অনুপাতের ক্রমান্বয়ের উপর ভিত্তি করে তালিকায় রাখা হয়, ল্যান্থানাম (La) হচ্ছে পৃথিবীতে বিরল মোনাজাইটের ভেতর সবথেকে বেশি প্রাপ্ত ধাতু। অল্প কিছু ইউরেনিয়াম এবং থোরিয়ামসহ সামান্য পরিমাণ সিলিকাও পাওয়া যায়। থোরিয়াম ও ইউরেনিয়ামের আলফাক্ষরণের দরুন মোনাজাইটে প্রচুর পরিমাণে হিলিয়াম থাকে যা তাপ প্রদানের মাধ্যমে আলাদা করা যায়। মোনাজাইট থোরিয়াম, ল্যান্থানাম এবং সিরিয়ামের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ আকরিক। যা প্রায়ই জমে থাকা পাললিক বালুর মাঝে পাওয়া যায়। ভারত, মাদাগাস্কার এবং সাউথ আফ্রিকায় প্রচুর মোনাজাইট বালুর স্তর পাওয়া যায়, বিশেষ করে ভারতে প্রচুর মোনাজাইট আছে। থোরিয়াম এবং স্বল্প ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি কারণে মোনাজাইটে তেজস্ক্রিয় স্বভাব থাকে। ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের তেজস্ক্রিয়ক্ষরণের ফলে মোনাজাইটের ভূত্বকে থাকা মোনাজাইট যথেষ্ট পুরানো হবার মাধ্যমে সক্ষম করে তোলে। মোনাজাইট স্ফটিকে অসংখ্য স্বতন্ত্র জায়গা থাকে যা সফল ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হয় এবং যা মোনাজাইট স্ফটিককরণে রুপান্তর হয়। এই জায়গাগুলো তারিখ নির্ণয় করা গেলে তাদের বাহক পাথরগুলোর ব্যাপারে পর্যাপ্ত ধারণা পাওয়া যাবে। মোনাজাইট শব্দের উৎপত্তি গ্রীক শব্দ μονάζειν (মোনাজেল) থেকে, যা জার্মানে Monazit, যা এর স্ফটিকের ভিন্ন ভিন্ন অভিব্যক্তিকে নির্দেশ করে। সব মোনাজাইটই একই গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে, যার অর্থ এদের পরমাণুর সংযোগসূত্রতার সাথে M(III)ফসফেট এর যৌগিক গঠনের যথেষ্ট মিল আছে। M(III) এর কেন্দ্রে একটা বিকৃত সমন্বয়কারী গোলক আটটি অক্সাইড দ্বারা ঘিরে থাকে আশেপাশে M - O দূরত্বের মাধ্যমে যার দৈর্ঘ্য ২.৬ Å হয়ে থাকে। ফসফেট আয়ন আকৃতিতে চতুস্তলবিশিষ্ট।  এই গঠন লিড ক্রোমেটেও দেখা যায়।

খনন ইতিহাসঃ

১৮৮০ সালে কার্ল আউর ভন ওয়েলসবাক বালু বোঝাই করে আসা একটা জাহাজে থাকা নুড়িপাথরে সর্বপ্রথম।মোনাজাইটের বালু দেখতে পান। ভন ওয়েলসবাক মূলত থোরিয়াম খুজছিলেন তার সদ্য আবিষ্কৃত দ্যুতিময় লন্ঠনের জন্য। থোরিয়ামের উৎস থেকে মোনাজাইটের বালু খুব দ্রুত গৃহীত হচ্ছিল এবং এখান থেকেই বিরল-পৃথিবী শিল্পের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে কিছু পরিমাণ মোনাজাইট বালু উত্তর ক্যারোলিনাতে সংগৃহীত হয়, কিন্তু এর কিছু পরেই দক্ষিণ ভারতে এর বিশাল ভান্ডার আবিষ্কৃত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে ব্রাজিলিয়ান এবং ভারতীয় মোনাজাইট গোটা শিল্প নিয়ন্ত্রণ করলেও যুদ্ধের পরে গোটা খননকার্য দক্ষিণ আফ্রিকায় সরে যায়। অস্ট্রেলিয়াতেও মোনাজাইটের বিশাল ভান্ডার আছে। মোনাজাইট ব্যবসায়িক ল্যান্থানাইডসের একসময় একমাত্র তাৎপর্যপূর্ণ উৎস ছিল, কিন্তু থোরিয়ামের ব্যবহারের পর তা থেকে প্রাপ্ত উচ্ছিষ্টাংশ বর্জ্যপদার্থ এর মূল চিন্তার কারণ হয়ে দাড়ায়। ব্যাস্টনাসাইটে থোরিয়ামের স্বল্পতা থাকার দরুন ১৯৬০ সাল থেকে ল্যান্থানাইড উৎপাদনে মোনাজাইটের জায়গা ব্যাস্টনাসাইট দখল করে নেয়। বর্তমানে নিউক্লিয়ার শক্তিতে থোরিয়াম ব্যবহারের আগ্রহ আবার নতুন করে মোনাজাইটকে ব্যবসায়িক খাতে ব্যবহারের সম্ভাবনা ফিরিয়ে আনতে পারে।


তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]