মোনিয়ার মোনিয়ার-উইলিয়ামস | |
---|---|
![]() লুইস ক্যারল কর্তৃক গৃহীত মোনিয়ার মোনিয়ার-উইলিয়ামসের আলোকচিত্র | |
জন্ম | মোনিয়ার উইলিয়ামস ১২ নভেম্বর ১৮১৯ |
মৃত্যু | ১১ এপ্রিল ১৮৯৯ কান, ফ্রান্স | (বয়স ৭৯)
শিক্ষা | কিং’স কলেজ স্কুল, ব্যালিওল কলেজ, অক্সফোর্ড; ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কলেজ; ইউনিভার্সিটি কলেজ, অক্সফোর্ড |
পরিচিতির কারণ | বোডেন সংস্কৃত অধ্যাপক; সংস্কৃত–ইংরেজি অভিধান |
পুরস্কার | নাইট ব্যাচেলর; নাইট কম্যান্ডার অফ দি অর্ডার অফ দি ইন্ডিয়ান এম্পায়ার |
স্যার মোনিয়ার মোনিয়ার-উইলিয়ামস কেসিআইই (ইংরেজি: Sir Monier Monier-Williams KCIE; /ˈmɒniər/; পূর্ব পদবি উইলিয়ামস; ১২ নভেম্বর, ১৮১৯ – ১১ এপ্রিল, ১৮৯৯) ছিলেন একজন ব্রিটিশ গবেষক, যিনি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বোডেন সংস্কৃত অধ্যাপক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি সংস্কৃত, ফার্সি ও হিন্দুস্তানি সহ এশীয় ভাষাগুলি অধ্যয়ন, নথিবদ্ধকরণ করেন এবং শিক্ষা দিতেন।
মোনিয়ার উইলিয়ামসের জন্ম বোম্বাইতে। তিনি ছিলেন বোম্বাই প্রেসিডেন্সির সার্ভেয়ার জেনারেল কর্নেল মোনিয়ার উইলিয়ামসের পুত্র। ১৮৮৭ সাল পর্যন্ত তাঁর পদবি ছিল ‘উইলিয়ামস’। তারপর তিনি নিজের নামটিকে হাইফেন দিয়ে পদবির সঙ্গে যুক্ত করে নিজের পদবি রাখেন ‘মোনিয়ার-উইলিয়ামস’। ১৮২২ সালে বিদ্যালয় শিক্ষার জন্য তিনি ইংল্যান্ডে প্রেরিত হন। সেখানে হোভ, চেলসি ও ফিঞ্চলের বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করেন। তিনি শিক্ষালাভ করেছিলেন কিং’স কলেজ স্কুল, ব্যালিওল কলেজ, অক্সফোর্ড (১৮৩৮-৪০), ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কলেজ (১৮৪০-৪১) ও ইউনিভার্সিটি কলেজ, অক্সফোর্ডে (১৮৪১-৪৪)। ১৮৪৪ সালে তিনি লিটারি হিউম্যানিওরেস-এ চতুর্থ-শ্রেণির সাম্মানিক ডিগ্রি অর্জন করেন।[১]
১৮৪৮ সালে তিনি জুলিয়া গ্রান্থামকে বিবাহ করেন। তাঁদের ছয় পুত্র ও এক কন্যা ছিল। ৭৯ বছর বয়সে ফ্রান্সের কান শহরে তাঁর মৃত্যু ঘটে।[২]
মোনিয়ার উইলিয়ামস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কলেজে ১৮৪৪ থেকে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত এশীয় ভাষা শিক্ষা দিয়েছিলেন।[৩][৪] ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের পর যখন ভারতে কোম্পানি শাসন সমাপ্ত হয়, তখন এই কলেজটিও উঠে যায়। ১৮৬০ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বোডেন সংস্কৃত অধ্যাপক পদের নির্বাচনে ম্যাক্স মুলারের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তিনি জাতীয় স্তরে গুরুত্ব অর্জন করেন।
১৮৬০ সালে হোরাস হেম্যান উইলসনের মৃত্যুতে এই পদটি শূন্য হয়েছিল। ১৮৩১ সালে এই পদে নির্বাচিত হওয়ার পর উইলসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত পুথি সংগ্রহের কাজটি শুরু করেন এবং তিনি নিজের উত্তরসূরি হিসেবে উইলিয়ামসের নাম ইঙ্গিত করে যান। নির্বাচনটির প্রচারাভিযান ছিল চূড়ান্তভাবে বাদানুবাদে মণ্ডিত। মুলার তাঁর উদারনৈতিক ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত ছিলেন এবং তাঁর দার্শনিক অনুমানগুলির ভিত্তি ছিল বৈদিক সাহিত্যের অধ্যয়ন। মোনিয়ার উইলিয়ামস ছিলেন তুলনামূলকভাবে কম মেধাসম্পন্ন। কিন্তু ভারত ও আধুনিক হিন্দুধর্মের প্রকৃত ধর্মীয় রীতিনীতিগুলি সম্পর্কে তাঁর বাস্তব জ্ঞান ছিল। অপরপক্ষে মুলার কোনওদিন ভারতে আসেননি।[৫]
উভয় প্রার্থীকেই ভারতীয়দের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিতকরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হয়। কারণ, এই উদ্দেশ্যেই পদটির প্রবর্তক এটি স্থাপনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে অর্থ প্রদান করেছিলেন। ধর্মান্তরিতকরণের প্রতি মুলারের নিষ্ঠা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও উইলিয়ামসের ক্ষেত্রে তা ছিল না।[৬] মোনিয়ার উইলিয়ামস বলেছিলেন যে তাঁর লক্ষ্য অনুমানমূলক অধ্যয়ন নয়, ব্যবহারিক অধ্যয়ন। তিনি লেখেন যে, “ইংরেজরা একটি ভাষাকে অতিমাত্রায় দার্শনিকভাবে অধ্যয়ন করার ব্যাপারে খুব বেশি ব্যবহারিক।”[৫]
অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হওয়ার পর উইলিয়ামস ঘোষণা করেন প্রাচ্যবিদ গবেষকদের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত ভারতবাসীকে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করা।[৬] ১৮৭৭ সালে সোসাইটি ফর প্রোমোটিং খ্রিস্টিয়ান নলেজ কর্তৃক প্রকাশিত তাঁর বই হিন্দুইজম-এ তিনি হিন্দুধর্মের পতনের ভবিষ্যদ্বাণী করেন এবং ইসলামের প্রসার রোধে খ্রিস্টান ইভানজেলিক্যালদের অগ্রসর হতে আহ্বান করেন।[৬] সৌরভ দুবের মতে, এই গ্রন্থটিই ইংরেজি ভাষায় সাধারণভাবে ‘হিন্দুইজম’ অর্থাৎ হিন্দুধর্ম শব্দটিকে পরিচিত করে তোলে।[৭] ডেভিড এন. লোরেনজেন বলেছেন যে এই বইটির সঙ্গে ইন্ডিয়া, অ্যান্ড ইন্ডিয়া মিশন: ইনক্লুডিং স্কেচেস অফ দ্য জায়গান্টিক সিস্টেম অফ হিন্দুইজম, বোথ ইন থিওরি অ্যান্ড প্র্যাকটিস, অলসো নোটিশেস অফ সাম অফ দ্য প্রিন্সিপ্যাল এজেন্সিজ এমপ্লয়েফ ইন কন্ডাক্টিং দ্য প্রসেস অফ ইন্ডিয়ান এভানজেলিজেশন[৮][৯]