মোশোভ্‌চে

মোশোডতসে - স্লোভাকিয়া

মোশোভ্‌চে (স্লোভাক ভাষায়: Mošovce মোশোভ্‌ৎসে) উত্তর স্লোভাকিয়ার ঐতিহাসিক অঞ্চল টুরিকের বড় গ্রামগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

অনেক সংরক্ষিত ঐতিহাসিক ভবন ৭৭০ বছর পুরনো সংস্কৃতির সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। এই শহরের নাম প্রথমবার ব্যবহৃত হয় সম্রাট অ্যান্ত্রু দ্বিতীয়ের দানপত্রে। আসলে মোশোভ্‌চে দুটো ভাগে বিভক্ত ছিল, প্রথম গ্রাম 'মৌখিউখ' ছিল অধুনা স্তারি রাদ এর জায়গায় এবং দ্বিতীয় গ্রামটি ছিল টেরামোইস, যা আজও একই নামে পরিচিত, ভিদরমোখ জুড়ে বিস্তৃত। এই দ্বিতীয় গ্রামের নামের সাহিত্যিক অর্থ হচ্ছে- মৌইশবাবুর সম্পত্তি। শ্লাভিক লোকদের ইতিহাস খুজলে জানা যায় যে মোইশ শব্দটি আসলে শ্লাভিক নাম "মোইটেক" এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যা ভোইটেক বা ময়মির নামের সদৃশ। বিভিন্ন যুগে এই গ্রামের নামের অনেক পরিবর্তন হয়েছে- মোশোভিখ, মোশোতোজ, মোশ্‌শোভেতস, ভিল্লা রেগিয়া মোশোভিখ, ওপ্পিডিয়াম মায়ুশ সিউ মোশোতজ, মোশোতজ ওলিম মায়ুশ- থেকে আজকের দিনের মোশোভতসে।

মোশোভতসের এক পুরাকালীন আলাদা অংশ, প্রাক্তন স্থাপন খোরনুকোড অধুনা চের্নাকোড নামে সংরক্ষিত। প্রথমে মোশোভতসে এক রাজকীয় স্থাপন হিসেবে বিকশিত হতে শুরু করেছিল, চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে এক বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত শহরে পরিণত হয়েছিল, যার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছিল ব্লাটানিতসার রাজকীয় দুর্গ। ১৫২৭ সালে তা রেভাভ পরিবারের হারে পড়ে, যারা মোশোভ্‌চে শহরের বিশেষাধিকার প্রায় ৪০০ বছর ধরে খর্ব করে রেখেছিল।

অতীতে মোশোভ্‌চে তুরিয়েতস এলাকায় হস্তশিল্পের এল গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। সেযুগে হস্তশিল্প এক ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছিল এবং শহরে অন্তত পনেরোটি হস্তশিল্পের সংঘ সক্রিয় ছিল এর মধ্যে বুট-জুতা নির্মাতা পশু লোম দ্বারা নির্মিত বস্ত্রাদির ব্যবসায়ীরা ছিল সবচেয়ে প্রখ্যাত এবং দীর্ঘকালের জন্য। আজকের দিনের মোশোভ্‌চেকে এক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

অনাদিকাল স্হাপত্য - মোশোডতসে

প্রকৃতি

[সম্পাদনা]

মোশোভ্‌চের পরিবেশ সত্যিই অতুলনীয়। মিশ্র ঐইতিহাসিক স্থলভাগের (গাছ-পালার) চিত্র এবং প্রাকৃতিক কুঞ্জবন এক সুন্দর ও আকর্ষণীয় স্থলভাগের চিত্র তৈরি যা ভেল্কা (বিরাট) ফাত্রা পাহাড়ের বনভূমির ছবির প্রসারণ হিসেবে দেখায়। এই পর্বতমালা শ্লোভাকিয়ার অন্যতম আকর্ষণ। বিভিন্ন আকৃতির চুনাপাথর এবং ডোলোমাইট তথা পাশের ব্লাটনিস্কা উপত্যকা ও গাদেরস্কা উপত্যকার সুন্দর প্রকৃতি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের লোকেদের আকর্ষিত করে।

দর্শনীয় স্থান

[সম্পাদনা]

বিখ্যাত স্মৃতিস্তম্ভগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুবিদিত রোকোকো জমিদারের খামার বাড়ি যা অষ্টাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয়র্ধে তৈরী। এই খামার বাড়িতে এক ব্যাপক ইংরেজ আমলের পার্কও রয়েছে। এই শহরে অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলো হচ্ছে - ইয়ান কোলারের জন্মস্থান, নব-পথিক ক্যাথলিক গির্জা যেেখানে পুরাকালীন পূর্বপুরেষের চিহ্নে শ্মিডট (শ্লোভাকিয়ার অপেশাদার দমকলবাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা)-রা অন্যতম। কিন্তু সবচেয়ে প্রখ্যাত লোক যার জন্ম হয়েছিল মোশোভতসেতে তিনি হলেন শ্লাভিক কবি, দার্শনিক তথা লুথেরান ধর্মপ্রচারক ইয়ান কোলার (১৭৯৩-১৮৫২) যিনি নিজের কাব্যিক সংযোজনের অন্ততঃ দুটি দেশের সাহিত্যের উপর বিশাল প্রভাব বিস্তার করেছেন। তার রচনা সমসাময়িককালের দেশপ্রেমিক তথা জাতীয়তাবাদীদের জন্য ভিত এবং আদর্শ বলে গন্য করা হয়। তার রচনা বিভিন্ন শ্লাভিক এবং অন্যান্য ভাষাতেও অনুবাদ করা হয়েছে।

সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য

[সম্পাদনা]

মোশোভ্‌চে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের জন্ম দিয়েছে। এদের মধ্যে ফ্রিকো কাফেন্ডা(১৮৮৩-১৯৬৩; সংযোজক), আন্না লাস্কোভা-জোরা (১৮৯৯-১৯৮৮; লেখক)স্টেফান ক্রেমেরি (১৮৯২-১৯৫৫; সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ ও কবি) ইয়ুর তেশাক মোশোভস্কি (ব্যারোক নাট্যকার), মিলোশ্লাভ স্মিডট (শ্লোভাকিয়াতে অপেশাদার দমকলবাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা)-রা অন্যতম। কিন্তু সবচেয়ে প্রখ্যাত লোক যার জন্ম হয়েছিল মোশোভ্‌চেতে তিনি হলেন শ্লাভিক কবি, দার্শনিক তথা লুথেরান ধর্মপ্রচারক ইয়ান কোলার (১৭৯৩-১৮৫২), যিনি নিজের কাব্যিক সংযোজনের মাধ্যমে অন্ততঃ দুটি দেশের সাহিত্যের উপর বিশাল প্রভাব বিস্তার করেছেন। তার রচনা সমসাময়িককালের দেশপ্রমিক তথা জাতীয়তাবাদীদের জন্য ভিত ও আদর্শ বলে গণ্য করা হয়। তার রচনা বিভিন্ন শ্লাভিক এবং অন্যান্য ভাষাতেও অনুবাদ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

চিত্র

[সম্পাদনা]