মোহিত সেন | |
---|---|
প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮৮ – ২০০৩ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২৪ মার্চ ১৯২৯ কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ৪ মে ২০০৩ হায়দ্রাবাদ ভারত | (বয়স ৭৪)
রাজনৈতিক দল | ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া |
দাম্পত্য সঙ্গী | বনজা আয়েঙ্গার |
মোহিত সেন (২৪ মার্চ ১৯২৯ — ৪ মে ২০০৩) ছিলেন খ্যাতনামা সংগীতজ্ঞ ও বাঙালি সমাজসেবী। ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি।[১]
মোহিত সেন ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এক প্রগতিশীল এবং প্রাশ্চাত্যধারার ব্রাহ্মসমাজভুক্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমরেন্দ্রনাথ সেন এবং মাতা ছিলেন বীরভূম জেলার রায়পুরের জমিদার পরিবারের কন্যা বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী মৃণালিনী। তার পিতামহ ছিলেন বার্মার অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং মাতামহ মেজর এন পি সিনহা ছিলেন ভারতীয় চিকিৎসা সেবায় নিযুক্ত সদস্য এবং তার মায়ের জ্যাঠামশায়লর্ড সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিনহা[২] ছিলেন বিহার ও ওড়িশা রাজ্যের প্রথম ভারতীয় রাজ্যপাল। মোহিত সেনের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের ইতিহাসের ছাত্র প্রতাপচন্দ্র সেন। মোহিত সেনেরও পড়াশোনা প্রেসিডেন্সি কলেজে। এখানে তিনি অধ্যাপক সুশোভন সরকারের ছাত্র ছিলেন। পরে তিনি যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
কেমব্রিজে অবস্থানকালে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে মোহিত সেন আনুষ্ঠানিকভাবে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি কমিউনিস্ট সংগঠনে কাজ করতে শুরু করেছিলেন। [৩] কেমব্রিজে বনজা আয়েঙ্গারের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তাকে বিবাহ করেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের শেষে বনজা একজন বিশিষ্ট গণিতজ্ঞ হন। বিবাহের পর তারা চিনে গমন করেন। ১৯৫০-৫৩ খ্রিস্টাব্দে মোহিত সেন বেজিংয়ে চীনের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিস্ট স্কুলে পড়াশোনা করেন। দেশে ফিরে মোহিত সেন ১৯৫৩-৬২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নতুন দিল্লির সদর দপ্তরে এবং প্রকাশনা বিভাগে কাজ করেন। পরে তিনি সংগঠক ও প্রশিক্ষক হিসাবে অন্ধ্রপ্রদেশে যান।
মোহিত সেন যখন চীন হতে দেশে ফেরেন, তখন দেশ স্বাধীন হয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টির মতে সে স্বাধীনতা ছিল ব্রিটেনের আধা উপনিবেশিক শাসনের নামান্তর মাত্র। মোহিত সেন সাম্রাজ্যবাদীর বিরুদ্ধে লডাইয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে দাঁড়ালেন। ষাটের দশকে পার্টি দ্বিধা বিভক্ত হলে তিনি এস এ ডাঙ্গের নেতৃত্বাধীন সি পি আই-তে থেকে যান। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি দলের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কর্মসমিতিতে নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে এস এ ডাঙ্গের কন্যা রোজা দেশপাণ্ডে অল ইন্ডিয়া কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়। মোহিত সেন ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্খার সমালোচনা করলেও তিনি দেশ গঠনে কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসের সহযোগিতার প্রয়োজনের উপর যোগ দিতেন। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে অল ইন্ডিয়া কমিউনিস্ট পার্টি মিশে যায় ওই বছরেই মোহিত সেনের নেতৃত্বে গঠিত নতুন দল ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টি (ইউ সি পি আই)-এর সঙ্গে। মোহিত সেন এই দলের সাধারণ সম্পাদক হন এবং আমৃত্যু দীর্ঘ ১৫ বৎসর আসীন থাকেন। তার স্ত্রী পদ্মশ্রী সম্মাননায় ভূষিতা গণিতজ্ঞ বনজা আয়েঙ্গার ছিলেন শ্রীপদ্মাবতী মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা-উপাচার্য।[৪] শেষ জীবনে তারা হায়দ্রাবাদে থাকতেন। মোহিত সেন ৭৪ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন। তাদের কোন সন্তান-সন্ততি ছিল না।[৫]
মোহিত সেন ছিলেন শক্তিমান লেখক। তিনি বলিষ্ঠ কলমে অনেকগুলি গ্রন্থ রচনা করেন।:
বইটি মোহিত সেনের আত্মজীবনীমূলক রচনা। তার মৃত্যুর কয়েক মাস আগে ২০০৩ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়। একজন স্বাধীন বামপন্থী চিন্তাবিদ হিসাবে বিধৃত করেছেন নিজস্ব মতামত। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ এরিক হবসবাম বইটি সম্পর্কে সপ্রশংস আলোচনায় বলেছেন -