ম্যাঙ্গালোর দশেরা

দশেরার সময় শ্রী গোকর্ণনাথেশ্বর মন্দিরে প্রাথমিক দেবতা শারদার পূজা হত
দশেরা চলাকালীন কেএস রাও রোড
গঙ্গাবথারন, কুদ্রোলি

ম্যাঙ্গালোর দশেরা (তুলু: মার্নেমি, কোঙ্কনি: মান্নামি) ভারতীয় শহর ম্যাঙ্গালোরে আচার্য মঠ কর্তৃক আয়োজিত একটি উৎসব, যার সূচনা করেছিলেন বিআর কারকেরা।[] এটিকে নবরাত্রি উৎসব, বিজয়াদশমী নামেও অভিহিত করা হয়। এর প্রধান আকর্ষণ হলো বাঘের নৃত্য, সিংহের নৃত্য এবং ভালুকের নৃত্য। এই উপলক্ষে ১০ দিন ধরে শহরটি আলোকসজ্জায় সজ্জিত থাকে।

মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান, হোটেল ইত্যাদি সাজিয়ে তোলে। শোভাযাত্রার জন্য ম্যাঙ্গালোরের বেশিরভাগ রাস্তা যেমন এমজি রোড, কেএস রাও রোড, কারস্ট্রিট, জিএইচএস রোড আলো এবং বৈদ্যুতিক লণ্ঠন দিয়ে সজ্জিত করা হয়। রঙিন এবং উজ্জ্বল আলো দিয়ে সজ্জিত ম্যাঙ্গালোর সিটি কর্পোরেশন ভবনের চিত্রটি একটি আকর্ষক দৃশ্য় তৈরি করে।

২০১২ সালে নবরাত্রি উৎসবের সময় শতবর্ষ উদযাপন ছিল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। গোকর্ণনাথেশ্বর মন্দিরে পালিত দুটি বড় উৎসব হল নবরাত্রি এবং শিবরাত্রি। ম্যাঙ্গালোরে দশেরা শুরু করেছিলেন বিআর কারকেরা।

পিলিনালাইক

[সম্পাদনা]

রয়েল পিলিনালাইক (তুলু: পিলি ইয়েসা, কন্নড় :হুলিভেশা) হল দশেরার সময় পরিবেশিত একটি লোকনৃত্য। দলে সাধারণত পাঁচ থেকে দশ জনের তরুণ পুরুষ থাকে। তাদের বাঘের মতো রঙ করে পোশাক পরানো হয় এবং দুই বা তিনজন ঢোলবাদক নিয়ে একটি ব্যান্ড তৈরি করা হয়। তুলুতে এই ব্যান্ডকে থাসে বলা হয়। এই দলটির সাথে দলের ব্যবস্থাপক থাকে। এই সৈন্যরা তাদের ব্যান্ডের ঢোলের তালে তাদের শহরের রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। তারা বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা রাস্তার ধারে প্রায় দশ মিনিট ধরে নৃত্য পরিবেশন করে এবং তারপর দর্শকদের কাছ থেকে কিছু অর্থ সংগ্রহ করে। দেবী শারদার সম্মানে পিলিনালাইক পরিবেশিত হয়, যার প্রিয় প্রাণী বাঘ।

নবরাত্রির সময় গোকর্ণনাথেশ্বর মন্দির

গোকর্ণনাথেশ্বর মন্দিরে দশরা মূর্তি

[সম্পাদনা]

নবরাত্রির সময় স্বর্ণ কলামন্তপে পুরোহিতরা শারদা দেবীর সাথে বিভিন্ন মূর্তি স্থাপন করেন। যেখানে স্তোত্র মন্ত্রোচ্চারণ এবং বৈদিক আচার- অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পূজা করা হয়। এই নয় দিনের উৎসবে মহাগণপতি এবং নবদুর্গের সাথে শারদা দেবীর সজ্জিত মূর্তিগুলির পূজা করা হয়।

কুদ্রোলি মন্দির ট্রাস্ট নবরাত্রির ৯ দিন ধরে 'গঙ্গাবতরণ' (শিবের মুকুট থেকে গঙ্গার জল প্রবাহিত হয়) চালু রাখে। চিত্রকর্মটিতে ১৩ ফুট উঁচু শিবের ৪টি রঙিন মূর্তি রয়েছে এবং ১০০ ফুট উচ্চতায় আকাশের দিকে ছুটে আসা একটি জলপ্রবাহ রয়েছে। চার দিক থেকে জল যখন তাদের শীর্ষে পৌঁছায় তখন তারা একটি শিবলিঙ্গের আকার ধারণ করে।

শোভাযাত্রা

[সম্পাদনা]
চন্দ্রঘণ্টার মূর্তি, শোভাযাত্রার সময় টেবিলে দেবী পার্বতীর নয়টি রূপের একটি।

বিজয়া দশমীর সন্ধ্যায় কুদ্রোলি শ্রী গোকর্ণনাথেশ্বর মন্দির থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয় এবং পরের দিন ভোরে মন্দির প্রাঙ্গণের ভিতরে পুষ্করিণী পুকুরে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে একই স্থানে শেষ হয়।[] শোভাযাত্রায় নবদুর্গা-র মূর্তি, মহাগণপতি ও শারদা-র মূর্তি বহন করা হয়। সঙ্গে থাকে ফুল, আলংকারিক ছাতা, ট্যাবলো, ব্যান্ড, চেন্ডে এবং ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, লোকনৃত্য, যক্ষগানের চরিত্ররা, দোল্লু কুনিথা, গোম্বে (পুতুল), পিলিনালিকে (হুলি ভেশা) এবং অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা সহ মিছিল। শোভাযাত্রাটি কুদ্রোলি, মান্নাগুদ্দা, লেডিহিল, লালবাগ, কেএস রাও রোড, হাম্পানকট্ট, কার স্ট্রিট এবং আলাকে সহ শহরের প্রধান সড়কগুলির মধ্য দিয়ে যায়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Mangalorean। "Mangalore Dasara 2016 |Kudroli Dussehra Navarathri |Namma Kudla | Tiger dance | Bear Dance | Sharada Utsava Procession"mangaloredasara.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১০-০২ 
  2. "Mangaluru Dasara concludes with spectacular procession"www.daijiworld.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-১৬ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]