যশোধরা (সংস্কৃত: यशोधरा) বা সুভদ্দকচ্ছানা (পালি: सुभद्दकच्छाना) বা বিম্বা (সংস্কৃত: बिम्बा) সিদ্ধার্থ গৌতমের পত্নী ছিলেন।
যশোধরা কোলীয় গণের[১] প্রধান সুপ্পবুদ্ধ[২][৩] এবং তার পত্নী ও শাক্য গণের প্রধান শুদ্ধোধনের ভগিনী অমিতার কন্যা ছিলেন। যশোধরা ও সিদ্ধার্থ গৌতম একই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ষোল বছর বয়সে যশোধরার সঙ্গে সিদ্ধার্থ গৌতমের বিবাহ সম্পন্ন হয়। উনত্রিশ বছর বয়সে যেদিন তাঁদের রাহুল নামে এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়, সেইদিন সিদ্ধার্থ গৌতম পরম সত্যের সন্ধানে সংসার ত্যাগ করে প্রবজ্যা গ্রহণ করেন। সিদ্ধার্থ গৌতমের কঠিন কঠোর সন্ন্যাস জীবনের বিস্তারিত জানতে পেয়ে যশোধরাও স্বামীর ন্যায় রাজবস্ত্র ও অলঙ্কার ত্যাগ করে সাধারণ হলুদ কাপড় পরতে ও সারাদিনে একবেলা আহার করতে শুরু করেন।[৪] কথিত আছে,সে সময় অনেক রাজকুমার তাঁর পাণিগ্রহণ এর প্রস্তাব নিয়ে এলেও তিনি তাঁদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
বুদ্ধত্ব লাভের পর শুদ্ধোধনের অনুরোধে গৌতম বুদ্ধ কপিলাবস্তু যান। দ্বিতীয় দিনে অন্যান্য ভিক্ষুদের সঙ্গে বুদ্ধ শহরে ভিক্ষা করতে বেরোলে যশোধরা সেই সংবাদের সত্যতা বিচারের উদ্দেশ্যে প্রাসাদের জানালা দিয়ে তাকে দেখতে পান। বুদ্ধের ব্যক্তিত্বের গরিমায় মুগ্ধ যশোধরা প্রশংসাসূচক আটটি শ্লোক রচনা করেন, যা নরসীহগাথা নামে পরিচিত। সেই দিন প্রাসাদের সকল নারী বুদ্ধের দর্শনের জন্য এলেও যশোধরা তার নিকটে যেতে অস্বীকৃত হন। তিনি সংবাদ দেন যে, যশোধরার মধ্যে কোন গুণ অবশিষ্ট থাকলে স্বয়ং গৌতম বুদ্ধ তার নিকটে আসবেন। বুদ্ধ তার অনুরোধ রক্ষা করে তার নিকট যান এবং তার ধৈর্য ও আত্মত্যাগের প্রশংসা করেন। কপিলাবস্তু শহরে বুদ্ধের সপ্তম দিন, যশোধরা তার পুত্র রাহুলকে পিতা গৌতম বুদ্ধের নিকট পাঠান এবং পিতার নিকট উত্তরাধিকার চেয়ে নিতে বলেন। রাহুল ভিক্ষু জীবন গ্রহণ করেন এবং গৌতম বুদ্ধের অনুরোধে সারিপুত্ত তাকে উপসম্পদা প্রদান করেন। পরবর্তীকালে গৌতম বুদ্ধ নারীদের সংঘে প্রবেশের অনুমতি দিলে যশোধরা ভিক্ষুণী হিসেবে সংঘে যোগদান করেন ও পরে অর্হৎ প্রাপ্ত হন।[৫]