যুক্তি তক্কো আর গপ্পো | |
---|---|
পরিচালক | ঋত্বিক ঘটক |
প্রযোজক | রিতা প্রোডাকসন্স, ঋত্বিক ঘটক |
রচয়িতা | ঋত্বিক ঘটক |
সুরকার | ওস্তাদ বাহাদুর খান |
চিত্রগ্রাহক | বেবী ইসলাম |
সম্পাদক | অমলেশ শিকদার |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১২০ মিনিট [১] |
দেশ | ভারত |
ভাষা | বাংলা |
যুক্তি তক্কো আর গপ্পো ঋত্বিক ঘটক এর পরিচালিত একটি চলচ্চিত্র।[২] এই ছবিটির কাজ শুরু হয় ১৯৭৪ সালে এবং শেষ হবার পরে ছবিটি মুক্তিপ্রাপ্ত হয় ১৯৭৭ সালে। এই ছবিটি-ই ঋত্বিক ঘটক–এর শেষ ছবি। এই ছবিটিকে অনেকে ঘটক এর আত্মজীবনীমূলক ছবি বলে বিবেচনা করেন।
শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবী অথচ মাতাল নীলকণ্ঠকে মাঝ বয়সে স্ত্রী'র সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদে যেতে হয়। স্ত্রী, সন্তান আর কলকাতার গলিপথ ছেড়ে সে বেরিয়ে পড়ে। তার সঙ্গী হয় পাড়ার তরুণ নচিকেতা। দুজনের যাত্রা শুরু হয় অজানার উদ্দেশ্যে। পথে পরিচয় হয় বঙ্গবালা'র সঙ্গে। ১৯৭১-এর ৩০ মার্চ বাংলাদেশে পাকিস্তানি মিলিটারির বর্বরতার শিকার সে। তার সঙ্গে আছে টোলের পণ্ডিত। কলকাতায় তারা এসেছেন জীবন ও জীবিকার আশায়। এই চারজন এক সাথে পথ চলা শুরু করে। এক সময় তারা এসে পৌঁছায় পুরুলিয়ায়। ছৌ নাচের শিল্পীদের সঙ্গে সেখানে ভূমি দখলদারদের লড়াই চলছে। লড়াইয়ের এক পর্যায়ে গুলিতে নিহত হয় পণ্ডিত। এরপর তারা তিনজন যায় বীরভূমে, সেখানে তার স্ত্রীকে সে অনুরোধ করে, কাল সকালে ছেলেকে একটু দেখতে দেয়ার জন্য শালবনে পাঠাতে। বনের ভেতরে নীলকণ্ঠ মুখোমুখি হয় বিদ্রোহী নকশালদের। সশস্ত্র নকশালদের সঙ্গে পুলিশের বন্দুক যুদ্ধ হয়। গোলাগুলি শেষ হয়। এ সময় নীলকণ্ঠের ছেলে এসে পিতাকে ডাকে। তার ডাক শুনে পুলিশ আবার গুলি করে। নীলকণ্ঠ মারা যায়।
ঋত্বিক ঘটকের সবচেয়ে আলোচিত ছবি এটি। একই সঙ্গে এটি ভীষণভাবে রাজনৈতিক সচেতন ও আত্মজৈবনিক ছবি। এক জাগ্রত বিপ্লবীর মতোই এই ছবিতে ঋত্বিক নিজেকে এবং নিজের মতবাদ ও আদর্শকে বিশ্লেষণ করেছেন, কোথাও বা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রে এমন সাহসী ছবি খুব কমই আছে। জীবনের এই শেষ ছবিতে তিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। জ্যাঁ কঁকতোর টেস্টামেন্ট অব অর্ফিয়ুস কিংবা নিকোলাস রে ও উইম ওয়েন্ডারের বিখ্যাত তথ্যচিত্র লাইটনিং ওভার ওয়াটার - এর সঙ্গেই এক কাতারে সামিল করা যায় এ ছবিকে। সে সময়ের বিচারে ক্যামেরার কাজ ও কারিগরি দিক থেকেও এ ছবি অনেকটা অগ্রগামী ছিলো।