যুহাবের সন্ধি

যুহাবের সন্ধি
১৬৩৯
জুহাবের ১৬৩৯ সালের শান্তি চুক্তি সাফাভীয় সাম্রাজ্য এবং উসমানীয় সাম্রাজ্য এর মধ্যে তৈরি হয়েছিল।

যুহাবের সন্ধি (ফার্সি: عهدنامه زهاب, আহাদনামায়ে যুহাব) ১৬৩৯ সালের ১৭ মে সাফাভীয় সাম্রাজ্য এবং উসমানীয় সাম্রাজ্যের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি ছিল। এটি কাসরে শিরিনের সন্ধি (তুর্কি: Kasr-ı Şirin Antlaşması) নামেও পরিচিত। চুক্তিটি ১৬২৩-১৬৩৯ সালের উসমানীয়-সাফাভীয় যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটায় এবং আঞ্চলিক বিরোধ নিয়ে দুই রাজ্যের মধ্যে প্রায় ১৫০ বছরের বিরতিহীন যুদ্ধের মধ্যে এটিই শেষ সংঘর্ষ। এটি মোটামুটিভাবে ১৫৫৫ সালের অমাসিয়ার পূর্ববর্তী শান্তির নিশ্চিতকরণ হিসাবে দেখা যেতে পারে।[][]

চুক্তিটি পশ্চিম এশিয়ার পূর্বে সাফাভীয়ের দখলে থাকা অঞ্চলগুলির বিভাজন নিশ্চিত করে। যেমন দুটি শক্তির মধ্যে ককেশাসের স্থায়ী বিভাজন; যেখানে পূর্ব আর্মেনিয়া, পূর্ব জর্জিয়া, দাগেস্তান এবং শিরভান সাফাভীয় সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে ছিল আর পশ্চিম জর্জিয়া এবং বেশিরভাগ পশ্চিম আর্মেনিয়া সম্পূর্ণরূপে উসমানীয় শাসনের অধীনে আসে। এই চুক্তির ফলে সমস্ত মেসোপটেমিয়া (বাগদাদসহ) অপরিবর্তনীয়ভাবে উসমানীয়দের হাতে তুলে দেওয়া হয়।[] সেইসাথে সাফাভীয়-নিয়ন্ত্রিত পূর্ব সামসখেকে (মেসখেতি) সম্পূর্ণরূপে উসমানীয়দের অধিকারে পরিণত করা হয়েছিল।[][] যুহাবের চুক্তির মাধ্যমে পূর্ব আর্মেনিয়া আট দশকেরও বেশি সময় ধরে সাফাভীয় শাসনের অধীনে ছিল। তারা এটিকে দুটি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত করেছিল: এরিভান প্রদেশ এবং কারাবাখ প্রদেশ।[]

তা সত্ত্বেও পারস্য ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ শেষ হয়নি। ১৫৫৫ থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে, পারস্য এবং উসমানীয়রা ১৮টি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল যা তাদের বিতর্কিত সীমানাগুলিকে পুনরায় নির্ধারণ করত। এই চুক্তি অনুসারে সঠিক সীমানা স্থায়ীভাবে ১৯ শতকের মধ্যে শুরু হয়, যা মূলত আধুনিক ইরান এবং তুরস্কইরাক রাজ্যগুলির মধ্যে সীমান্তের জন্য মোটামুটি রূপরেখা তৈরি করে। যেটি ১৯১৮ সাল পর্যন্ত উসমানীয়-পারস্য সীমান্ত ছিল, যখন উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তাদের পরাজয়ের পর মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অঞ্চল হারিয়েছিল। তা সত্ত্বেও অধ্যাপক আর্নেস্ট টাকারের মতে, চুক্তিটিকে উভয়ের মধ্যে স্বাভাবিককরণের একটি প্রক্রিয়ার "চূড়ান্ত" হিসাবে দেখা যেতে পারে যা আমাসিয়া শান্তির সাথে শুরু হয়েছিল।[] অন্য যেকোনো উসমানীয়-সাফাভীয় চুক্তির বিপরীতে, যুহাব আরও "স্থিতিস্থাপক" হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিল এবং দুই প্রতিবেশীর মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে প্রায় সমস্ত চুক্তির জন্য "প্রস্থানের কেন্দ্র" হয়ে ওঠে।[]

এছাড়াও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Redgate, A. E. (২০০০)। The Armenians। Blackwell। আইএসবিএন 978-0-631-22037-4 
  2. Meri, Josef W.; Bacharach, Jere L. (২০০৬)। Medieval Islamic Civilization: L-Z, index। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 581। আইএসবিএন 978-0415966924 
  3. Matthee 2012, পৃ. 182।
  4. Floor 2001, পৃ. 85।
  5. Floor 2008, পৃ. 140।
  6. Hovannisian, R. G. (১৯৯৭)। Armenian People from Ancient to Modern Times। Palgrave। পৃষ্ঠা 81-82। আইএসবিএন 1-4039-6422-X 
  7. Floor ও Herzig 2015, পৃ. 86।
  8. Floor ও Herzig 2015, পৃ. 81।

গ্রন্থপঞ্জী

[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]