যোগকার্তা (ইংরেজি: /ˌjoʊɡjəˈkɑːrtə/;[১] জাভানীয়: ꦔꦪꦺꦴꦒꦾꦏꦂꦠ Ngayogyakarta [ŋɑːˈjɔɡjɔˈkɑːrtɔ]; Petjo: Jogjakarta) হলো ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের দক্ষিণ-মধ্য অংশে অবস্থিত যোগকার্তা বিশেষ অঞ্চলের রাজধানী। একমাত্র ইন্দোনেশিয়ান রাজকীয় শহর হিসাবে এখনও রাজতন্ত্র দ্বারা শাসিত যোগকার্তাকে শাস্ত্রীয় জাভানিজ চারুকলা এবং সংস্কৃতি যেমন ব্যালে, বাটিক টেক্সটাইল, নাটক, সাহিত্য, সঙ্গীত, কবিতা, সিলভারমিথিং, ভিজ্যুয়াল আর্ট এবং ওয়ায়াং পুতুলশিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[২] ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষার কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত যোগকার্তা হল একটি বৃহৎ ছাত্র জনসংখ্যা এবং কয়েক ডজন স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিপূর্ণ একটি শহর, যার মধ্যে রয়েছে দেশের বৃহত্তম এবং অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গাদজাহ মাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানও।[৩][৪][৫]
মজপহিত্ যুগে আধুনিক যোগকার্তার আশেপাশের এলাকাটিকে "মাতরম" হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এবং জাভার বারোটি মজপহিত প্রদেশের একটি হিসাবে স্বীকৃত এই এলাকাটি ভ্রে মাতরম নামে পরিচিত একজন সামন্ত দ্বারা শাসিত হতো। মাজাপাহিত সাম্রাজ্যের চতুর্থ রাজা রাজসা রাজবংশের হিন্দু রাজা হায়াম উরুকের (১৩৫০-১৩৮৯) রাজত্বকালে রাজার ভাগ্নে এবং জামাতা বিক্রমবর্ধন, যিনি পরে পঞ্চম রাজা হন, ভ্রে মাতরম উপাধি ছিল।[৬]
এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী জাভা জাতিগোষ্ঠীর। যোগকার্তায় যেহেতু অসংখ্য বিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান রয়েছে এবং ইন্দোনেশিয়ার অন্যান্য মহানগরীর তুলনায় এখানকার জীবনযাত্রার ব্যয় কম, ফলে এটি সারাদেশের শিক্ষার্থীদের নিকট আকর্ষণীয় এলাকা ও এখানে প্রচুর শিক্ষার্থীর আবাস হওয়ায় এখানে সারাদেশ হতে আগত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অধিবাসীদের বসবাস লক্ষনীয়।
নগরে বেশ কিছু বিদেশী অভিবাসীদের বসবাস এলাকা রয়েছে যেখানে মূলতঃ পর্যটক এবং শিক্ষার্থীরা অবস্থান করে।
২০১৪ সালের হিসাব অনুসারে, যোগকার্তায় ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তিত ইসলাম (৮২.৩২%), ক্যাথলিক (১০.৬৬%), প্রোটেস্টেন্ট (৬.৫৪%), বৌদ্ধ (০.৩৪%), হিন্দু (০.১৩%) এবং কনফুসীয় (০.০১%) ধর্মানুসারী বসবাস করে।
ঐতিহ্যগতভাবে যোগকার্তায় বিভিন্ন ধর্মের অধিবাসীরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের কারণে প্রসিদ্ধ ছিলো; কিন্তু অতি নিকটবর্তী সময়ে ধর্মীয় অসহনশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০১৭ সালে যোগকার্তার আঞ্চলিক স্থুল দেশজ উৎপাদনের পরিমাণ ছিলো ৩১.৩১ ট্রিলিয়ন ইন্দোনেশিয়ান রূপিয়া।[৭] পাইকারী ক্রয়বিক্রয়, গাড়ী ও মোটরসাইকেল সারাই, আবাান ও ভোজন, তথ্য ও প্রযুক্তি পরিসেবা, সরকারি পরিসেবা প্রভৃতির সমন্বয়ে গঠিত তৃতীয় ধাপের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যোগকার্তা ঐতিহাসিক ভবন, ভূচিহ্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ স্মারকের আবাসস্থল। কারাটোন সংস্কৃতি এবং বরোবুদুর ও প্রামবানা মন্দিরের অবস্ণানের কারণে যোগকার্তা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
ফুটপাথময় মালিয়োবোরো সড়ক নগরের জনপ্রিয় কেনাকাটার স্থান।[৮] যোগকার্তা কেরাটোন রাজপ্রাসাদ এবং জাভানিজ সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। টোগু স্মারক ভবন যোগকার্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূচিহ্ন। ১ মার্চ ১৯৪৯ সালে সংগঠিত ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় বিদ্রোহের স্মরণে জালান মালিয়োবোরোতে নির্মিত হয়েছে ১ মার্চ স্মারক ভবন।