যোগেন্দ্র যাদব | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় (বি.এ.) জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (এম.এ.) পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় (এম.ফিল.) |
পেশা | আন্দোলনকর্মী, রাজনীতিবিদ |
রাজনৈতিক দল | স্বরাজ অভিযান (২০১৫-বর্তমান) আম আদমি পার্টি (২০১২-২০১৫) |
দাম্পত্য সঙ্গী | মাধুলিকা ব্যানার্জি |
যোগেন্দ্র যাদব (জন্ম ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৩) একজন ভারতীয় আন্দোলনকর্মী এবং রাজনীতিবিদ। তার প্রধান আগ্রহ হলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞান। ২০০৪ সাল থেকে তিনি দিল্লির সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ ডেভলপিং সোসাইটিস (সিএসডিএস) এর একজন সিনিয়র ফেলো।[১] তিনি ২০১০ সালে ভারত সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় দ্বারা গঠিত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং শিক্ষার অধিকার (রাইট টু এডুকেশন) আইন সংক্রান্ত জাতীয় উপদেষ্টা কাউন্সিলের (এনএসি-আরটিই) প্রাক্তন সদস্য।[২] ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি আম আদমি পার্টির জাতীয় নির্বাহী সদস্য ছিলেন। তিনি ২০২০-২০২১ সালের ভারতীয় কৃষক আন্দোলনের অন্যতম নেতা।[৩] যাদব স্বরাজ অভিযান এবং জয় কিসান আন্দোলনের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[৪] তিনি স্বরাজ ভারতের প্রথম এবং বর্তমান জাতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবেও কর্মরত।[৫]
যোগেন্দ্র যাদবের পিতা অর্থনীতি বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ছিলেন এবং তাঁর পিতামহ ছিলেন একজন শিক্ষক । তার স্ত্রী মধুলিকা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহযোগী অধ্যাপক। তার জন্মগত নাম ছিল সেলিম, যা সাধারণত ইসলাম ধর্মের লোকদের নাম বলেই প্রচলিত। বিদ্যালয়ে অন্যান্য শিশুদের কাছে উপহাসের পাত্রে পরিণত হওয়ায় পাঁচ বছর বয়সে তার নাম পরিবর্তন করে যোগেন্দ্র রাখা হয়। যাদব বলেন যে, পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের মধ্যে তার আসল নামের অব্যাহত ব্যবহার, ১৯৩৬ সালের একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় তার পিতামহ হত্যার একরকম পারিবারিক প্রতিক্রিয়াকে প্রতিফলিত করে। এমন কথা বলে তিনি মুসলিমদের ভোট পাবার চেষ্টা করছেন- এই অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।[৬][৭][৮]
সিএসডিএস এ যোগদানের আগে, তিনি চণ্ডীগড়ের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন (১৯৮৫-১৯৯৩)। ১৯৯৫ থেকে ২০০২ এর মধ্যবর্তী সময়ে যাদব লোকনীতি নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা ও আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে তিনি তুলনামূলক গণতন্ত্রের উপর সিএসডিএস লোকনীতি গবেষণা কর্মসূচীর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ছিলেন।১৯৯৬ সাল থেকে, তিনি ভারতের বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছেন।[১] এছাড়া ২০০৯ সালের নির্বাচনে রাহুল গান্ধীকেও উপদেশ প্রদান করেছেন।[৯]
২০১১ সালে, দেশব্যাপী দুর্নীতি বিরোধী বিক্ষোভের সময় যাদব এর সমর্থন করেন ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বক্তৃতা প্রদান করেন। পরবর্তীতে, দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনকর্মীদের দ্বারা গঠিত আম আদমি পার্টিতে যোগ দেন।[১০][১১] যাদব দলের জাতীয় নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১২] আম আদমি পার্টির সাথে তার সম্পৃক্ততা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য হিসেবে তার নিয়োগের (২০১১ সালের জুলাইয়ে) সঙ্গে স্বার্থের সংঘাত হিসাবে বিবেচিত হয়, ফলস্বরূপ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় তাকে ওই পদ থেকে বহিষ্কার করে।[১৩] কিন্তু যাদব এর বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়েছিলেন।[১৪]
যাদব আম আদমি পার্টির প্রার্থী হিসেবে গুরগাঁও আসন থেকে ২০১৪ সালের ভারতীয় সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।[১৫] এতে তিনি চতুর্থ স্থান অর্জন করেন ও তার নির্বাচনী আমানত হারান।[১৬]
২০১৫ সালের ৪ মার্চ, আম আদমি পার্টির রাজনীতি বিষয়ক কমিটি থেকে যাদবকে ভোটের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়।[১৭] পরবর্তীতে ২৮ মার্চ "দলবিরোধী কার্যকলাপ" এ জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে দলের জাতীয় নির্বাহী পরিষদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।[১৮] এপ্রিল মাসে তাকে আম আদমি পার্টি থেকেই বহিষ্কার করা হয়।[১৯] যাদব দল বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন যে দলের প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের "স্বৈরাচারী পন্থা" এর বিরোধিতা করার জন্য তার সাথে এরূপ করা হয়েছে।[২০]
প্রশান্ত ভূষণ, আনন্দ কুমার (সমাজবিজ্ঞানী) এবং অজিত ঝা এর সঙ্গে, যাদব স্বরাজ অভিযান নামে একটি নতুন রাজনৈতিক সংগঠন তৈরী করেন।[২১][২২] তিনি ২০১৯ সালের ভারতীয় সাধারণ নির্বাচনে দিল্লির ভোটারদের 'নান অফ দি অ্যাবোভ' বা নোটা বেছে নেওয়ার আহ্বান জানান কারণ তার মতে দিল্লির কোন রাজনৈতিক দলই তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি।[২৩][২৪] তিনি নোটাকে "নো টিল অ্যান অলটারনেটিভ" বলে অভিহিত করেন।[২৫]
২০০৮ সালে, যাদব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এর জন্য ম্যালকম আদিসেশিয়া পুরস্কার পান।[২৬] ২০০৯ সালে উন্নয়নশীল বিশ্বের রাজনীতিতে তার অসামান্য কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ইন্টারন্যাশনাল পলিটিকাল সাইন্স এসোসিয়েশন কর্তৃক গ্লোবাল সাউথ সলিডারিটি পুরস্কার লাভ করেন।[২৭]