যৌন অভিমুখিতা |
---|
![]() |
যৌন অভিমুখিতাসমূহ |
যৌনদ্বৈততা-বিহীন বিষয়শ্রেণী |
গবেষণা |
অ-মানব প্রাণী |
যৌন অভিমুখিতার স্কেলগুলো মূলত বিভিন্ন যৌন অভিমুখিতার শ্রেণিবিন্যাসের স্কিম। যৌন অভিমুখিতার সংজ্ঞায় সাধারণত দুটি উপাদান অন্তর্ভুক্ত থাকে: "মনস্তাত্ত্বিক" এবং "আচরণগত" উপাদান, তবে দুটি উপাদানগুলির সংজ্ঞা গবেষক এবং সময়ের সাথে পৃথক হয়। এই সমস্যাগুলি গবেষকরা যৌন অভিযোজনকে পরিমাপ ও বর্ণনা করার জন্য স্কেলগুলি সংজ্ঞায়িত করতে প্ররোচিত করে। বেশিরভাগ যৌন আচরণ এবং যৌন অভিমুখিতার স্কেল যৌন দৃষ্টিভঙ্গি একটি ধারাবাহিকতা এই দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়। কিন্সে স্কেল একটি ধারাবাহিক দৃষ্টিকোণ থেকে কাজ করে এবং এটি সর্বাধিক প্রচলিত যৌন ওরিয়েন্টেশন স্কেল।
যৌন অভিমুখিতা |
---|
![]() |
যৌন অভিমুখিতাসমূহ |
যৌনদ্বৈততা-বিহীন বিষয়শ্রেণী |
গবেষণা |
অ-মানব প্রাণী |
কিনসে স্কেলকে; বিষমকামী-সমকামী নির্ধারণী স্কেলও বলা হয়।[১] একজন মানুষের অভিজ্ঞতা অথবা প্রতিক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে যৌন অভিমুখিতা ব্যাখ্যা সংক্রান্ত গবেষণায় এটি ব্যবহৃত হয়। এই স্কেলে ০ থেকে ৬ পর্যন্ত দাগ বা ছক কাটা হয়। ০ মানে হলো, সে সম্পুর্ণভাবে বিষমকামী, আর ৬ মানে হলো, সে সম্পুর্ণভাবে সমকামী। পরবর্তীতে "এক্স" নামক আরেকটি দাগ যুক্ত করা হয়; যার মানে হলো "কোনো যৌন সম্পর্ক থাকবে না"। ১৯৪৮ সালে আলফ্রেড কিনসে, ওয়ার্ডেল পমেরয় এই প্রতিবেদন সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার ইন দ্য হিউম্যান মেল শিরোনামে প্রথম বই হিসেবে প্রকাশ করেন এবং ১৯৫৩ সালে পরিপূরক ভাবে আরেকটি বই সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার ইন দ্য হিউম্যান ফিমেল শিরোনামে প্রকাশ করেন।[১]
কিনসে স্কেলের মাত্রা শুরু হয় ০ থেকে; যেখানে শুন্য দিয়ে বুঝানো হয়, একজন ব্যক্তি যে সম্পুর্ণভাবে বিষমকামী; তার কোনোভাবেই সমলিঙ্গের মানুষের প্রতি যৌন চাহিদা বা তার সাথে যৌন অভিজ্ঞতা নেই। আর এ দাগাঙ্কিত ছক প্রায় সমাপ্ত হয় ৬ এ গিয়ে। এখানে ছয় মানে হলো, একেবারে বিপরীত; অর্থাৎ একজন ব্যক্তি যে সম্পুর্ণভাবে সমকামী তার বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি কোনো যৌন চাহিদা ও কোনো যৌন সক্রিয়তা (activity) নেই। ১ থেকে ৫ এর যে ছক, সেখানে যৌন চাহিদাকে নানাভাবে সুচিত করা হয়েছে। কারো সমলিঙ্গের প্রতি হয়তো দৈবাৎ আকর্ষণ তৈরী হয় বা কারো প্রায়ই হয় এর ভিত্তিকে এই ছককে অঙ্কন করা হয়েছে।[২]
মাত্রা | বর্ণনা |
---|---|
০ | সম্পুর্ণভাবে বিষমকামী |
১ | মুখ্যত বিষমকামী, কদাচিৎ সমকামী |
২ | মুখ্যত বিষমকামী, প্রায়শই সমকামী |
৩ | সমানভাবে সমকামী ও বিষমকামী (উভকামিতাকে বুঝানো হচ্ছে) |
৪ | মুখ্যত সমকামী, প্রায়শই বিষমকামী |
৫ | মুখ্যত সমকামী, কদাচিৎ সমকামী |
৬ | সম্পুর্ণভাবে সমকামী |
X | যৌনতার সাথে কোনো সংযোগ বা আকর্ষণ নেই (নিষ্কামিতা) |
কিনসে বুঝতে পেরেছিলেন, তার ছকের সাতটি বিভাগ ব্যক্তির যৌনতাকে সম্পুর্ণভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম নাও হতে পারে। তিনি লিখেছেন"it should be recognized that the reality includes individuals of every intermediate type, lying in a continuum between the two extremes and between each and every category on the scale."[৩] যদিও সমাজবিজ্ঞানী মার্টিন এস. ওয়েনবার্গ এবং কলিন জে. উইলিয়ামস লিখেছেন, যেসব ব্যক্তির শ্রেণী ১ থেকে ৫ এর মধ্যে তাদের উভকামী বলা হয়।[৪] Kinsey disliked the use of the term bisexual to describe individuals who engage in sexual activity with both males and females, preferring to use bisexual in its original, biological sense as hermaphroditic; he stated, "Until it is demonstrated [that] taste in a sexual relation is dependent upon the individual containing within his anatomy both male and female structures, or male and female physiological capacities, it is unfortunate to call such individuals bisexual."[৫] মনস্তাত্ত্বিক জিম ম্যাকনাইট লিখেন, সমকামিতা ও বিষমকামীতার মধ্যবর্তী রূপের ধারণা কিনসে ছকের মধ্যে অন্তর্নিহিত আছে তবে এধারণাটি ওয়েনবার্গ এবং মনস্তাত্ত্বিক এলান পি. বেলের বই হোমোসেক্সুয়ালিটি (১৯৭৮) প্রকাশিত হওয়ার পর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।[৬]
কিনসে ছকের এক্স গ্রেড দ্বারা "কোনো যৌন সংস্পর্শ বা আকর্ষণ নেই" বুঝানো হয়, যা আজকের যুগে নিষ্কামিতা বলে অভিহিত করা হয়।[৫] বিশেষজ্ঞ জাস্টিন যে. লেহমিলার বিবৃতিতে বলেন, কিনসের এক্স গ্রেড দ্বারা যৌন স্বভাবের অনুপস্থিতি বুঝানো হয়, কিন্তু আধুনিক নিষ্কামীতার সংজ্ঞায় নিষ্কামীতা বলতে যৌন আকর্ষণের অনুপস্থিতি বুঝানো হয়। অর্থাৎ কিনসে ছক কখনোই নিষ্কামীতার প্রকৃত শ্রেণিবিন্যাস যথার্থভাবে নিরূপন করতে পারে নি।"[৭]
ক্লেইন যৌন অভিমুখিতা ছক একটি পদ্ধতি যার মধ্য দিয়ে মানুষের যৌন অভিমুখিতার বিশদ চারিত্র্য নিরূপণ করা যায়। ফ্রিৎজ ক্লেইন কর্তৃক উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি অন্যান্য প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় ব্যাপকতর ভাবে মানুষের যৌন সত্তার অন্ধি-সন্ধি সম্পর্কে ধারণা দিতে সক্ষম।[৮] ক্লেইন প্রথম তার ১৯৭৮ সালের বই দ্য বাইসেক্সুয়াল অপশন-এ KSOG বর্ণনা করেন।[৯][১০][১১][১২]
মানুষের যৌন অভিমুখিতা নিরূপণে বহুল প্রচলিত কিন্সে স্কেল কেবল দুটি মাত্রা ব্যবহার করে। সে তুলনায় ক্লেইন যৌন অভিমুখিতা ছক বহুমাত্রিক। এই ছকে প্রতিটি মানুষের যৌন অভিমুখিতার নিয়ামক হিসেবে সাতটি উপাদান চিহ্নিত করা হয়েছে যথা
(ক) যৌন আকর্ষণ
(খ) যৌন আচরণ
(গ) যৌন কল্পনা
(ঘ)আবেগের প্রাধান্য
(ঙ)সামাজিক প্রাধান্য,
(চ)জীবনশৈলী প্রাধান্য এবং
(ছ)আত্ম পরিচিতি।
উক্ত (ক) থেকে (ঙ) পর্যন্ত পাঁচটি উপাদানের জন্য সাত প্রকার চারিত্র্য চিহ্নিত করা হয়েছে। যথা
(১) কেবল বিপরীত লিঙ্গের মানুষ
(২) অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিপরীত লিঙ্গের মানুষ
(৩) তুলনামূলকভাবে বেশি বিপরীত লিঙ্গের মানুষ
(৪) সমলিঙ্গ ও বিপরীত লিঙ্গ উভয় শ্রেণীর মানুষ
(৫)তুলনামূলকভাবে বেশি সমলিঙ্গের মানুষ
(৬) অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমলিঙ্গের মানুষ এবং
(৭)কেবল সমলিঙ্গের মানুষ।
(চ) এবং (ছ) এই দুটি নিয়ামকের ক্ষেত্রে অন্য সাতটি চারিত্র্য ব্যবহার করা হয়েছে। যথা
(১) কেবল বিষমকামী মানুষ
(২) অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিষমকামী মানুষ
(৩) তুলনামূলকভাবে বেশি বিষমকামী মানুষ
(৪) বিষমকামী ও সমকামী উভয় রূপ মানুষ
(৫) তুলনামূলকভাবে বেশি সমকামী মানুষ
(৬) অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমকামী মানুষ এবং
(৭) কেবল সমকামী মানুষ।
ক্লেইন যৌন অভিমুখিতা ছকের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এতে সময়ের সাথে মানুষের যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তনের সম্ভাব্যতা বিবেচনা করা হয়েছে। এতে সাতটি উপাদানের প্রতিটির জন্য অতীত ও বর্তমান প্রবণতা চিহ্নিত করার সুযোগ রয়েছে। অধিকন্তু যৌনসঙ্গী নির্বাচনের ব্যাপারে ব্যক্তির অভীষ্ট ব্যক্তির বিষয়ও নিয়ামক হিসেবে বিবেচনায় গ্রহণ করা হয়েছে।
‘ক্লেইন যৌন অভিমুখিতা ছক’ ব্যবহার করে একজন মানুষ স্বীয় যৌন অভিমুখ সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভে সমর্থ হবে।[১৩]
ক্লেইনের বই দ্য বাইসেক্সুয়াল অপশন-এ সূচিত হওয়া KSOG একজন ব্যক্তির জীবনের তিনটি ভিন্ন পয়েন্টে যৌনতার সাতটি ভিন্ন মাত্রার মূল্যায়ন করতে পারে: অতীত (প্রারম্ভিক বয়ঃসন্ধির থেকে এক বছর আগে), বর্তমান (গত ১২ মাসের মধ্যে), এবং আদর্শ (যদি এটি স্বেচ্ছাসেবী হয় তবে নির্বাচিত করা হবে)। [১৪]
নিয়ামক | মূলকপ্রশ্ন ব্যাখ্যা | অতীত অবস্থা | বর্তমান অবস্থা | অভীষ্ট সঙ্গী/সঙ্গিনী | |
---|---|---|---|---|---|
A | যৌন আকর্ষণ | আপনি কাদের প্রতি যৌনভাবে আকৃষ্ট হন? | 1–7 | 1–7 | 1–7 |
B | যৌন আচরণ | আপনি কাদের সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়েছেন? | 1–7 | 1–7 | 1–7 |
C | যৌন কল্পনা | আপনার কাদের প্রতি যৌন কল্পনা রয়েছে? | 1–7 | 1–7 | 1–7 |
D | আবেগের প্রাধান্য | আপনি আবেগগতভাবে কাদের নিকটস্থ হতে অনুভব করেন? | 1–7 | 1–7 | 1–7 |
E | সামাজিক প্রাধান্য | আপনি কোন্ লিঙ্গের সঙ্গে সামাজিকীকৃত? | 1–7 | 1–7 | 1–7 |
F | জীবনশৈলী প্রাধান্য | আপনি কোন্ সম্প্রদায়ের সঙ্গে আপনার সময় কাটাতে চান? কাদের মধ্যে আপনি সর্বাধিক স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করেন? | 1–7 | 1–7 | 1–7 |
G | আত্ম পরিচিতি | আপনি কীভাবে নিজেকে চিহ্নিত করেন? | 1–7 | 1–7 | 1–7 |
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
---|---|---|---|---|---|---|
শুধুমাত্র অপর লিঙ্গ | বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপর লিঙ্গ | অপর লিঙ্গ ছাড়াও আরোকিছু |
উভয় লিঙ্গ সমানভাবে | উভয় লিঙ্গ ছাড়াও আরোকিছু |
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম লিঙ্গ | শুধুমাত্র সম লিঙ্গ |
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
---|---|---|---|---|---|---|
শুধুমাত্র বিষমকামী | বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিষমকামী | বিষমকামী ছাড়াও আরোকিছু |
সমানভাবে সমকামী ও বিষমকামী | সমকামী ছাড়াও আরোকিছু |
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমকামী | শুধুমাত্র সমকামী |
যৌনতার বহুমাত্রিক স্কেল (এমএসএস) বার্কি এট অল দ্বারা বিকশিত বা সংস্কারকৃত একটি যৌন অভিমুখিতার স্কেল।[১৫] ১৯৯০ সালে এবং ইতোমধ্যে বিদ্যমান এবং সাধারণভাবে ব্যবহৃত যৌন অভিমুখিতার স্কেলগুলোর সমালোচনা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বার্কি এই স্কেল উদ্ভাবন করেন। সমালোচনা চারটি মূল বিষয়কে লক্ষ্য করে হয়েছিল:
এমএসএস ধরে নিয়েছে যে যৌন অভিমুখিতা বহুমাত্রিক, এতে সময়, আচরণ, জ্ঞানীয় / সংবেদনশীল রেটিং এবং উভকামীতার উপর বিস্তৃত প্রভাব রয়েছে।