আলোকচিত্রগ্রহণ ও চিত্র প্রক্রিয়াজাতকরণ-বিষয়ক আলোচনায় রঙের ভারসাম্য বিধান বা ইংরেজি পরিভাষায় কালার ব্যালান্স (ইংরেজি: Colour balance) বলতে কোনও স্থির চিত্রের রঙসমূহের (বিশেষ করে লাল, সবুজ ও নীল মৌলিক রঙগুলির) ঔজ্জ্বল্যমাত্রার সামগ্রিক সামঞ্জস্য বিধান করাকে বোঝায়। এই সামঞ্জস্যবিধান কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো বিশেষ বিশেষ কিছু রঙ, বিশেষ করে নিরপেক্ষ রঙগুলিকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা। এ কারণে রঙের ভারসাম্য বিধানের সাধারণ পদ্ধতিটিকে কখনও কখনও ধূসর ভারসাম্য বিধান (gray balance), নিরপেক্ষ ভারসাম্য বিধান (neutral balance) বা শ্বেত ভারসাম্য বিধান (white balance) নামেও ডাকা হতে পারে। রঙের ভারসাম্য বিধান কোনও চিত্রের রঙগুলির সামগ্রিক মিশ্রণে পরিবর্তন আনে। এটিকে রঙের ত্রুটিসংশোধনে (Color correction) ব্যবহার করা হয়। রঙের ভারসাম্য বিধানের সাধারণীকৃত সংস্করণগুলিকে নিরপেক্ষ রঙ ছাড়াও অন্যান্য রঙের ত্রুটিসংশোধনে ব্যবহার করা হয় বা কোনও বিশেষ আবহ সৃষ্টির জন্য সেগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
আলোকচিত্রগ্রাহী ফিল্ম কিংবা ইলেকট্রনীয় চিত্র সুবেদী গ্রাহক, এই দুই ধরনের সুবেদী গ্রাহক দ্বারা ধৃত চিত্র উপাত্তসমূহের অর্জিত মানগুলিকে অবশ্যই এমন কোনও নতুন মানে রূপান্তরিত করতে হয়, যেগুলি রঙ পুনরুৎপাদন বা পর্দায় প্রদর্শনের জন্য উপযুক্ত। চিত্র অর্জন ও প্রদর্শন প্রক্রিয়ার বেশ কিছু দিকের কারণে এই জাতীয় রঙের ত্রুটিসংশোধন অত্যাবশ্যক একটি কাজ। প্রথমত, চিত্র অর্জনকারী কৃত্রিম সুবেদী গ্রাহকগুলির সাথে মানবচক্ষুর আলোক-সুবেদী গ্রাহকগুলির মিল নেই। দ্বিতীয়ত, প্রদর্শন মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলি অবশ্যই গণনার ধরতে হয়। তৃতীয়ত, চিত্র অর্জনকালীন পারিপার্শ্বিক দৃক-পরিস্থিতির সাথে চিত্র প্রদর্শনকারী দৃক-পরিস্থিতির পার্থক্য থাকে।
জনপ্রিয় চিত্র সম্পাদনা অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে রঙের ভারসাম্য বিধানের ক্রিয়াগুলি সাধারণত সরাসরি লাল, সবুজ ও নীল প্রণালীর চিত্রাণু বা পিক্সেলের মানগুলির উপরে কাজ করে থাকে[১][২] এবং কোনও ধরনের রঙের উপলব্ধি বা পুনরুৎপাদনের প্রতিমানের সাপেক্ষে এটি ঘটে না। চলচ্চিত্রে আলোকচিত্রগ্রহণের সময় রঙের ভারসাম্য বিধান অর্জন করতে সাধারণত আলোকচিত্রগ্রাহক যন্ত্র বা ক্যামেরার পরকলা বা লেন্সের উপরে কিংবা আলোর উপরে রঙের ত্রুটিসংশোধক পরিস্রাবক ব্যবহার করা হয়।[৩]