রণজিত সিং

জাম সাহিব কুমার রঞ্জিতসিংজী
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
নওয়ানগরের বিভাজী এইচ.এইচ. জাম সাহিব শ্রী শ্রী রঞ্জিতসিংজী
জন্ম(১৮৭২-০৯-১০)১০ সেপ্টেম্বর ১৮৭২
সাদোদার, কাঠিয়াওয়ার, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু২ এপ্রিল ১৯৩৩(1933-04-02) (বয়স ৬০)
জামনগর প্রাসাদ, ব্রিটিশ ভারত
ডাকনামরঞ্জি, স্মিথ
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি স্লো
ভূমিকাব্যাটসম্যান, লেখক ও নওয়ানগরের মহারাজা
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১০৫)
১৬ জুলাই ১৮৯৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২৪ জুলাই ১৯০২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯৫–১৯২০সাসেক্স
১৯০১–১৯০৪লন্ডন কাউন্টি
১৮৯৩–১৮৯৪কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৫ ৩০৭
রানের সংখ্যা ৯৮৯ ২৪,৬৯২
ব্যাটিং গড় ৪৪.৯৫ ৫৬.৩৭
১০০/৫০ ২/৬ ৭২/১০৯
সর্বোচ্চ রান ১৭৫ ২৮৫*
বল করেছে ৯৭ ৮০৫৬
উইকেট ১৩৩
বোলিং গড় ৩৯.০০ ৩৪.৫৯
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/২৩ ৬/৫৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৩/– ২৩৩/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ২১ আগস্ট ২০১৭

রণজিত সিংহ (গুজরাটি: રણજીતસિંહજી; জন্ম: ১০ সেপ্টেম্বর, ১৮৭২ - মৃত্যু: ২ এপ্রিল, ১৯৩৩) ব্রিটিশ ভারতের কাঠিয়াওয়ার এলাকার সাদোদারে জন্মগ্রহণকারী নওয়ানগরের শাসক ও বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[র ১] তিনি ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেট খেলেছেন।[] এছাড়াও, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেন রঞ্জি ডাকনামে পরিচিত রঞ্জিতসিংজী। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি ডানহাতে স্লো বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি।

তাকে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের অন্যতম হিসেবে বৈশ্বিকভাবে বিবেচনা করা হয়।[] নেভিল কারদাস তাকে ‘দ্য মিডসামার নাইট’স ড্রিম অব ক্রিকেট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ক্রিকেট খেলায় ব্যাটিং করে নতুন ধারার সূচনা করেন ও বিপ্লব আনেন।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

১০ বা ১১ বছর বয়সে ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার। ১৮৮৩ সালে প্রথমবারের মতো বিদ্যালয় দলে ক্রিকেট খেলেন। ১৮৮৪ সালে দলের অধিনায়ক মনোনীত হন। ১৮৮৮ সাল পর্যন্ত অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।[] বিদ্যালয়ে অবস্থানকালে বেশ কয়েকটি সেঞ্চুরি করলেও সেগুলো মানসম্মত ছিল না ও ইংল্যান্ডের তুলনায় ভিন্ন ছিল।[র ২] কিন্তু খেলাকে তিনি গুরুত্ব সহকারে না দেখে টেনিসের দিকে মনোনিবেশ ঘটান।[][] ইংল্যান্ড গমন করে সেখানে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণ করেন।[]

১৮৮৮ সালে সারে ক্রিকেট ক্লাবের সদস্য হিসেবে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিরুদ্ধে অংশ নেন। চার্লস টার্নারের ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করে ও অগণিত দর্শকদের সামন্য তিনি সেঞ্চুরি করেন। পরবর্তীকালে তিনি বলেছেন যে, দশ বছরের মধ্যে এর চেয়ে ভালো ইনিংস তিনি খেলেননি।[]

খেলোয়াড়ী জীবন

[সম্পাদনা]

১৬ জুলাই, ১৮৯৬ তারিখে রঞ্জিতসিংজী’র টেস্ট অভিষেক ঘটে। প্রথম ইনিংসে তিনি ৬২ রান তোলেন। কিন্তু ১৮১ রানের ব্যবধানে ফলো-অনে থেকে ইংল্যান্ড দল পুনরায় ব্যাটিংয়ে নামে। দ্বিতীয় দিন শেষে তিনি ৪২ রানে অপরাজিত ছিলেন। চূড়ান্ত দিনে তিনি মধ্যাহ্ন বিরতির পূর্বে ১১৩ রান তুলেন। দলের বিপর্যয় রক্ষা করেন ও জোন্সের মারাত্মক বোলিং উপেক্ষা করে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে তিনি তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি করেন। খেলায় তিনি ১৫৪* রানে অপরাজিত থাকেন।[] চূড়ান্ত দিনে ইংল্যান্ড দলের পরবর্তী সর্বোচ্চ রান ছিল ১৯।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি ১৫ টেস্টে অংশ নিয়েছেন। সবগুলো টেস্টই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন। ৪৪.৯৬ গড়ে ৯৮৯ রান তোলেন তিনি।[]

সম্মাননা

[সম্পাদনা]

১৮৯৬ সালে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনার কারণে ১৮৯৭ উইজডেন কর্তৃক তিনি বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।[১০] তাঁর দেহাবসানের পর ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) ১৯৩৪ সালে রঞ্জি ট্রফি প্রবর্তন করে। তাঁর সম্মানার্থে ও এ ট্রফি প্রস্তুতে সমূদয় অর্থ পাতিয়ালার মহারাজা ভুপিন্দার সিং দান করেন ও প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন করেন। ১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। অদ্যাবধি ভারতের বিভিন্ন শহর ও রাজ্য দলের মধ্যে এ প্রতিযোগিতাটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হিসেবে স্বীকৃত।[১১]

ভাতৃষ্পুত্র দিলীপসিংজী তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে ইংল্যান্ডে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও ইংল্যান্ড দলে খেলেন।[] ক্রিকেটের বাইরে ১৯০৭ সালে নওয়ানগরের মহারাজা জাম সাহিব উপাধি লাভ করেন। পরবর্তীকালে ইন্ডিয়ান চেম্বার অব প্রিন্সেসের চ্যান্সেলর মনোনীত হন। এছাড়াও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। তাঁর আনুষ্ঠানিক পদবী হচ্ছে কর্নেল দ্বিতীয় এইচ. এইচ. শ্রী স্যার রঞ্জিতসিংজী বিভাজী, নয়ানগরের যম সাহেব, জিসিএসআই, জিবিই

পাদটীকা

[সম্পাদনা]
  1. Ranjitsinhji's name includes the Gujarati suffix -sinhji, composed of two separate elements: -sinh, a cognate of Singh (a name common amongst the Rajputs of Gujarat), and -ji, a general honorific. His name is less commonly given as Ranjitsinhji Vibhaji, which incorporates a patronymic derived from the name of his adoptive father, Jam Saheb Shri Sir Vibhaji II. During his playing career, Ranji was often recorded on scorecards as Prince Ranjitsinhji or K. S. Ranjitsinhji. The latter usage derives from the honorifics Kumar Shri, which were not his given names, but part of his title. The use of initials derived from the tradition of distinguishing amateur players from professionals – amateurs had their initials listed on scorecards, whereas professionals were denoted by only their surnames. He also played under the name Smith on occasion.[]
  2. অনেক খেলাতেই দলে পনেরো জন খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ ছিল। বোলিংয়ের ধরন ছিল আন্ডারআর্ম ও ক্রিকেটের আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ ঘটানো হতো না।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Williamson, Martin। "Player Profile: K. S. Ranjitsinhji" (ইংরেজি ভাষায়)। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২৪ 
  2. K S Ranjitsinhji & the English cricket team
  3. Haigh, Gideon (২৪ আগস্ট ২০০৯)। "A prince among batsmen" (ইংরেজি ভাষায়)। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২৪ 
  4. Wilde, p. 24.
  5. Wilde, p. 26.
  6. Wilde, p. 25.
  7. Wilde, pp. 25–27.
  8. Wilde, pp. 68–69.
  9. Wilde, p. 245.
  10. "Ranjitsinhji (Cricketer of the Year)"Wisden Cricketers' Almanack (ইংরেজি ভাষায়)। John Wisden & Co.। ১৮৯৭। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১১ 
  11. Les Scott। Bats, Balls & Bails: The Essential Cricket Book (ইংরেজি ভাষায়)। Random House। আইএসবিএন 9781446423165। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জী

[সম্পাদনা]
  • Jackson, Sir Stanley (১৯৮২) [1933]। "Ranjitsinhji"। Green, Benny। Wisden Anthology 1900–1940। London: Queen Anne Press। পৃষ্ঠা 1,119–1,121। আইএসবিএন 0-7472-0706-2 
  • Kincaid, Charles A. (১৯৩১)। The Land of 'Ranji' and 'Duleep'। Edinburgh: William Blackwood & Sons। পৃষ্ঠা 137 
  • Ross, Alan (১৯৮৩)। Ranji: Prince of Cricketers। London: Collins। আইএসবিএন 0-00-217075-2 
  • Standing, Percy Cross (১৯০৩)। Ranjitsinhji, Prince of Cricket। Bristol/London: J. W. Arrowsmith/Simpkin, Marshall & Co.। 
  • Wild, Roland (১৯৩৪)। 'Ranji': The Biography Of Colonel, His Highness Shri Sir Ranjitsinhji Vibhaji [...]। London: Rich & Cowan / Griffon Press। পৃষ্ঠা 330। 
  • Wilde, Simon (১৯৯৯)। Ranji. The Strange Genius of Ranjitsinhji। London: Aurum Press। আইএসবিএন 1-84513-069-3 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • Satadru Sen Migrant Races: Empire, Identity and K.S. Ranjitsinhji (Manchester University Press, 2005)
  • Ann Chambers Ranji: Maharaja of Connemara (Wolfhound Press, 2003)
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
বিলি মারডক
সাসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক
১৮৯৯–১৯০৩
উত্তরসূরী
সি. বি. ফ্রাই
পূর্বসূরী
যশবন্তসিংজী বিভোজী
নওয়ানগরের জাম সাহিব
১৯০৭–১৯৩৩
উত্তরসূরী
কে. এস. দিগ্বিজয়সিংজী