রণবীর সিং | |
---|---|
![]() ২০১৫ সালে রণবীর সিং | |
জন্ম | রণবীর সিং ভবনানী ৬ জুলাই ১৯৮৫ |
মাতৃশিক্ষায়তন | ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটন |
পেশা | অভিনেতা |
কর্মজীবন | ২০১০-বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | দীপিকা পাড়ুকোন (বি. ২০১৮) |
সন্তান | ১[১] |
রণবীর সিং ভবনানী (জন্ম: ৬ জুলাই ১৯৮৫) হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটন থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর রণবীর চলচ্চিত্র শিল্পে যোগদান করার জন্য ভারতে ফিরে আসেন। ২০১০ সালে যশ রাজ ফিল্মসের রোম্যান্টিক কমেডি ব্যান্ড বাজা বারাত ছবিতে একটি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। এটিই ছিল তার অভিনীত প্রথম ছবি। ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছিল এবং বাণিজ্যিকভাবেও সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। এই ছবিতে অভিনয় করে রণবীর শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা বিভাগে একটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।
এরপর রণবীর অভিনয় করেন রোম্যান্টিক ড্রামা লুটেরা (২০১৩), সঞ্জয় লীলা ভংসালী পরিচালিত ট্র্যাজিক রোম্যান্স গোলিয়োঁ কী রাসলীলা রাম-লীলা (২০১৩) এবং অ্যাকশন-ড্রামা গুন্ডে (২০১৪) ছবিতে। গোলিয়োঁ কী রাসলীলা রাম-লীলা ছবিটি ছিল তার অভিনীত বাণিজ্যিকভাবে সফল ছবিগুলির মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য। ২০১৫ সালে তিনি অভিনয় করেন কমেডি-ড্রামা দিল ধড়কনে দো ছবিতে। এই বছরই বাজীরাও মস্তানী ছবিতে তিনি প্রথম বাজিরাওয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এই ছবিটি ছিল বলিউডের সর্বাধিক বাণিজ্যসফল ছবিগুলির অন্যতম। ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসাও অর্জন করে এবং এই ছবিতে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৮৫ সালের ৬ জুলাই[২] মুম্বই শহরে এক সিন্ধি পরিবারে রণবীর সিং-এর জন্ম হয়েছিল। তার বাবার নাম জগজিৎ সিং ভবনানী এবং মায়ের নাম অঞ্জু ভবনানী।[৩][৪][৫] ভারত বিভাজনের সময় সিন্ধু প্রদেশের করাচি থেকে রণবীরের ঠাকুরদা সুন্দর সিং ভবনানী ও ঠাকুরমা চাঁদ বার্ক মুম্বইতে চলে আসেন।[৬][৭] রণবীর তার বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। তার দিদির নাম রীতিকা ভবনানী।[২][৮][৯][১০] রণবীর সিং অভিনেতা অনিল কপূর ও তার স্ত্রী সুনীতা কপূরের (প্রাক-বিবাহ নাম সুনীতা ভবনানী) কন্যা অভিনেত্রী সোনম কপূর ও প্রযোজক রিয়া কপূর মামাতো বোন।[১১] নিজের "ভবনানী" পদবিটি বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে রণবীর বলেছিলেন যে, তার মনে হয়েছিল নামটি "অত্যধিক দীর্ঘ ও অত্যধিক অক্ষরযুক্ত"। এই কারণে "বিক্রয়যোগ্য পণ্য" হিসেবে তার ব্র্যান্ডের মূল্য কমে যায়।[১২]
ছেলেবেলা থেকেই রণবীর অভিনেতা হতে চাইতেন। স্কুলের একাধিক নাটক ও বিতর্কে অংশও নিতেন।[১৩] একবার জন্মদিনের এক পার্টিতে ঠাকুরমার অনুরোধে শিশু রণবীর নেচে দেখিয়েছিলেন।[১৪] রণবীরের স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায়, তিনি হঠাৎ এক লাফে লনে নেমে পড়েন এবং ১৯৯১ সালের অ্যাকশন চলচ্চিত্র হাম-এর "চুম্মা চুম্মা" গানটির সঙ্গে নেচে দেখান।[১৩] এই ঘটনায় তিনি রোমাঞ্চিত হন এবং অভিনয় ও নৃত্যে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।[১৩] যদিও মুম্বইতে এইচ. আর. কলেজ অফ কমার্স অ্যান্ড ইকোনমিকসে ভর্তি হওয়ার পর রণবীর উপলব্ধি করেন চলচ্চিত্রে সুযোগ পাওয়া অতটা সহজ নয়। চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরাই এই ধরনের সুযোগ পান। তাই অভিনয়ের বাসনাকে "দূরাকাঙ্ক্ষা" মনে করে তিনি সৃজনশীল লেখালিখিতে মন দেন।[১৩] এরপর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর অফ আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন।[৯]
বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অভিনয়ের ক্লাস করার সিদ্ধান্ত নেন এবং থিয়েটারকে মাইনর হিসেবে গ্রহণ করেন।[১৩] পড়াশোনা শেষ করে ২০০৭ সালে রণবীর ফিরে আসেন মুম্বইতে। এরপর কয়েক বছর ওঅ্যান্ডএম ও জে. ওয়াল্টার টমসনের মতো কয়েকটি এজেন্সির সঙ্গে কপিরাইটার হিসেবে বিজ্ঞাপনের কাজ করেন।[৯][১৪] এরপর কিছুদিন তিনি সহকারী পরিচালকের কাজও করেন। কিন্তু অভিনয়কেই জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়ে তিনি সেই কাজ ছেড়ে দেন। স্থির করেন পরিচালকদের কাছে নিজের পোর্টফোলিও পাঠাবেন।[১৪] সব ধরনের অডিশনে যান। কিন্তু কোথাও কোনও ভালো সুযোগ পাননি রণবীর। শুধু গৌণ চরিত্রে অভিনয়ের ডাক পেতে শুরু করেন: "সবকিছুই এত হতাশাব্যঞ্জক ছিল যে আমি খুব অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলাম। এক এক সময় আমি ভাবতাম আমি ঠিক করছি না ভুল করছি।"[ক]