রাজশাহী | |
---|---|
শহর | |
উপর থেকে: রাজশাহী শহরের স্কাইলাইন, বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রশাসনিক ভবন, আমের চারপাশে,রাজশাহী কলেজের প্রশাসনিক ভবন | |
ডাকনাম: শিক্ষা নগরী, রেশম নগরী, নির্মল বায়ুর শহর, সবুজ নগরী | |
বাংলাদেশে রাজশাহীর অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°২২′ উত্তর ৮৮°৩৬′ পূর্ব / ২৪.৩৬৭° উত্তর ৮৮.৬০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রাজশাহী |
জেলা | রাজশাহী |
প্রতিষ্ঠা | ১৭৭২ |
পৌরসভা | ১৮৭৬ |
সিটি কর্পোরেশন | ১৯৯১ |
সরকার | |
• ধরন | মেয়র-কাউন্সিলর |
• শাসক | রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন |
• মেয়র | এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন |
আয়তন[১] | |
• মোট | ৩৭.৩৪ বর্গমাইল (৯৬.৭২ বর্গকিমি) |
উচ্চতা | ৫৯ ফুট (১৮ মিটার) |
জনসংখ্যা (ডিজিটাল জনশুমারী ও গৃহগণনা-২০২২)[২] | |
• মোট | ৫,৫২,৭৯১ স্থায়ী জনসংখ্যা |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৬০০০, ৬১০০, ৬২০৩ |
জাতীয় টেলিফোন কোড | +৮৮০ |
টেলিফোন কোড নতুন | ০২৫৮৮৮ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
রাজশাহী বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী। এটি সমস্ত উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় উন্নত শহর ও প্রধান প্রশাসনিক শহর। এটা বিভাগীয় শহর হলেও অর্থনৈতিক ভাবে এই বিভাগের সবচাইতে উন্নত জেলা হল বগুড়া জেলা আর দ্বিতীয় উন্নত জেলা হল এই রাজশাহী জেলা। সাক্ষরতার হার বেশ ঈর্ষান্বিত হওয়ায় একে শিক্ষা নগরী বলা হয়। এবং সমগ্র বাংলাদেশে ৬ষ্ঠ বৃহত্তম ও জনবহুল শহর। এটি বাংলাদেশের একটি বিশেষ শ্রেণীভুক্ত জেলা। রাজশাহী শহর পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত।বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর শহরের পাশাপাশি সিল্কসিটি, গ্রীণসিটি, ক্লিনসিটি ও শিক্ষা নগরী রাজশাহী। বাংলাদেশের শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম বায়ু দূষণের শহর এটি। রাজশাহী শহরের নিকটে প্রাচীন বাংলার বেশ কয়েকটি রাজধানী শহর অবস্থিত। এদের মাঝে লক্ষ্ণৌতি বা লক্ষণাবতী, মহাস্থানগড় ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। রাজশাহী তার আকর্ষণীয় রেশমীবস্ত্র, আম, লিচু এবং মিষ্টান্নসামগ্রীর জন্য প্রসিদ্ধ৷ ( উল্লেখযোগ্য- বগুড়ার দই) । রেশমীবস্ত্রের কারণে রাজশাহীকে রেশম নগরী নামেও ডাকা হয়। রাজশাহী শহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের অনেকগুলোর খ্যাতি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশসেরা রাজশাহী কলেজ এ শহরে অবস্থিত। দেশের এবং দেশের বাইরের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজশাহীতে পড়াশোনার জন্য অনেক শিক্ষার্থী আসেন। রাজশাহী শহরে এবং এর আশেপাশে বেশ কিছু বিখ্যাত ও ঐতিহাসিক মসজিদ, মন্দির ও উপাসনালয় তথা ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। রাজশাহী বাংলাদেশের শহরগুলির মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন এবং সবুজ।[৩]
রাজশাহী সুপ্রাচীন ঐতিহ্য মণ্ডিত একটি শহর। অনেক আগে থেকে এই শহরটি প্রাচীন বাংলায় পরিচিত ছিল।
রাজশাহী ছিল প্রাচীন বাংলার পুন্ড্র সাম্রাজ্যের অংশ। বিখ্যাত সেন বংশের রাজা বিজয় সেনের সময়ের রাজধানী বর্তমান রাজশাহী শহর থেকে মাত্র ৯ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল। মধ্যযুগে বর্তমান রাজশাহী পরিচিত ছিল রামপুর বোয়ালিয়া নামে। এর সূত্র ধরে এখনও রাজশাহী শহরের একটি থানার নাম বোয়ালিয়া।
রাজশাহী শহরকে কেন্দ্র করে ১৭৭২ সালে জেলা গঠন করা হয়। ১৮৭৬ সালে গঠিত হয় রাজশাহী পৌরসভা। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হয়।
ব্রিটিশ রাজত্বের সময়েও রাজশাহী বোয়ালিয়া নামে পরিচিত ছিল। তখন এটি ছিল তৎকালীন পূর্ববঙ্গ ও আসাম অঞ্চলের অর্ন্তগত রাজশাহী জেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র। রাজশাহীকে সে সময়ে রেশম চাষের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছিল। তখন রাজশাহীতে একটি সরকারি কলেজ ও রেশম শিল্পের জন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। সেসময় থেকে দেশবিভাগের পূর্ব পর্যন্ত পদ্মা নদীর উপর দিয়ে প্রতিদিন যাত্রীবাহী স্টিমার চলাচল করত।
১২ জুন ১৮৯৭ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে রাজশাহী শহরের বেশীরভাগ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে অনেক ভবন আবার নতুন করে স্থাপিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে রাজশাহী তথা সারা বাংলাদেশের সবচেয়ে স্মরণীয় এবং গৌরবময় অধ্যায় হচ্ছে রাজশাহী পুলিশ লাইনের রক্তক্ষয়ী প্রতিরোধ যুদ্ধ। ১৯৭১ এর অসহযোগ আন্দোলনের সময় থেকেই তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় প্রতিটি জনপদে আন্দোলনরত ছাত্র জনতার সাথে সকল স্তরের পুলিশ সদস্যগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছিলেন। এ সকল ঘটনা সমূহ জেলা, মহকুমা ও থানা পর্যায়ের সংগ্রামী জনগণকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করে তোলে। ২৫শে মার্চের কালো রাত্রে রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণের সংবাদ সারাদেশে ছড়িয়ে পরে। রাজশাহী পুলিশ লাইন সেনাবাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত হতে পারে এমন আশঙ্কা বাঙালী পুলিশ সদস্যদের মনের মধ্যে কাজ করেছিল। এ সকল কারণে আগে থেকেই রাজশাহী পুলিশ লাইনের পুলিশ সদস্যগণ মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রাজশাহী পুলিশ লাইনের বাঙালী পুলিশ সদস্যগণ নিরাপত্তার জন্য পুলিশ লাইনের চতুর্দিকে পরিখা খনন করেন। কয়েকটি বাংকারও তৈরি করা হয়।
রাজশাহী মহানগর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন যা রাসিক নামে পরিচিত। রাজশাহী মহানগরকে রাসিক এর আওতায় ৩০ টি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়েছে।
রাজশাহী শিক্ষা নগরী নামে খ্যাত। দেশের বেশ কিছু নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই শহরে অবস্থিত।
রাজশাহী জেলাতে মোট ৩ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেগুলো হলো
রাজশাহী জেলাতে মোট ৪ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সেগুলো হলো:
রাজশাহী জেলাতে বেসরকারি ভাবে গড়ে উঠা স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ৩ টি মেডিকেল কলেজ, ১ টি ডেন্টাল কলেজ, ৫ টি নার্সিং কলেজ, ১১টি নার্সিং ইনস্টিটিউট, ১ টি ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজি এবং ১ টি কমিউনিটি প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউট রয়েছে।
গ্রেটার রোড, শেরশাহ্ রোড, কাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গির রোড, স্টেশন রোড, কাজী নজরুল ইসলাম স্বরণী, বিমান-বন্দর রোড, বেগম রোকেয়া রোড, দোশর মন্ডল রোড, রাণীবাজার-টিকাপাড়া রোড, সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট-নিউমার্কেট নতুন সড়ক, তালাইমারি রোড, টিবি রোড, রাজশাহী সিটি বাইপাস সড়ক, আলিফ লাম মিম ভাটা-বাইপাস সড়ক, ক্যান্টনমেন্ট রোড, টিটিসি রোড, প্যারা মেডিকেল রোড, মহিলা কলেজ রোড, সিএনবি রোড, পুরাতন নাটোর রোড, মালোপাড়া-রাণীবাজার ভায়া সষ্টিতলা কানেকটিং রোড, ভদ্রা-কামরুজ্জামান চত্বর রোড। এছাড়াও আরও রাস্তা রয়েছে। উপরে উল্লিখিত রাস্তাসমূহ ৪ লেন ও মাঝখানে ডিভাইডার রয়েছে।
রাজশাহী থেকে অনেকগুলো আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেন সার্ভিস রয়েছে। এসব ট্রেন এ করে ঢাকা, খুলনা, চিলাহাটি, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, সৈয়দপুর, যশোর যাওয়া যায়। আব্দুলপুর ষ্টেশন হতে রাজশাহী এর দিকে শুধুমাত্র সিঙ্গেল ব্রডগেজ রেল লাইন হওয়ার কারণে রাজশাহী হতে বগুড়া ও রংপুর এর সরাসরি কোনো ট্রেন নেই । কারণ বগুড়া ও রংপুরে মিটারগেজ রেল লাইন বিদ্যমান।
রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া কিছু গুরুত্বপুর্ণ আন্তঃনগর ট্রেন এর মধ্যে বনলতা এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস, সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস, সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস, কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, তিতুমীর এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস, ঢালারচর এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস অন্যতম।
রাজশাহী শহরে ৩ টি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে- রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন,বিশ্ববিদ্যালয় রেলস্টেশন, ও কোর্ট স্টেশন। শহরের উপকণ্ঠে হরিয়ান রেলস্টেশন বিদ্যমান।
রাজশাহীর কোর্ট এলাকায় পদ্মা নদীর তীরে প্রায় ৩১ একর জমির উপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক অবস্থিত। এখানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ১৪ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান করার লক্ষে পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া পার্কটিতে সাতটি প্লট রাখা হয়েছে। এছাড়া রাজশাহীতে এখন প্রায় ১৫টি সফটওয়ার ফার্ম আছে। তাছাড়া এখানে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য প্রায় ১০টি ট্রেনিং সেন্টার আছে; যা দিন দিন বাড়ছে।
বাংলাদেশের প্রাচীনতম জাদুঘর হচ্ছে রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর।[৪][৫] ১৯১৩ সালের ১৩ নভেম্বর বাংলার তৎকালীন গভর্নর লর্ড কারমাইকেল এটি উদ্বোধন করেন। বাঙালি ইতিহাস, ঐতিহ্য আর স্থাপত্যশিল্পের বিশাল সম্ভার রয়েছে এই বরেন্দ্র যাদুঘরে। এই জাদুঘর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাচীন ইতিহাস, সংস্কৃতি আর প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে গবেষণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহশালা। প্রতিদিন প্রাচীন হিন্দু, বৌদ্ধ এবং মুসলিম সভ্যতার নিদর্শন দেখতে কয়েকশ' দর্শনার্থী আসেন এখানে। ১৯৬৪ সাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এই জাদুঘর পরিচালনা করে আসছে।[৬]
রাজশাহী জেলা থেকে সোনালী সংবাদ, সানশাইন, দৈনিক বার্তা, সোনার দেশ, নতুন প্রভাত এবং আমাদেের রাজশাহী সহ অনেকগুলি বাংলা দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়।[৭] এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল যেমন - উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, দ্য ক্যাম্পাস, রাজশাহীর কন্ঠ, আজকের রাজশাহী, সাহেব-বাজার টোয়েন্টিফোর ডটকম, সিল্কসিটিনিউজ ডটকম,পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম, উত্তরকাল ইত্যাদি সংবাদপত্র রয়েছে। সরকার পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারের রাজশাহীতে ট্রান্সমিশন কেন্দ্র রয়েছে।
একটি স্থানীয় এফএম রেডিও স্টেশন, রেডিও পদ্মা ৯৯.২ মেগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি এবং রেডিও ফুর্তি ৮৮.০ মেগাহার্টজে সম্প্রচার করে।
রাজশাহী মহানগরীতে ৫টি প্রেস ক্লাব রয়েছে - রাজশাহী প্রেসক্লাব, রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব, রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাব,রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাব এবং রাজশাহী পদ্মা প্রেসক্লাব.
প্রাচীন বাংলা থেকেই রাজশাহী অঞ্চলে শিল্প ও সাহিত্য চর্চা ব্যাপকতা লাভ করে। বিশেষ করে গৌড়ের আদিভূমি হবার কারণে বিভিন্ন সময়ে এই অঞ্চলে নানা মাত্রার সাহিত্যচর্চা হয়েছে। এখানকার সিন্দুরী কুসুমী গ্রামের শুকুর মাহমুদ ১৭০৫ খ্রিষ্টাব্দে যোগীর পুথি কাব্য রচনা করে সমাদৃত হন। সেই হিসাবে তিনি কবি ভারতচন্দ্রেরও (১৭১২-১৭৬০) পূর্বসুরি ছিলেন। আধুনিক বাংলা শিল্প-সাহিত্যেও রাজশাহীর অবদান অগ্রগণ্য। পঞ্চকবির একজন রজনীকান্ত সেন তার জীবদ্দশায় এখানেই কাব্যচর্চা করেছেন। ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদ অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়ও ছিলেন এখানকার মানুষ।[৮] ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলনেও এখানকার শিল্প ও সাহিত্যচর্চা সমান তালে চলেছে। বাংলাভাষার অন্যতম শক্তিমান কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক তো ছিলেনই; সেলিনা হোসেন, জুলফিকার মতিন, রুহুল আমিন প্রমাণিক, ড. তসিকুল ইসলাম রাজা, মামুন হুসাইন, মনিরা কায়েস, আবু হাসান শাহরিয়ার, সালিম সাবরিন, আশরাফুল আলম পিন্টু, সিরাজদ্দৌলাহ বাহার, শামীম হোসেনের মতো কবি ও সাহিত্যিকও রাজশাহী থেকেই দীর্ঘ সময় তাদের সাহিত্যচর্চা করেছেন।[৯] কবি আরিফুল হক কুমার ও তার সঙ্গীদের উদ্যোগে কবিকুঞ্জ নামের একটি সংগঠন কাজ করছে এখানে। পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী, ওস্তাদ রবিউল হোসেনের মতো উপমহাদেশীয় ক্ল্যাসিকাল সংগীতে সিদ্ধ শিল্পীর পাশাপাশি বাংলাদেশের শক্তিমান প্লেব্যাক শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের শুরুটা হয় রাজশাহী থেকেই। মলয় ভৌমিক, কামারউল্লাহ সরকার, কাজী সাঈদ হোসেন দুলালের মতো অসংখ্য নাট্যকর্মীর প্রচেষ্টায় রাজশাহীর নাট্যাঙ্গনও যথেষ্ট শক্তিশালী।[১০]