রাজান আল-নাজ্জার | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ |
মৃত্যু | ১ জুন ২০১৮ | (বয়স ২০)
মৃত্যুর কারণ | গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে |
পেশা | নার্স |
পরিচিতির কারণ | আহত ফিলিস্তিনীদের সহায়তা প্রদান |
রাজান আশরাফ আব্দুল কাদির আল-নাজ্জার (১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭[১] - ১ জুন ২০১৮) ছিলেন একজন ফিলিস্তিনি প্যারামেডিক যাকে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ২০১৮ গাজা সীমান্ত বিক্ষোভ এর সময় আহত ফিলিস্তিনী বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার সময় হত্যা করে। একজন ইসরায়েলি সৈনিক তার বুকে গুলি করে তাকে হত্যা করে, যদিও তিনি বারবার হাত উচুঁ করে তাদের বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন যে তিনি নিরস্ত্র ছিলেন[২] এবং গাজায় ইসরায়েল সীমান্তের বেড়াঁতে আহতদের উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন।[৩] ইসরায়েল প্রথমে অস্বীকার করেছিল যে তিনি সরাসরি লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে ইসরাইল ভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপ বিটসেলেম দাবি করে যে আল-নাজ্জারকে ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি করা হয়।[৪]
রাজান আল-নাজ্জার ১৯৭৪ সালে ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী গ্রাম খুজার বাসিন্দা আশরাফাল ও নাজ্জারের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার ছয় ভাই বোনদের মধ্যে সবচেয়ে বড়।[৫]
নাজ্জারের পিতা আশরাফাল ইসরায়েলে স্ক্র্যাপ ধাতু ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন, এবং সীমানা জুড়ে ভ্রমণ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার ব্যবসা চালিয়ে যান। এরপর তিনি গাজা ভূখন্ডে একটি মোটরবাইক গ্যারাজে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন, তবে নাজ্জারের মৃত্যুর সময় তিনি বেকার ছিলেন। তার পরিবার খুজায় বসবাসকারী এক আত্মীয়ের দেয়া একটি অ্যাপার্টমেন্টে বাস করতো, যেটির অবস্থান ছিল ইসরায়েলি সৈন্যদের সীমান্তের খুব কাছেই। তাদের এলাকায় একটি চার মিটার উচ্চ কংক্রিট প্রাচীর ছিল যা ইসরায়েলীয় সৈন্যদের আগুন থেকে স্থানীয় অধিবাসীদের রক্ষা করা জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল।[৬]
নাজ্জার, আট সদস্যের পরিবারের একজন. তিনটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ দেখে বেড়ে উঠেন, যেগুলোর মধ্যে ছিল গাজা যুদ্ধ (২০০৮-২০০৯), এরপর ইসারয়েলী অপারেশন পিলার অব ডিফেন্স যখন তিনি কিশোরী ছিলেন, বয়স ১৬, এবং এর ৭ সপ্তাহ পরেই ২০১৪ ইসরায়েলের ফিলিস্তিন আক্রমণ যা তার আশপাশের প্রায় সবকিছুই ধ্বংস করে দিয়েছিল।[৬] তারা এতটাই গরীব ছিল যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার ব্যয়ভার চালাতে না পারায় তিনি ক্যালিওগ্রাফি শিখতে শুরু করেন এবং নার্সিং এর উপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন।[৬]
নাসের হাসপাতাল থেকে আনুষ্ঠানিক ট্রেনিং এর পর তিনি খান ইউনিসে প্যারামেডিক হিসেব স্বেচ্ছাসেবামূলক করতে থাকেন এবং তিনি একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা ফিলিস্তিনি মেডিক্যাল রিলিফ সোসাইটির সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করতে থাকেন। তিনি চিকিৎসকেদের সাদা কোট পরিধান করতেন এবং যারা রমজানের সময় গাজা এবং ইসরায়েল সীমান্তে বিক্ষোভের সময় যারা আহত হতেন তাদেরকে সেবা শুশ্রুষা করতেন।[৭] তার মায়ের ভাষ্য মতে, নাজ্জান প্রতি শুক্রবারে সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত কাজ করতেন এবং মেডিকেল ক্যাম্পে যাদের সেবা যত্ন করতেন তাদের রক্তমাথা শরীর নিয়ে তিনি বাসায় ফিরতেন।[৮] এমনকি তার মৃত্যুর পূর্বেও, তিনি গাজা ভূখন্ডের মধ্যে একজন আইকন হয়ে উঠেছিলেন, স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো তাদের অনলাইন সাইটে নাজ্জার একজন আহত যুবকের মাথায় ব্যান্ডেজ করছিলেন এরকম ছবিসহ ছবি প্রকাশ করেছিল।[৬]