রাবিয়া বালা খাতুন | |
---|---|
রাবিয়া বালা খাতুনের সমাধি, তুরস্কের বিলেসিকে অবস্থিত | |
জন্ম | রাবিয়া বালা খাতুন আনু. ১২৫৭/১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ |
মৃত্যু | ১৩২৪[১] বিলেসিক, তুরস্ক |
সমাধি | বিলেসিক |
দাম্পত্য সঙ্গী | প্রথম উসমান |
বংশধর | আলাউদ্দীন পাশা |
পিতা | শেখ এদেবালি[২] |
মাতা | ইলদিজ খাতুন |
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
রাবিয়া বালা খাতুন (উসমানীয় তুর্কি ভাষা: رابعه بالا خاتون; মৃত্যু জানুয়ারি ১৩২৪)[৩] ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের স্ত্রী।[৪] তিনি শেখ এদেবালির কন্যা এবং উসমানীয় সাম্রাজ্যের আলাউদ্দীন পাশার মা ছিলেন।
বিভিন্ন সূত্রে দেখা যায় যে, শেখ এদেবালির মেয়েকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।[৫] উসমানীয় সাম্রাজ্যের ইতিহাসবিদ ওরুচ বে এর ইতিহাসে দেখা যায়, শেখ এদেবালির মেয়েকে "রাবিয়া" নাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও আসিকপাসাজাদে, নেসরি, রুস্তম পাশা এবং লুৎফি পাশা এর ইতিহাসে তার নাম "মাল/মালহুন" হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদি বালা খাতুন ওসমান গাজী'র প্রথম স্ত্রী হয়ে থাকেন, তাহলে ১২৮০ সালে বালা খাতুনকে ওসমান গাজী বিয়ে করেন। আর যদি দ্বিতীয় স্ত্রী হয়ে থাকেন, তাহলে ১২৮৯ সালে ওসমান গাজী তাকে বিয়ে করেন। তবে ঐতিহাসিকদের নিকট গ্রহণযোগ্য মতামত হলো, ওসমান গাজী ১২৮৯ সালে মালহুন খাতুনকে বিয়ে করেন। এ অনুসারে এটাও বুঝা যায় যে, বালা খাতুন ওসমান গাজী'র প্রথম স্ত্রী ছিলেন।[৬]
শেখ এদেবালি উসমানের পরামর্শদাতা হন এবং তাকে গাজীর তলোয়ার দেন। শেখ এদেবালির দরগায় উসমান একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন।[৭] এই স্বপ্ন এভাবেই একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে পরিচালিত করে। এরপর প্রথম উসমানের সঙ্গে বিয়ে হয় এদেবালির মেয়ের।[৮] এই বিবাহের ফলে সকল আহিসরা উসমানীয়দের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এটি উসমানীয় বেইলিক প্রতিষ্ঠা ও বিকাশে বড় প্রভাব ফেলেছিলো। বিয়ের সময় বালা খাতুন যে সম্পত্তি পেয়েছিলেন সে সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের নথি থেকে জানা যায় যে, বিলেসিক জেলার কোজাগাক গ্রামে তার বাবার দরবেশ ধর্মশালা অবস্থিত ছিলো। তার পিতা শেখ এদেবালি ছিলেন উসমানীয় অঞ্চলের একজন প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা।[৯]
যদিও প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে ঐতিহাসিক বিভিন্ন মতপার্থক্য রয়েছে। তবে বালা খাতুনের ব্যাপারে জানা যায় যে, তিনি তৎকালীন সময়ের সেরা সুন্দরী, রুপসী ও মহীয়সী নারী ছিলেন। তিনি সর্বদা উসমানের সাথে সঙ্গবদ্ধ থাকতেন এবং উসমানের অনুপস্থিতিতে সর্বদা বসতিকে আগলে রাখতেন। তিনি সালতানাতে উসমানী'র জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে একবার মোঙ্গলদের ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হন, যার কারণে তার জরায়ু কেটে যায়। যা সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য বিরাট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে তার ঘর আলোকিত করে দুনিয়ার বুকে আগমন করেন তার পুত্র সন্তান আলাউদ্দীন পাশা। যদিও এসব ব্যাপারে ঐতিহাসিকদের বিভিন্ন মতপার্থক্য রয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
রাবিয়া বালা খাতুন ১৩২৪ সালে তুরস্কের বিলেসিকে ইন্তেকাল করেন। তাকে বিলেসিকে তার বাবার সাথে দাফন করা হয়েছিলো।[১০] বালা খাতুনের সমাধি এবং তার মা ইলদিজ খাতুনের সমাধি শেখ এদেবালির সমাধি কমপ্লেক্সের মধ্যে পাওয়া একটি বিখ্যাত ঐতিহাসিক নিদর্শন।[১১] এই কমপ্লেক্সটি ওরহান গাজী দ্বারা নির্মিত হয়েছিলো এবং পরে দ্বিতীয় আবদুল হামিদ সংস্কার করেছিলেন।[১২][১৩][১৪]
২০১৯ সালের তুর্কি ঐতিহাসিক কল্পকাহিনী টিভি সিরিজ কুরুলুস: উসমান-এ বালা খাতুন এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন তুর্কি অভিনেত্রী ওজে টেরার।[১৫][১৬][১৭]