মন্দিরটি খ্রিস্টীয় ১৬তম শতাব্দীতে নির্মিত বাবরি মসজিদের স্থানে নির্মিত হয়। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে মসজিদের ভিতর রাম ও সীতার মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল; মসজিদটি ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে আক্রমণ করে ভেঙে ফেলা হয়। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে একটি রায় প্রদান করে। রায়ে বিতর্কিত জমিটি মন্দির নির্মাণের জন্য হিন্দুদের দেওয়া হয় এবং মুসলমানদের মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্যত্র জমি প্রদান করা হয়। আদালত ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের একটি প্রতিবেদনকে প্রমাণ হিসাবে উল্লেখ করে, প্রতিবেদনে বলা হয় বাবরি মসজিদের নিচে একটি কাঠামোর উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যেটি কোনও ইসলামি স্থাপনা নয়।[৭]
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২০ সালের ৫ই আগস্ট রাম মন্দির নির্মাণের সূচনার জন্য ভূমি পূজা (ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান) করেন।[৮][৯] মন্দিরটি, বর্তমানে নির্মাণাধীন, শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে। ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের ২২শে জানুয়ারি রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্টার মাধ্যমে উদ্বোধনের করা হয়।[১০] মন্দির চত্বরে সূর্য, গণেশ, শিব, দুর্গা, বিষ্ণু ও ব্রহ্মার মন্দির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[৯]
ভারতীয় জনতা পার্টির দ্বারা অনুদানের অপব্যবহার, প্রধান আন্দোলন কর্মীদের কোণঠাসা করা এবং রাজনীতিকরণের কারণে মন্দিরটিকে ঘিরে বেশ কয়েকটি বিতর্কের জন্ম হয়েছে।[১১][১২][১৩][১৪]
বাবর ১৬তম শতাব্দীতে উত্তর ভারত জুড়ে মন্দির আক্রমণের ধারাবাহিকতায় মন্দিরটি আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে।[১৬] পরবর্তীতে, মুঘলরাবাবরি মসজিদ নামক একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিল, যা রাম জন্মভূমি তথা রামের জন্মস্থান বলে মনে করা হয়।[১৭]জেসুইট ধর্মপ্রচারক জোসেফ টাইফেনথালার দ্বারা রচিত লাতিন বই ডেসক্রিপটিও ইন্ডিয়াতে মসজিদটির প্রথমতম উল্লেখ ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। তাঁর মতে, রামকোট মন্দির ধ্বংস করে মসজিদটি তৈরি করা হয়েছিল, বিশ্বাস করা হয় অযোধ্যায় রামের দুর্গ ও বেদী ছিল, যেখানে রামের জন্মস্থান অবস্থিত।[১৮]
ধর্মীয় সহিংসতার প্রথম উদাহরণ ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে নথিভুক্ত করা হয়েছিল।[১৯] ব্রিটিশ প্রশাসন ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে হিন্দুদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্থানে পূজা (আচার অনুষ্ঠান) করতে নিষেধ করে। মসজিদের বাইরে আচার অনুষ্ঠানের জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল।[২০]
রাম ও সীতার মূর্তি ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২২-২৩শে ডিসেম্বর রাতে বাবরি মসজিদের ভিতরে স্থাপন করা হয়েছিল, এবং পরের দিন থেকে ভক্তরা ভিড় জমাতে শুরু করে।[২১][২২] ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে নাগাদ, রাজ্য ১৪৫ সিআরপিসি ধারার অধীনে মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, এবং মুসলমান ব্যতীত হিন্দুদের উক্ত স্থানে তাদের উপাসনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।[২৩]
হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংঘ পরিবারের অন্তর্গত বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ১৯৮০-এর দশকে হিন্দুদের জন্য জায়গাটি পুনরুদ্ধার করার জন্য ও ওই স্থানে শিশু রামকে (রাম লালা) নিবেদিত একটি মন্দির নির্মাণের জন্য একটি নতুন আন্দোলন শুরু করেছিল। ভিএইচপ তহবিল ও "জয় শ্রী রাম" লেখা ইট সংগ্রহ করে। পরে, প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর অধীনে সরকার ভিএইচপি'কে শিলান্যাসের (ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠান) অনুমতি দেয়, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুটা সিং আনুষ্ঠানিকভাবে ভিএইচপি নেতা অশোক সিংগালকে অনুমতি জ্ঞাপন করেন। প্রাথমিকভাবে, ভারত সরকার ও উত্তরপ্রদেশ সরকার সম্মত হয়েছিল যে শিলান্যাস বিতর্কিত স্থানের বাইরে পরিচালিত হবে। যাইহোক, ভিএইচপি নেতা ও সাধুদের একটি দল ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ই নভেম্বর বিতর্কিত জমির সংলগ্ন ২০০-লিটার (৭-ঘনফুট) আয়তনের গর্ত খনন করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল। সেখানে গর্ভগৃহের সিংহদ্বার নির্মাণ করা হয়।[২৪] তখন ভিএইচপি বিতর্কিত মসজিদ সংলগ্ন জমিতে মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করে। ভিএইচপি ও ভারতীয় জনতা পার্টি ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ৬ই ডিসেম্বর করসেবক নামে পরিচিত ১,৫০,০০০ স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ওই স্থানে একটি সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশটি হিংসাত্মক হয়ে ওঠে, জনতা নিরাপত্তা বাহিনীকে ভয়াভিভুত করে এবং মসজিদটি ভেঙে ফেলে।[২৫][২৬]
ধ্বংসের ফলে ভারতের হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে কয়েক মাস ধরে আন্তঃসাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়, যার প্রত্যক্ষ ফলস্বরূপ বোম্বেতে (বর্তমানে মুম্বই) আনুমানিক ২,০০০ লোকের মৃত্যু এবং সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়েছিল।[২৭] মসজিদ ধ্বংসের একদিন পর ৭ ডিসেম্বর ১৯৯২ তারিখে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন দেয় যে পাকিস্তান জুড়ে ৩০টিরও বেশি হিন্দু মন্দিরে হামলা হয়, কিছুতে আগুন দেওয়া ও একটি ভেঙে ফেলা হয়। পাকিস্তান সরকার একদিনের প্রতিবাদে স্কুল ও অফিস বন্ধ করে দিয়েছিলো।[২৮]বাংলাদেশের হিন্দু মন্দিরেও হামলা হয়।[২৫] বাবরি মসজিদের প্রতিশোধের সময় এই হিন্দু মন্দিরগুলোর মধ্যে কিছু আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যায়।[২৯]
অযোধ্যায় ধ্বংসপ্রাপ্ত বাবরি মসজিদের স্থানে স্থাপিত অস্থায়ী রাম মন্দিরে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের ৫ই জুলাই পাঁচজন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বলের (সিপিআরএফ) সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পাঁচজনই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়, যদিত্ত গ্রেনেড হামলায় একজন বেসামরিক লোক মারা যায় যেটি আক্রমণকারীরা ঘেরা প্রাচীর বিদীর্ণ করার (ফাটল তৈরি করা) জন্য শুরু করেছিল। সিপিআরএফ-এর তিনজন সদস্য হতাহত হয়েছিল, যাদের মধ্যে দুজন একাধিক গুলির আঘাতে গুরুতর আহত হয়।[৩০][৩১]
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই) দ্বারা পরিচালিত ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দ ও ২০০৩ খ্রিস্টাব্দের প্রত্নতাত্ত্বিক খননে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে ওই স্থানে হিন্দু মন্দিরের অবশেষ বিদ্যমান ছিল।[৩২][৩৩] প্রত্নতাত্ত্বিক কে. কে. মুহাম্মাদ অনুসন্ধানগুলো অবমূল্যায়ন করার জন্য অনেক বামপন্থা-ঘেঁষা ইতিহাসবিদকে অভিযুক্ত করেছেন।[৩৪] বছরের পর বছর ধরে, বিভিন্ন শিরোনাম ও আইনি বিরোধ সংঘটিত হয়েছিল, যেমন "অযোধ্যা অধ্যাদেশ, ১৯৯৩"-এ কিছু নির্দিষ্ট এলাকা অধিগ্রহণ। এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২০১০ খ্রিস্টাব্দে বিতর্কিত ২.৭৭ একর (১.১২ হেক্টর) জমি ৩ ভাগে বিভক্ত করার রায় দেয়, যার ১/২ অংশ রাম মন্দির নির্মাণের জন্য হিন্দু মহাসভা দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা রাম লালা বা শিশু ভগবান রামকে, ১/২ অংশ মুসলিম সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডে এবং বাকি ১/২ অংশ হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায় নির্মোহী আখড়াকে প্রদান করা হবে।
অযোধ্যা বিরোধে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে বিতর্কিত জমিটি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ভারত সরকার দ্বারা গঠিত একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ট্রাস্টটি অবশেষে শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র নামে গঠিত হয়েছিল। সংসদে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ৫ই ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অধীনে সরকার মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দুই দিন পর, ৭ই ফেব্রুয়ারি, শহর থেকে ২২ কিমি (১৪ মাইল) দূরে ধন্নিপুর গ্রামে একটি নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জমি বরাদ্দ করা হয়।[৩৫]
রাম মন্দিরের মূল নকশাটি ১৯৮৮ সালে আহমেদাবাদের সোমপুরা পরিবার তৈরি করেছিল।[৩৬] সোমপুররা সোমনাথ মন্দির সহ কমপক্ষে ১৫ প্রজন্ম ধরে সারা বিশ্বে ১০০ টিরও বেশি মন্দিরের মন্দির নকশা করেছে।[৩৭] মন্দিরের প্রধান স্থপতি চন্দ্রকান্ত সোমপুরা। তাকে তার দুই ছেলে স্থপতি নিখিল সোমপুরা ও আশীষ সোমপুরা, যারা নকশায় সাহায্য করে।[৩৮]
মূল নকশা পরিবর্তন করে তৈরি একটি নতুন নকশা ২০২০ সালে সোমপুররা বাস্তুশাস্ত্র ও শিল্পশাস্ত্র অনুযায়ী তৈরি করে।[৩৮][৩৯] মন্দিরটি হবে ২৩৫ ফুট চওড়া, ৩৬০ ফুট লম্বা ও ১৬১ ফুট উঁচু। একবার সম্পূর্ণ হলে মন্দির কমপ্লেক্সটি হবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হিন্দু মন্দির।[৩৮] এটি উত্তর ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যের গুজরা-চৌলুক্য শৈলীতে নকশা করা হয়েছে।[৩৭] ২০১৯ সালে প্রয়াগ কুম্ভ মেলার সময় প্রস্তাবিত মন্দিরের একটি মডেল প্রদর্শন করা হয়েছিল।[৪০]
মন্দিরের মূল কাঠামোটি একটি উঁচু মঞ্চের উপর নির্মিত হবে, এটা তিনতলা হবে। এতে গর্ভগৃহ ও প্রবেশ দ্বারের মাঝে পাঁচটি মণ্ডপ থাকবে — তিনটি হল মণ্ডপ কুডু, নৃত্য ও রং; এবং অপর পাশে কীর্তন ও প্রার্থনার জন্য দুটি মণ্ডপ। নগর শৈলীতে মন্ডপগুলো শিখরা দিয়ে সজ্জিত করা হবে। সবচেয়ে উঁচু শিখরটি হবে গর্ভগৃহের উপরে।[৪১]
ভবনটিতে মোট ৩৬৬টি স্তম্ভ থাকবে। শিব, ১০ জন দশাবতার, ৬৪ জন চৌসাথ যোগিনী ও দেবী সরস্বতীর ১২ জন অবতারকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রতিটি স্তম্ভে ১৬ টি করে মূর্তি থাকবে। সিঁড়ির প্রস্থ ৪.৯ মিটার (১৬ ফুট)। মন্দিরগুলোর নকশার জন্য নিবেদিত শাস্ত্র অনুযায়ী, বিষ্ণুকে উৎসর্গকৃত গর্ভগৃহটি অষ্টভুজাকার হবে।[৩৯] মন্দিরটি ১০ একর (০.০৪০ বর্গকিমি) জমিতে নির্মিত হচ্ছে ও ৯৭ একর (০.২৩ বর্গকিমি) জমিতে একটি প্রার্থনা হল, একটি বক্তৃতা হল, একটি শিক্ষাগত সুবিধা ও একটি জাদুঘর এবং একটি ক্যাফেটেরিয়ার মতো অন্যান্য সুবিধা সহ একটি কমপ্লেক্সে বিকশিত করা হবে। লারসেন অ্যান্ড টুব্রো বিনামূল্যে মন্দিরের নকশা ও নির্মাণ তদারকি করার প্রস্তাব দেয় এবং প্রকল্পের ঠিকাদার হয়ে ওঠে। সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং বোম্বে, গুয়াহাটি ও মাদ্রাজ আইআইটি মাটি পরীক্ষা, কংক্রিট তৈরি ও নকশার মতো ক্ষেত্রে সহায়তা করছে।[৪২][৪৩]
রাজস্থানের বানসি থেকে উত্তোলিত ১৭,০০০ ঘনমিটার (৬,০০,০০০ ঘনফুট) বেলেপাথর দিয়ে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে। মন্দির নির্মাণে লোহার কোনো ব্যবহার হয়নি, এবং পাথরের খণ্ড জোড়া দিতে দশ হাজার তামার প্লেট ব্যবহার করা হয়েছে।
বিষ্ণুরঅবতাররামের শিশু রূপ রাম লালা বিরাজমান মন্দিরের প্রধান দেবতা।[৪৪] রাম লালার পোশাক সেলাই করেন দর্জি ভাগবত প্রসাদ ও শঙ্কর লাল; রামের প্রতিমার চতুর্থ প্রজন্মের দর্জি।[৪৫][৪৬] রাম লালা ১৯৮৯ সাল থেকে বিতর্কিত স্থান নিয়ে আদালতের মামলায় একজন মামলাকারী ছিলেন, আইন দ্বারা তাকে "বিচারবাদী ব্যক্তি" হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল।[৩৬] তার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন একজন উর্ধ্বতন ভিএইচপি নেতা ত্রিলোকি নাথ পান্ডে, যিনি রাম লালার পরবর্তী 'মানব' বন্ধু হিসাবে বিবেচিত হন।[৪৪] মন্দির ট্রাস্টের মতে চূড়ান্ত নকশায় মন্দির চত্বরে সূর্য, গণেশ, শিব, দুর্গা, বিষ্ণু ও ব্রহ্মাকে উৎসর্গ করা মন্দিরসমূহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[৪৭]
২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে ডিসেম্বর, অযোধ্যার রাম মন্দিরের জন্য রাম লালার মূর্তি নির্বাচন একটি ভোটিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছিল। কর্ণাটক-ভিত্তিক ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ রামের মূর্তি তৈরি করেছিলেন।[৪৮][৪৯][৫০]
শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট ২০২০ সালের মার্চ মাসে রাম মন্দির নির্মাণের প্রথম ধাপ শুরু করেছিল।[৫১][৫২] যাইহোক, ভারতে কোভিড-১৯ মহামারীজনিত অবরুদ্ধকরণ এবং ২০২০ সালের চীন-ভারত সংঘর্ষের কারণে নির্মাণ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছিল।[৫৩][৫৪] নির্মাণস্থলের মাটি সমতলকরণ ও খননকালে একটি শিবলিঙ্গ, স্তম্ভ ও ভাঙা মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল।[৫৫] মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উপস্থিতিতে ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ রামের মূর্তিটি একটি অস্থায়ী স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।[৫৬] এটির নির্মাণের প্রস্তুতির জন্য, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি বিজয় মহামন্ত্র জপ অনুষ্টান আয়োজন করেছিল, যেখানে ব্যক্তিরা বিজয় মহামন্ত্র – শ্রী রাম, জয় রাম, জয় জয় রাম, জপ করতে ২০২০ সালের ৬ই এপ্রিল বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হয়েছিল। এটি মন্দির নির্মাণে "প্রতিবন্ধকতার উপর বিজয়" নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছিল।[৫৭]
মন্দির ট্রাস্ট ৫৫-৬০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে একটি দেশব্যাপী "গণ যোগাযোগ ও অবদান প্রচার" চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।[৪৩] স্বেচ্ছায় দান ₹ ১০ (ইউএস$ ০.১২) এবং উচ্চতর গ্রহণ করা হবে।[৬৪] ১৫ জানুয়ারী ২০২১-এ ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ₹ ৫,০১,০০০ (ইউএস$ ৬,১২৩.৮৭) অনুদান দিয়ে রাম মন্দির নির্মাণে প্রথম অবদান রাখেন।[৬৫] এর পর দেশব্যাপী বেশ কয়েকজন নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব অনুসরণ করেন। এপ্রিল ২০২১ নাগাদ প্রায় ₹ ৫,০০০ কোটি (ইউএস$ ৬১১.১৭ মিলিয়ন) সারাদেশ থেকে অনুদান হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছিল।[৬৬][৬৭] প্রায় ১.৫০ লক্ষ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কর্মী সারা দেশ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে। মন্দির ট্রাস্ট শুধুমাত্র হিন্দু ভক্তদের কাছ থেকে অনুদান পায়নি বরং খ্রিস্টান ও মুসলিম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি সদস্যের কাছ থেকেও অনুদান পেয়েছিল।[৬৮][৬৯][৭০]
রাজপথে ২০২১ দিল্লি প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ চলাকালীন সময় উত্তরপ্রদেশের মূকনাট্য রাম মন্দিরের একটি প্রতিরূপ প্রদর্শন করেছিল।[৭৭] কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে দুর্গা পূজা উদযাপনে রাম মন্দিরের প্রতিরূপ একটি মণ্ডপ নির্মাণ করা হয়েছিল।[৭৮][৭৯]
মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে (দেবনাগরী: मंदिर वही बनाएंगे, আইএসও: অনু. মন্দির ওখানেই হবে) হল একটি হিন্দি স্লোগান, যার অর্থ হল "মন্দির ওখানেই হবে"। এটি রাম জন্মভূমি ও রাম মন্দিরের সাথে সম্পৃক্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় স্লোগান যা ১৯৮৫-৮৬ সালের দিকে জন্ম নেয় এবং ১৯৯০-এর দশকে জনপ্রিয় হয়। এর বেশকিছু বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্করণ রয়েছে।[৮০][৮১] স্লোগানটি ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়। এটি আশার প্রতীক ও এটি একদিকে উৎসবের একটি অংশ হয়ে উঠেছে, অন্যদিকে এটি উপস্থিত রসিকতা, হাস্যরস এবং মিমসের একটি অংশ হয়ে উঠেছে।[৮২] ২০১৯ সালে, স্লোগানটি ভারতের সংসদে,[৮২] ও গণমাধ্যম দ্বারা ব্যবহার করা হয়েছে।[৮৩][৮৪] স্লোগানটি হুমকির পাশাপাশি ব্রত হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে।[৮৫]
এই স্লোগানের বিভিন্ন ধরন রয়েছে যেমন লাল কৃষ্ণ আদভানির ব্যবহৃত একটি: "সাওগাঁদ রাম কি খাত-এ হ্যাঁয়; হা মান্দির ওহিঁ বানায়েঙ্গে" (অনু. আমরা রামের নামে ব্রত নিয়েছি: আমরা ঠিক সেখানেই মন্দির তৈরি করব)।[৮০] অন্যান্য বৈচিত্র্য এবং অভিযোজনের মধ্যে রয়েছে "ওহি বানেগা মান্দির" (অনু. ওখানেই হবে মন্দির),[৮৩] "জাহা রাম কা জান্মা হুয়া থা, হাম মান্দির ওহি বানায়েঙ্গে" (অনু. যেখানে রাম জন্মেছে সেখানেই মন্দির হবে),[৮১] "রাম ললা হাম আয়েঙ্গে; মান্দির ওহি বানায়েঙ্গে" (অনু. রাম লালা আমরা আসছি, মন্দির ওখানেই হবে)[৮১] এবং "পেহলে মান্দির, ফির সারকার" (অনু. প্রথমে মন্দির, তারপর সরকার)।[৮৬]
দ্য ব্যাটেল ফর রামা:কেস অব দি টেম্পলে অ্যাট অযোধ্যা - মীনাক্ষী জৈন।
২০২১ সালের অক্টোবরে সালমান খুরশিদ সানরাইজ ওভার অযোধ্যা: নেশনহুড ইন আওয়ার টাইমস নামক আরেকটি বই প্রকাশ করেন, যেটি অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের বিষয়ে ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার পতন সম্পর্কে ছিল। বইটি বিজেপির সদস্যদের মধ্যে বিতর্কিত হয়ে ওঠে কারণ এর একটি অধ্যায় হিন্দুত্বকে ইসলামি সন্ত্রাসবাদের সাথে তুলনা করেছে।[৮৭][৮৮]
↑"BBC"। ১৬ অক্টোবর ২০১৯। ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২৪।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Jain, Meenakshi (২০১৭), The Battle for Rama - Case of the Temple at Ayodhya, Aryan Books International, আইএসবিএন978-8-173-05579-9উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link) [পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
↑Kishore, Kunal (২০১৬)। Ayodhya Revisited (ইংরেজি ভাষায়) (প্রথম সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: Ocean Books Pvt. Ltd.। পৃষ্ঠা xxix। আইএসবিএন978-81-8430-357-5।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Timeline: Ayodhya holy site crisis"। বিবিসি নিউজ। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১০। ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২৪।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Kunal, Kishore (২০১৬)। Ayodhya Revisited (ইংরেজি ভাষায়) (প্রথম সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: Ocean Books Pvt. Ltd। পৃষ্ঠা xxx। আইএসবিএন978-81-8430-357-5।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Kunal, Kishore (২০১৬)। Ayodhya Revisited (English ভাষায়) (1st সংস্করণ)। New Delhi: Ocean Books Pvt. Ltd। পৃষ্ঠা xxxii। আইএসবিএন978-81-8430-357-5।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link) উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
↑Agrawal, S.P.; Aggarwal, J.C. (১৯৯২)। Information India 1990–91 : Global View। Concepts in communication informatics and librarianship। Concept Publishing Company। পৃষ্ঠা 489। আইএসবিএন978-81-7022-293-4। ৪ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২৪।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Foundation work of Ram Mandir expedited"। Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৫-২৬। ২০২১-১১-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২২।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)