রামকৃষ্ণ গোপাল ভাণ্ডারকর | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ৬ জুলাই, ১৮৩৭ |
মৃত্যু | ২৪ অগস্ট, ১৯২৫ |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় |
পরিচিতির কারণ | প্রাচ্যবিদ্যা |
সন্তান | দেবদত্ত রামকৃষ্ণ ভাণ্ডারকর (পুত্র) |
স্বাক্ষর | |
![]() |
রামকৃষ্ণ গোপাল ভাণ্ডারকরসিআইই (৬ জুলাই, ১৮৩৭ – ২৪ অগস্ট, ১৯২৫) ছিলেন একজন ভারতীয় গবেষক, প্রাচ্যবিদ ও সমাজ সংস্কারক।
অধুনা ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সিন্ধুদুর্গ জেলার অন্তর্গত মলবনে ভাণ্ডারকরের জন্ম। রত্নগিরিতে বিদ্যালয় শিক্ষার পর তিনি বোম্বাইয়ের (অধুনা মুম্বই) এলফিনস্টোন কলেজে পড়াশোনা করেন। ভাণ্ডারকর ও মহাদেব গোবিন্দ রাণাডে ছিলেন বোম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতক। ১৮৬২ সালে তারা স্নাতক হন। পরের বছর তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৮৮৫ সালে গোটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।[১]
ভাণ্ডারকর এলফিনস্টোন কলেজ ও ডেকান কলেজে শিক্ষকতা করতেন। সারা জীবন তিনি গবেষণা ও রচনাকর্মে ব্যাপৃত ছিলেন। ১৮৯৪ সালে তিনি বোম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে অবসর নেন। তিনি লন্ডন (১৮৭৪) ও ভিয়েনায় (১৮৮৬) প্রাচ্যবিদ্যা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেন এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন। ইতিহাসবিদ রাম শরণ শর্মা তার সম্পর্কে লিখেছেন, "তিনি দাক্ষিণাত্যের রাজনৈতিক ইতিহাস, সাতবাহন সাম্রাজ্যের ইতিহাস এবং বৈষ্ণবধর্ম ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ইতিহাস পুনর্নির্মাণ করেন। সমাজ সংস্কারক হিসেবে গবেষণার মাধ্যমে তিনি বিধবা বিবাহের পক্ষে সোচ্চার হন এবং জাতিভেদ প্রথা ও বাল্যবিবাহ প্রথার কুফলগুলি তুলে ধরেন।"[২]
শিক্ষাবিদ হিসেবে ১৯০৩ সালে কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ায় বেসরকারি সদস্য হিসেবে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। গোপাল কৃষ্ণ গোখেল ছিলেন এই কাউন্সিলের অপর এক সদস্য।[৩] ১৯১১ সালে রামকৃষ্ণ গোপাল ভাণ্ডারকর সি.আই.ই সম্মানে ভূষিত হন।[৪]
১৮৫৩ সালে ছাত্রাবস্থায় ভাণ্ডারকর পরমহংস সভা নামে একটি উদারপন্থী সংগঠনের সদস্য হন। এই সংগঠনটি সেই সময়কার রক্ষণশীল সমাজের কোপদৃষ্টি থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য গোপন সংগঠন হিসেবে কাজ করত। ১৮৬৪ সালে কেশবচন্দ্র সেনের আগমনে এই সভার সদস্যরা উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। ১৮৬৬ সালে এই সভার কয়েকজন সদস্য আত্মারাম পাণ্ডুরঙ্গের বাড়িতে সমবেত হয়ে জনসমক্ষে কয়েকটি সমাজ সংস্কারের প্রতিজ্ঞা করে। এগুলির মধ্যে ছিল (১) জাতিভেদ প্রথা বিলুপ্তি, (২) বিধবা বিবাহে উৎসাহ দান, (৩) নারীশিক্ষায় উৎসাহ দান এবং (৪) বাল্যবিবাহ প্রথা বিলোপ।
সভার সদস্যরা স্থির করেন সমাজ সংস্কারের ভিত্তি হিসেবে ধর্মীয় সংস্কার প্রয়োজন। ১৮৬৭ সালের ৩১ মার্চ তাদের প্রথম প্রার্থনা সভাটি আয়োজত হয়। এরপরেই প্রার্থনা সমাজ গঠিত হয়। কেশবচন্দ্র সেন, প্রতাপচন্দ্র মজুমদার ও পাঞ্জাব ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা নবীন চন্দ্র রাইয়ের উপস্থিতি তাদের প্রক্রিয়াকে উদ্বুদ্ধ করে।
পুণের বিখ্যাত ভাণ্ডারকর ওরিয়েন্টাল রিসার্চ ইনস্টিটিউশন তার নামে নামাঙ্কিত।[৫]