রিকার্ডো পাওয়েল

রিকার্ডো পাওয়েল
২০০৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে রিকার্ডো পাওয়েল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রিকার্ডো লয়েড পাওয়েল
জন্ম (1978-12-16) ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭৮ (বয়স ৪৫)
সেন্ট এলিজাবেথ, জ্যামাইকা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৩১)
১৬ ডিসেম্বর ১৯৯৯ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট১০ এপ্রিল ২০০৪ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৯৪)
১৬ মে ১৯৯৯ বনাম পাকিস্তান
শেষ ওডিআই৭ আগস্ট ২০০৫ বনাম ভারত
ওডিআই শার্ট নং৩৪
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৭ - ২০০৩জ্যামাইকা (জার্সি নং ৩৪)
২০০৩ - ২০০৬ত্রিনিদাদ ও টোবাগো (জার্সি নং ৩৪)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১০৯ ৩৭ ১৪৯
রানের সংখ্যা ৫৩ ২০৮৫ ১৫৮৪ ২৭৭৮
ব্যাটিং গড় ১৭.৬৬ ২৪.৮২ ২৭.৩১ ২৪.৫৮
১০০/৫০ -/- ১/৮ ২/৮ ১/১১
সর্বোচ্চ রান ৩০ ১২৪ ১১৫ ১২৪
বল করেছে ৭৮ ৪৭৩ ১৫৫০ ৯৭১
উইকেট ১১ ১৩ ২৯
বোলিং গড় ৪৪.৬৩ ৫১.৬৯ ৩১.৬৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ২/৫ ৩/৭৫ ৩/২৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ৪৩/- ২৬/- ৬৯/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রিকার্ডো লয়েড পাওয়েল (ইংরেজি: Ricardo Powell; জন্ম: ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭৮) জ্যামাইকার সেন্ট এলিজাবেথ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে জ্যামাইকা ও ত্রিনিদাদ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন রিকার্ডো পাওয়েল

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত রিকার্ডো পাওয়েলের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে ১৯ বছর বয়সে রিকার্ডো পাওয়েলের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। এরপর, ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে লিস্ট-এ ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৯৯ সালে বুস্টা কাপে জ্যামাইকীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে গড়ের দিক দিয়ে শীর্ষস্থানে আরোহণ করেন।

অ্যান্টিগুয়ার কুলিজ এলাকার স্ট্যানফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এ পর্যায়ে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সদস্যরূপে কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জের বিপক্ষে স্ট্যানফোর্ড ২০/২০ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।[][]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্ট ও একশত নয়টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন রিকার্ডো পাওয়েল। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে হ্যামিল্টনে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১০ এপ্রিল, ২০০৪ তারিখে সেন্ট জোন্সে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

২০ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রবেশ করেন তিনি। সিঙ্গাপুরে ভারতের বিপক্ষে ৯৩ বলে ১২৪ রানের দ্রুতগতির ইনিংসের কল্যাণে সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে উপনীত হয়েছিলেন। দ্রুতলয়ে উত্থানের পরপরই স্বল্প সময়ের মধ্যে ভূপতিত হন। একদিনের খেলায় তাকে রাখা হয়। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডে টেস্ট খেলার পর তাকে বাদ দেয়া হয়। এমনকি ওডিআই দলেও তাকে নিয়মিতভাবে খেলানো হয়নি। পরবর্তীতে অবশ্য দলের নিয়মিত খেলোয়াড়ের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। তবে, বড় ধরনের রান সংগ্রহ না করার প্রবণতার পাশাপাশি স্নায়ুবিক চাপে ভোগার ফলে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়।

সর্বকনিষ্ঠ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিকে শতরান করার গৌরব অর্জন করেন। ৯৬.৬৬ স্ট্রাইক রেটে দুই সহস্রাধিক রান তুলেন। ওডিআইয়ে ১০০০ বা ততোধিক রান সংগ্রহকারী যে-কোন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান খেলোয়াড়দের মধ্যে এ গড়টি সর্বোচ্চ। ১৯৯৯ সালে সিঙ্গাপুরে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে আটটি ছক্কা হাঁকান। এরফলে, গর্ডন গ্রীনিজের রেকর্ডের সমকক্ষ হন। এছাড়াও, একই বছরে টরন্টোয় একই দলের বিপক্ষে সাতটি ছক্কা হাঁকিয়ে ছিলেন তিনি। ১০৯টি ওডিআই ইনিংসে ৭৫টি ছক্কার মার মারেন। এ সংখ্যাটি বিখ্যাত ক্রিকেট তারকা ভিভ রিচার্ডসের সমান।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১০৯টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেন। এছাড়াও ১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।[] ২০০৪ সালে সেন্ট জোন্সে সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে খেলেন। ঐ টেস্টেই ব্রায়ান লারা প্রথম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে ৪০০ রান করেছিলেন।[]

কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে দল নির্বাচকমণ্ডলী তাকে কেবলমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের মাঝে আবদ্ধ করে রাখেন। এছাড়াও দলে তিনি আসা-যাওয়ার পালায় অবস্থান করছিলেন। এক পর্যায়ে তাকে ব্যাটিংয়ের জন্যে নিচেরদিকে নিয়ে আসা হয়।[] বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে রিকার্ডো পাওয়েলের ন্যায় খুব কমসংখ্যক পরিচ্ছন্ন খেলোয়াড় রয়েছেন। তবে, দলে অনিয়মিত হয়ে পড়ার বিষয়টি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। মাইকেল হোল্ডিংসহ অনেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান তারকা ক্রিকেটারদের অভিমত, তার প্রতিভাকে অবমূল্যায়িত করা হয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। ক্যারিবীয় টিভি টক শো উপস্থাপিকা, ব্লগার ও আন্তর্জাতিক শেফ অ্যালিসিয়া ব্যাসিয়া পাওয়েলের সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এ দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। রিকোল পাওয়েল নাম্নী এক কন্যা এবং রিকার্ডো পাওয়েল জুনিয়র ও রস পাওয়েল নামীয় দুই পুত্র জন্মগ্রহণ করে। বর্তমানে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় বসবাস করছেন।

২০০৩ সালে জ্যামাইকা পরিত্যাগ করে স্ত্রীর নিজদেশে ত্রিনিদাদে চলে যান। স্বীয় স্ত্রীর স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার কারণে অনেকাংশে খেলার জগৎ থেকে দূরে সড়ে যান। ২০০৬-০৭ মৌসুমে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস

[সম্পাদনা]

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পেশাদারী পর্যায়ে ক্রিকেট খেলেন ও বসবাস করছেন। ইন্ডিয়ান লায়ন্স ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে ক্রিকেট খেলেছেন। ইএসপিএনে ক্রিকেট বিশ্লেষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি।

জুন, ২০১৬ সালে ইউএসএ দল নির্বাচকমণ্ডলীর নতুন সভাপতি হিসেবে রিকার্ডো পাওয়েলকে মনোনীত করা হয়। এ প্যানেলে আসিফ মুজতবা, মাইকেল ভস, আমির আফজালুদ্দীন ও বার্নি জোন্স রয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড়দের পুরুষ দলের সদস্য নির্বাচন করা তার প্রথম কাজ ছিল। দলটি আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লীগের চতুর্থ বিভাগে খেলছে ও লস অ্যাঞ্জেলসে প্রতিযোগিতা আয়োজন করবে। এছাড়াও, অনূর্ধ্ব-১৭ দলের নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি।[][]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]