ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | রিচি বেনো | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | পেনরিথ, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া | ৬ অক্টোবর ১৯৩০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১০ এপ্রিল ২০১৫ সিডনি, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৮৪)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | রিচি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি লেগ স্পিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার, অধিনায়ক, ধারাভাষ্যকার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | জন বেনো (ভ্রাতা) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৯০) | ২৫ জানুয়ারি ১৯৫২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৮-১৯৬৪ | নিউ সাউথ ওয়েলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ জানুয়ারি ২০১৪ |
রিচার্ড রিচি বেনো, ওবিই (/ˈbɛnoʊ/; ইংরেজি: Richard "Richie" Benaud; জন্ম: ৬ অক্টোবর, ১৯৩০ - মৃত্যু: ১০ এপ্রিল, ২০১৫) নিউ সাউথ ওয়েলস প্রদেশের পেনরিথ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ছিলেন। তাকে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সর্বাপেক্ষা প্রতিভাধর অধিনায়ক হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ১৯৬৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গন থেকে অবসর নেয়ার পর ব্রিটিশ টেলিভিশনের ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হিসেবে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন। ব্যাপক পরিচিতির আসনে অবস্থান করে ক্রিকেট ধারাভাষ্যের জগৎ থেকে ২০০৫ সালে অবসর নেন রিচি বেনো। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ২০০ উইকেট লাভের পাশাপাশি ২,০০০ রান সংগ্রহ করে স্মরণীয় হয়ে আছেন।[১]
টেস্ট ক্রিকেটে তিনি দক্ষ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। নিম্নসারির ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে লেগ স্পিন বোলিং করে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে আউট করতেন। তার খেলার সঙ্গী ও বোলিং অল-রাউন্ডার অ্যালান ডেভিডসনের সাথে একত্রিত হয়ে ১৯৫০-এর দশকের শেষদিক থেকে ১৯৬০-এর দশকের শুরুর সময়কাল পর্যন্ত তিনি অস্ট্রেলীয় দলকে বিশ্বের শীর্ষসারির দলে রূপান্তরিত করেছিলেন।
১৮ বছর বয়সে বেনো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। মাত্র ১০জন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারের একজনরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দশ সহস্রাধিক রানসহ পাঁচ শতাধিক উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখান রিচি বেনো।[২]
১৯৫২ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে ৬৩ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন।[৩] উইকেট প্রতি ২৭.০৩ রান প্রদান করে তিনি ২৪৮ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে তিনি ১৬-বার পাঁচ-উইকেট লাভ করতে সক্ষমতা দেখান।[৩][৪] ২৫ জানুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু টেস্ট ম্যাচে প্রথম অংশগ্রহণ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ঐ খেলায় অস্ট্রেলিয়া দল ২০২ রানের বিরাট ব্যবধানে জয় পেয়েছিল।[৫] খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুর দিকে দ্রুততম সময়ে মাত্র ৭৮ মিনিটে শতরান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার এ শতরানটি তৃতীয় দ্রুততম ও অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দ্বিতীয় দ্রুততম অবস্থায় রয়েছে।[৬] ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে ভারত সফরে মাদ্রাজ টেস্টে নিজস্ব সেরা টেস্ট বোলিং করেন ৭/৭২।[৭][৮] কর্পোরেশন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলাটিতে তিনি প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেট পান। ইডেন গার্ডেন্সের তৃতীয় টেস্টে উভয় ইনিংসেই পাঁচ-উইকেট উইকেট পেয়েছিলেন। ঐ টেস্টে তিনি সর্বমোট ১১ উইকেট পান ১০৫ রানের বিনিময়ে যা তার টেস্টে সেরা সংগ্রহ।[৮][৯] ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে জোহানেসবার্গে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১২২ রান তোলেন।[৭] ১৯৫৮ সালে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়করূপে মনোনীত হন ও ১৯৬৪ সালে অবসর নেয়ার পূর্ব-পর্যন্ত স্ব-পদে ছিলেন। তার নিপুণ ও কৌশলী নেতৃত্ব এবং ক্রিকেট খেলায় অসাধারণ জ্ঞানের ফলে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে চারটি সিরিজ জয় করে অস্ট্রেলীয় দল। অস্ট্রেলিয়া দলকে ২৮ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ১২ জয়, ১১ ড্র, ১ টাই ও ৪ হারের মুখোমুখি হন তিনি।[৭] পাশাপাশি সাধারণ দর্শকদের কাছে এ ক্রীড়ার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯৬০-৬১ মৌসুমে প্রবর্তিত ফ্রাঙ্ক ওরেল ট্রফি লাভ করে তার দল। ঐ সিরিজেই বিখ্যাত টাই টেস্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল।[১০][১১] ১৯৬৩ সালে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ উইকেট ও ২,০০০ রান সংগ্রহ করে টেস্ট ডাবল সম্পন্ন করেন।[১২] সিডনিতে অনুষ্ঠিত টেস্টে অংশগ্রহণ শেষে তার সফল খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ঐ সময় তিনি ২৭.০৩ গড়ে ২৪৮ উইকেট সংগ্রহ করেন যা তৎকালীন রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত ছিল।[৭]
১৯৬১ সালে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) পদক লাভ করেন। ১৯৬২ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক কর্তৃপক্ষ তাকে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে নামাঙ্কিত করে।[১৩] ১৯৮৫ সালে তাকে স্পোর্ট অস্ট্রেলিয়া হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৪] ক্রীড়া ধারাভাষ্যে অবদান রাখায় ১৯৯৯ সালে লগি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।[১৫] এছাড়াও, ২০০৭ সালে অ্যালান বর্ডার পদক অনুষ্ঠানে চার্লি ম্যাককার্টনি’র সাথে তাকেও অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৬] ৪ জানুয়ারি, ২০০৮ তারিখে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তিনি নিজেই স্বীয় ভাস্কর্য উন্মোচন করেন।[১৭] পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমের উদ্বোধনকালে ফ্রাঙ্ক ওলি, গ্রাহাম গুচ, ডেনিস কম্পটন, হ্যারল্ড লারউডের সাথে তাকেও আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৮][১৯][২০][২১]
গিডিওন হেই তাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়কালে সবচেয়ে প্রভাববিস্তারকারী ক্রিকেটার ও ক্রিকেট ব্যক্তিত্বরূপে বর্ণনা করেছেন।[২২] বেনো’র আত্মজীবনীমূলক ‘এনিথিং বাট’ গ্রন্থের সমালোচনামূলক বক্তব্য উপস্থাপন করেন শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট ক্রিকেট লেখক হ্যারল্ড ডি অ্যানড্রাডো লিখেছেন: ‘রিচি বেনো খুব সম্ভবত স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের পরেই স্থান পাবেন। তিনি একাধারে ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব, গবেষক, লেখক, সমালোচক, সংগঠক, পরামর্শক এবং ক্রিকেট খেলার ছাত্র ছিলেন।’[২৩] ক্রিকেট লেখক লিও ম্যাককিনস্ট্রি ১৯৯৮ সালে তাকে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা কুশলী ক্রিকেটার ও অন্যতম সেরা অল-রাউন্ডার হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
"ডন ব্র্যাডম্যানের মৃত্যুর পর ক্রিকেটের অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এ প্রেক্ষিতে আমি বেনো পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি ও তাঁর মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে। খুব কমসংখ্যক অস্ট্রেলীয়ই রিচি বেনো’র সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। "
অক্টোবর, ২০১৩ সালে সিডনি এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় পতিত হন। এতে তিনি কাঁধে আঘাতপ্রাপ্ত হন। কিন্তু তিনি ধীরে ধীরে আরোগ্য লাভ করায় ২০১৩-১৪ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে চ্যানেল নাইনে ধারাভাষ্যকার দলে যোগ দিতে পারেননি।[২৫] নভেম্বর, ২০১৪ সালে জানা যায় যে, ৮৪ বছর বয়সে তিনি ত্বকের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন।[২৬] অতঃপর ১০ এপ্রিল, ২০১৫ তারিখে ঘুমন্ত অবস্থায় তার দেহাবসান ঘটে।[২৭][২৮][২৯][৩০] এ প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করার কথা ঘোষণা করেন।[২৪][৩১]
পূর্বসূরী ইয়ান ক্রেগ |
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৫৮/৫৯-১৯৬১ |
উত্তরসূরী নীল হার্ভে |
পূর্বসূরী নীল হার্ভে |
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৬১-১৯৬৩/৬৪ |
উত্তরসূরী বব সিম্পসন |