লেখক | উইলবার স্মিথ |
---|---|
ভাষা | ইংরেজি |
ধারাবাহিক | প্রাচীন মিশর সিরিজ |
বিষয় | প্রাচীন মিশর |
ধরন | কল্পসাহিত্য |
প্রকাশক | ম্যাকমিলান |
প্রকাশনার তারিখ | ১৯৯৩ |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ৬৬২ |
আইএসবিএন | ০-৩৩০-৩৩১৯৭-৩ |
ওসিএলসি | ৩১০৭৮১৮১ |
পরবর্তী বই | দ্য সেভেন্থ স্ক্রল |
রিভার গড দক্ষিণ আফ্রিকান লেখক উইলবার স্মিথ রচিত উপন্যাস। এতে নপুংসক দাস টাইটার বর্ণনায় প্রাচীন মিসরীয় জীবন, হিক্সসের আক্রমণে মিশরীয় ফারাও সম্রাজ্যের পতন অতঃপর পলায়ন ও ফিরে এসে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। উপন্যাসটি উইলবার স্মিথ–এর প্রাচীন মিশর সিরিজের অন্তর্ভুক্ত। অন্য বই গুলোর মধ্যে রয়েছে দ্য সেভেন্থ স্ক্রল (১৯৯৫), ওয়ারলক, দ্য কোয়েস্ট, ডেজাড গড, ফারাও। উপন্যাসটি ১৯৯৩ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়।
রিভার গড উপন্যাসে দাস টাইটার দৃষ্টিতে দেখা মিসরীয় ফারাওয়ের রাজত্ব ও তার পরিণতির গল্প, যে নিজে একজন নপুংসক ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। টাইটা ছিল প্রভু ইনটেফে দাস যে তার মেয়ে লস্ট্রিসের দেখাশোনা করত। আদতে প্রভু ইনটেফের প্রাসাদের সকল কর্মকাণ্ডই টাইটা দেখাশোনা করত।
সেই সময় মিশরের ফারাওয়ের কোন ছেলে উত্তরাধিকারী ছিল না। ওরিসিস উৎসবের নাটকে মহান ফারাও লস্ট্রিসকে দেখে মোহিত হন। লস্ট্রিস ঐ সময় বীর সৈনিক ট্যানাসের প্রেমে পড়ে। ঘটনা চক্রে ফারাওয়ের সাথে লস্ট্রিসের বিয়ে হয়ে যায় এবং লর্ড ইনটেফ টাইটাকে যৌতুক হিসেবে দিতে বাধ্য হন।
একপর্যায়ে সৈনিক ট্যানাস মহান ফারাওকে মিসরের প্রধান সমস্যা শ্রাইক্ দস্যুদের সম্পর্কে অবহিত করেন ও প্রতিকার প্রার্থনা করেন যা ফারাও কে ক্ষুব্ধ করে। তিনি ট্যানাসকে দুই বছরের মধ্যে শ্রাইক্ দস্যুদের নির্মূল করার আদেশ দেন অন্যথায় তার মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।
ট্যানাস, টাইটার সাহায্যে শ্রাইক্ দস্যুদের নির্মূল করতে সক্ষম হন এবং তাদের সর্দার যে লর্ড ইনটেফ তা প্রমাণ করেন। দুর্ভাগ্যক্রমে লর্ড ইনটেফ পালাতে সক্ষম হন। এদিকে ফারাও তার পরিষদ নিয়ে শিকারে গেলে মরু ঝড়ের কবলে পরেন। সেখানে এক গুহায় আটকে পরে ট্যানাস ও লস্ট্রিস মিলিত হন। তাদের মিলনের ফসল ফারাও পুত্র ম্যামোস নামে ভুমিষ্ট হয়। যার আসল পিতৃ পরিচয় একমাত্র লস্ট্রিস, ট্যানাস ও টাইটাই জানেন।
রাজ্যের জন্য নতুন হুমকি হিসেবে দেখা দেয় বহিরাগত হিস্কক বাহিনী। তাদের সামরিক ঘোড়া, রথ, বাঁকানো ধনুক সবই যান্ত্রিক ভাবে এতই উত্কৃষ্ট যে পদাতিক মিসরীয় বাহিনিকে মুহূর্তে ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলে। ফারাও নিহত হন। রানী লস্ট্রিস, ট্যানাস ও টাইটাই, শিশু ম্যামোস, সম্মানিত সভাসদ্দের ও বাকি সৈন্যদের নিয়ে কি নিয়ে নীল নদ দিয়ে মিসর ছেড়ে পালিয়ে যান।
তাদের নির্বাসনে থাকার সময় রানী লস্ট্রিস আরো দুইটি মেয়ে শিশুর জন্ম দেয়, কিন্তু টাইতা কৌশলে তাদের পিতৃ পরিচয় গোপন রাখেন। এই সময় টাইটা ঘোড়া ধরে এনে ঘোড়সওয়ার বাহিনী, রথের চাকার উন্নতি সাধন করে যা পরে হিস্ককদের সাথে যুদ্ধ জয়ে প্রধান ভুমিকা পালন করে।
ফারাওয়ের সমাধির জন্য উপযুক্ত জায়গা খোজার সময় নৃশংস ইথিওপিয়ার সর্দার আরকুন টাইটাকে বন্দি করে। সেখানে বন্দিদশায় প্রতিদ্বন্দ্বী সর্দারদের মেয়ে মাসারার সাথে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব হয় টাইটার। টাইটা পালিয়ে গিয়ে তার পিতা(মাসারার) কে খুজে বের করে আর তার মেয়েকে উদ্ধার করে দেবার চুক্তি করে। বিনিময়ে তারা প্রচুর ঘোড়া ও নীল তলোয়ার দাবি করে। মিসরিয়দের সাথে যুদ্ধে আরকুন বাহিনী পরাজিত হয়। যুদ্ধে বীর ট্যানাস মারা যায়। মাসারা ও মেমন প্রেমে পরে তাদের বিয়ে হয়। নতুন সম্রাট ফারাও মেমনের নেতৃত্বে তারা মরুভুমি পারি দিয়ে মিসরে ফিরে আসে। তাদের নবাবিষ্কৃত অস্ত্রসম্ভার, যুদ্ধ কৌশল, নতুন ধরনের রথ নিয়ে তারা হিক্সস বাহিনির মোকাবেলা করে এবং থিবেস থেকে বিতারিত করে হারানো সম্রাজ্যের আংশিক ফিরে পায়।
স্মিথ এই বইটি লেখার পেছনে অনুপ্রেরণার কথা যে ভাবে বর্ণনা করেনঃ
সূর্যাস্তের সময় আমি একাকী নীলনদের ধারে কারণাকের মন্দির বসে ছিলাম। বড় প্রার্থনা কক্ষটি যেন প্রাচীন কায়া আর প্রেতে পরিপূর্ণ ছিল। এমন সময় আমি ক্ষীণ কণ্ঠটি শুনলাম “আমার নাম টাইটা, আমার কাহিনীটি লিখুন।” এবং তা যদি বিশ্বাস করেন তাহলে সকল কিছুই বিশ্বাস করবেন।টেমপ্লেট:তথ্যসূত্র প্রয়োজনে
তিনি আরো বলেছেন যে, "১৯৮৮ সালে এক প্রাচীন অখ্যাত মিসরীয় রাণীর সমাধি আবিষ্কার হলে তিনি এব্যাপারে ধারণা পান। যিনি আনুমানিক ১৭৮০ খ্রিস্টপূর্বে মৃত্যুবরণ করেন।" যে প্রত্ন দলটি মিসরের নীলনদের পশ্চিম ধারে খনন কার্য পরিচালনা করছিলেন তাদের আমন্ত্রনেই স্মিথ তখন স্ক্রোল গুলি অনুবাদে সাহায্য করছিলেন।
বইটির শেষে দুই পাতা উপসংহারে স্মিথ দাবী করেন যে তার কাহিনী ১৭৮০ খ্রিস্টপূর্বে লিখিত স্ক্রোলের কাহিনী অনুসারে লেখা হয়েছে যা প্রাচীন মিসরীয় সমাধি খননের সময় আবিষ্কৃত হয়। স্ক্রোলগুলো আবিষ্কার করেন মিসরীয় ইতিহাস সম্পর্কে অভিজ্ঞ ডঃ দুরাইদ আল সিমা, যিনি তা অনুবাদের পর স্মিথকে বই লেখার জন্য প্রদান করেন। এটি একটি ভ্রান্ত দাবী ছিল, যা স্মিথ পরের বই দ্য সেভেন্থ স্ক্রোলে জানিয়ে দেন।
বইয়ের প্রধান বিভ্রান্তি ছিল হিক্সসদের আগমন নিয়ে। যা বইয়ে দাবি করা সময়ের প্রায় ১০০ বছর পরের ঘটনা। অর্থাৎ ১৭৮০ খ্রিস্টপূর্বে মিসরের ত্রয়োদশ ডাইনেষ্টির সময়ে নয় প্রকৃতপক্ষে পঞ্চদশ ডাইনেষ্টির সময়ে মিশরে হিক্সসদের আগমন ঘটে। বইয়ের ঘটনা ও চরিত্রের সাথে যা সামঞ্জস্য পূর্ণ নয়।
বইয়ের আরেকটি বিভ্রান্তিকর তথ্য হচ্ছে, আরকূনের নীল তরবারি। যা স্টিলের তৈরী বলে লেখক দাবী করেন। প্রকৃতপক্ষে স্টিল আবিষ্কৃত হয় ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে। আর যদি ধরেও নেই যে তরবারিটি লোহার তৈরী তাহলেও বিভ্রান্তি। কারণ, ১২০০ খ্রিস্টপূর্বের আগে লোহার ব্যবহার আবিষ্কৃত হয়নি যা কাহিনীর সময়কালের অন্তত ৪০০ বছর পরের ঘটনা।
তবে হিক্সসদের মাধ্যমে মিসরীয়রা সর্ব প্রথম ঘোড়ার সাথে পরিচিত হয় লেখকের এই দাবি সঠিক। এছাড়া বাঁকানো ধনুকের আবিষ্কার নিয়ে করা লেখকের দাবিটিও সঠিক।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
এই অনুচ্ছেদটিতে মৌলিক গবেষণাযুক্ত উপাদান রয়েছে অথবা যাচাইবিহীনভাবে দাবি করা হয়েছে। দয়া করে উপযুক্ত তথ্যসূত্র এবং উৎস প্রদান করে নিবন্ধটির মানোন্নয়নে সাহায্য করুন। আরও বিস্তারিত জানতে নিবন্ধের আলাপ পাতায় দেখুন। (April 2016) |
উপন্যাসটিতে একটি দুই পৃষ্ঠার আফটারওয়ার্ড রয়েছে, যেখানে স্মিথ দাবি করেছেন যে উপন্যাসটি একটি মিশরীয় সমাধিতে আবিষ্কৃত স্ক্রোলগুলির একটি সেটের উপর ভিত্তি করে যা আনুমানিক ১৭৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের। স্ক্রোলগুলি একজন মিশরবিদ ডক্টর ডুরাইদ আল-সিমা আবিষ্কার করেছিলেন বলে জানা গেছে, যিনি একটি উপন্যাসে প্রতিলিপি করার জন্য স্মিথের কাছে অনুবাদগুলি দিয়েছিলেন। [১] এটি একটি মিথ্যা দাবি, কারণ স্মিথ পরবর্তীকালে সিক্যুয়াল, দ্য সেভেন্থ স্ক্রোল- এর আফটারওয়ার্ডে প্রকাশ করেছেন।
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় সংঘাত হল হাইকসোস আক্রমণ, যা ১৭৮০ সালের দাবি করা তারিখের প্রায় ১০০ বছর পরে সংঘটিত হয়েছিল। ১৭৮০ সাল ছিল প্রায় মিশরের ত্রয়োদশ রাজবংশের সূচনা: হিক্সোসকে মিশরের পঞ্চদশ রাজবংশের কাছে নিযুক্ত করা হয়েছে। [২] সুতরাং, উপন্যাসের চরিত্র এবং ঘটনাগুলিকে ইতিহাসের নির্দিষ্ট চরিত্র এবং ঘটনার সাথে সম্পর্কিত করা সম্ভব নয়।
মিশরে ঘোড়ার পরিচয় দেওয়ার জন্য হাইকসোসকে কৃতিত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে উপন্যাসটি সঠিক। [৩] আরেকটি প্রযুক্তি যা উপন্যাস সমালোচকদের কৃতিত্ব দেয় তা হল আরও উন্নত "রিকারভড বো"। এটিও সম্ভবত সঠিক।
"অ্যাকশন উইলবার স্মিথের খেলার নাম, এবং তিনি একজন মাস্টার।"
ওয়াশিংটন পোস্ট বুক ওয়ার্ল্ড