রুবেলা, জার্মান হাম বা তিন দিনের হাম নামে পরিচিত,[১] রুবেলা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ।[২] এই রোগ প্রায়ই মৃদু এবং আক্রান্ত রোগীদের অর্ধেকই অসুস্থতা বুঝতে পারে না।[৩] লালচে ফুসকুড়ি সংক্রমণের প্রায় দুই সপ্তাহ পর শুরু হয়ে তিন দিনের জন্য স্থায়ী হতে পারে। এটি সাধারণত মুখের ওপর শুরু হয় এবং শরীরের বাকি অংশে ছড়িয়ে পড়ে। হামের ফুসকুড়ির মত উজ্জ্বল নয় এবং কখনও কখনও চুলকানি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই লসিকা গ্রন্থি ফুলে কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে [৪][৫]। বড়দের অস্থিসন্ধিতে ব্যথা সচরাচর হয়। জটিলতাগুলোর মধ্যে রক্তক্ষরণ সমস্যা, অণ্ডকোষ ফোলা, এবং স্নায়ু প্রদাহ অন্তর্ভুক্ত। গর্ভাবস্থার পর্যায়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সংক্রমণ থেকে জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম (সিআরএস) অথবা গর্ভপাত হতে পারে। সিআরএস এর প্রধান উপসর্গ, হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কের সমস্যা, কানের সমস্যা যেমন- বধিরতা, চোখের সমস্যা যেমন- ছানি অন্তর্ভুক্ত। সমস্যার গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহের পর বিরল।
রুবেলা সাধারণত সংক্রমিত মানুষের কাশির মাধ্যমে বায়ুতে ছড়িয়ে পড়ে।[৬] ফুসকুড়ি ওঠার এক সপ্তাহ আগে ও এক সপ্তাহ পর পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তি রোগ ছড়াতে পারে। সিআরএস আক্রান্ত শিশুরা এক বছরের বেশি সময় পর্যন্ত ভাইরাস রোগ ছড়াতে পারে। শুধু মানুষই আক্রান্ত হয়। পোকামাকড়ের মাধ্যমে রোগ ছড়ায় না। একবার উদ্ধার, মানুষ ভবিষ্যতে সংক্রমণ অনাক্রম্য হয়। পরীক্ষা করে অনাক্রম্যতা যাচাই করা যায়। রোগ নির্ণয় রক্ত, গলা, বা প্রস্রাবে ভাইরাস শনাক্ত করে নিশ্চিত করা হয়। রক্তে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা সহায়ক হতে পারে।
রুবেলা একটি প্রতিরোধযোগ্য যা একটিমাত্র টিকার মাধ্যমে ৯৫% প্রতিরোধযোগ। প্রায়ই এটা হাম এবং মাম্পস ভ্যাকসিনের সাথে একযোগে দেওয়া হয় যা এমএমআর টিকা হিসাবে পরিচিত। টিকাদানের হার জনসংখ্যার ৮০%-এর কম হলে গর্ভধারণের আগে নারী অনাক্রম্যতা অর্জন করতে পারে না এবং এই সমস্যা বাড়তে পারে। একবার আক্রান্ত হলে কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। রুবেলা বিশ্বের অনেক অঞ্চলে একটি সাধারণ রোগ। প্রতি বছর জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম হয় ১০০,০০০ শিশুর। রোগের হার টিকা দেয়ার ফলে অনেক এলাকায় কমে গেছে। বিশ্বব্যাপী রোগটি নির্মূল করার প্রচেষ্টা অব্যাহত। ২০১৫ সালের এপ্রিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুই আমেরিকাকে রুবেলা সংক্রমণ-মুক্ত ঘোষণা করে[৭][৮]। "রুবেলা" ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ সামান্য লাল। এটা প্রথম ১৮১৪ সালে একজন জার্মান চিকিৎসক একটি পৃথক রোগ হিসেবে বর্ণনা করেন বলেই একে "জার্মান হাম" হিসেবে অভিহিত করা হয়।
রুবেলার উপসর্গ ফ্লু এর মতো। তবে, রুবেলা ভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ র্যাশ বা ফুস্কুরি (এক্স্যান্থেম) যা মুখ থেকে ধর এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণত তিন দিন পর হাল্কা হয়ে যায়(যজায়জন্য একে প্রায়ই তিনদিনের হাম হিসেবে অভিহিত করা হয়)।শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পড়তে মুখের ফুসকুড়ি সাধারণত চলে যায়। অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে অল্প জ্বর, ফোলা লসিকা-গ্রন্থি (উপ-অক্সিপিটাল এবংঘাড়ের পেছনে), গাঁটে ব্যথা, মাথা ব্যাথা, এবং নেত্রবর্ত্মকলাপ্রদাহ অন্তর্ভুক্ত[৯]। ফোলা লসিকা গ্রন্থি এক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে এবং জ্বর খুব কম ক্ষেত্রেই ৩৮ °C (১০০.৪ °F) উপরে উঠে। জার্মান হামের ফুসকুড়ি সাধারণত গোলাপি বা হালকা লাল যা চুলকায় এবং প্রায়ই তিন দিন স্থায়ী হয়। ফুসকুড়ি কয়েক দিনে চলে যায় চামড়া খসানো বা দাগ না রেখে। ফুসকুড়ির জায়গাতে সূক্ষ ফালিতে চামড়া খসতে পারে। ফোরশহেইমার চিহ্ন ২০% ক্ষেত্রে দেখা যায়, নরম তালুতে ছোট, লাল উঁচু স্থান হিসাবে[১০]। রুবেলা যে কোন বয়সে হতে পারে, এবং সাধারণত একটি মৃদু রোগ, শিশুদের অথবা চল্লিশোর্ধদে মধ্যে বিরল। বয়সের সাথে লক্ষণ গুরুতর হতে পারে। বয়স্ক মেয়ে বা নারীদের মধ্যে ৬০% -এর গিরায় ব্যথা বা অস্থি-সন্ধির প্রদাহের অভিজ্ঞতা হতে পারে[১১]।
শিশুদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে রুবেলার নিম্নোক্ত উপসর্গগুলি দুই দিন স্থায়ী হয়ঃ [১৩]
বয়স্ক বাচ্চাদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদের অতিরিক্ত উপসর্গ হতে পারেঃ
নিম্নলিখিত গুরুতর সমস্যা ঘটতে পারেঃ
রুবেলায় করাইজা নিউমোনিয়য়াতে রূপান্তরিত হতে পারে, যা সরাসরি ভাইরাল নিউমোনিয়া বা অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া এবং ব্রঙ্কাইটিস (হয় ভাইরাল ব্রংকাইটিস বা অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়া ব্রংকাইটিস)[১৬]।
মূল নিবন্ধঃ ''জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম''
রুবেলায় নবজাতকের মধ্যে জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম হতে পারে। সিনড্রোমে (সিআরএস) রুবেলা ভাইরাস দ্বারা জরায়ু সংক্রমণ অনুসরণ করে এবং হৃদযন্ত্র মস্তিষ্ক , অক্ষি এবং স্রবণ-যন্ত্রের গঠনে অপূর্ণতা হয় [১৭]। এছাড়া অপূর্ণতা, কম জন্ম ওজন, এবং নবজাতক থ্রম্বোসাইটপেনিয়া, রক্তাল্পতা এবং হেপাটাইটিস হতে পারে. প্রধান অপূর্ণতা বা অঙ্গসংগঠনে ত্রুটির ঝুঁকি প্রথম তিনমাসের মধ্যে সংক্রমণের জন্য সর্বোচ্চ. সিআরএস প্রধান কারণ রুবেলা জন্য একটি ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে. [১৮] অনেক মায়েরা যারা প্রথম তিনমাসের ক্রান্তিকালের মধ্যে রুবেল আক্রান্ত হন তারা গর্ভপাত বা মৃত শিশুর প্রসব ক্রান। ভ্রূণ সংক্রমণ থেকে বেঁচে গেলে তাহলে তা কঠইন হৃদরোগ (পেটেণ্ট ডাক্টাস আর্টারিওসাস সবচেয়ে বেশি), অন্ধত্ব, বধিরতা, বা অন্যান্য জীবন হানিকর বিভন্ন অঙ্গের রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। ত্বক প্রকাশমান "ব্লুবেরি মাফিন ক্ষত" হয় [১৮]। এই কারণে, রুবেলা জন্মের সময়ের জটিল সংক্রমণ সন্নিবেশ টর্চের অন্তর্ভুক্ত। প্রতি বছর প্রায় ১০০,০০০ ক্ষেত্রে এই অবস্থাঘটে[২]।
মূল নিবন্ধঃ রুবেলা ভাইরাস
রুবেলা ভাইরাস , একটি টোগা ভাইরাস যা মোড়কযুক্ত একক সূত্রবিশিষ্ট আরএনএ জিনোম রয়েছে এমন ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ রুবেলা[১৯]। ভাইরাস শ্বাসনালি দ্বারা সংক্রমিত /wiki/Nasopharynx নাসিকাগহ্বর এবং লসিকা গ্রন্থিতে প্রতিলিপি তৈরী করে। ভাইরাস সংক্রমণের ৫থেকে ৭ দিন পর রক্তে পাওয়া যায় এবং শরীর জুড়ে ছড়িয়ে যায়। ভাইরাস জন্মবিকৃতিকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং গর্ভফুল ভ্রূণে সংক্রমিত হয়ে কোষ ধ্বংস করে বা গঠনে বাঁধা দেয় [১০]। এই ইনকিউবেশন সময়কালে, রোগী সাধারণত ফুসকুড়ি বিকাশের এক সপ্তাহ আগে এবং পরে সংক্রামক থাকেন।
ভাইরাস সংক্রমণের বর্ধিত সংবেদনশীলতা এইচ এল এ-১ বা এ ১ পার্শ্ববর্তী সম্প্রসারিত হ্যাপ্লটাইপের মাধ্যমে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যেতে পারে [২০][২১]
রুবেলা ভাইরাস নির্দিষ্ট আই জি এম অ্যান্টিবডি সম্প্রতি রুবেলা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত মানুষের মধ্যে থাকে, কিন্তু এই অ্যান্টিবডি বছরের বেশি সময় ধরে থাকতে পারে, এবং ইতিবাচক পরীক্ষার ফলাফল সাবধানতার সাথে ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন [২২] । বরাবর এই অ্যান্টিবডি উপস্থিতির সঙ্গে, অথবা একটি সংক্ষিপ্ত সময় পরে, চরিত্রগত ফুসকুড়ি রোগ নির্ণয়ের নিশ্চিত করে[২৩]।
আরো তথ্যঃ এম এম আর টীকা
রুবেলা সংক্রমণ জীবিত, অক্ষম ভাইরাস ভ্যাকসিন ব্যবহার সক্রিয় টিকাদান কর্মসূচির দ্বারা রতিরোধ করা হয়। দুইটি জীবিতক্ষয়িত ভাইরাস ভ্যাকসিন আর এ ২৭/৩এবং সেন্ডেহিল উপপ্রজাতির, যা প্রাপ্তবয়স্কদের রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। তবে বয়ঃ সন্ধি-পূর্ব নারীদের ক্ষেত্রে টিকাদান যুক্তরাজ্যে সিআরএস এর সামগ্রিক প্রকোপ হার উল্লেখযোগ্ভাবেয হ্রাস করে না। টিকা এখন সাধারণত এমএমআর টিকার অংশ হিসাবে দেওয়া হয়। বিশ্ব স্সাস্থ্য সংস্থার বিশেষ পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম ডোজ ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সে একটি দ্বিতীয় ডোজ ৩৬ মাস বয়সে দেওয়া হয়। গর্ভবতী মহিলাদের সাধারণত প্রথম রুবেলা ইমিউনিটি জন্য পরীক্ষা করা হয়। শিশুর জন্ম হয় না হওয়া পর্যন্ত ঝুকিতে থাকা গর্ভবতীকে টিকা দেয়া হয় না, কারণ টিকাতে জীবিত ভাইরাস রয়েছে [২৪]। টিকাদান কর্মসূচি বেশ সফল হয়েছে. কিউবাতে ১৯৯০ সালে রোগ মুক্তির ঘোষণা, এবং ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র এর জন্মগত এবং অর্জিত উভয় রুবেলাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে [২৫][২৬]।
টিকার ইতিহাস বা সেরোলজি দ্বারা রুবেলা সংবেদনশীলতার জন্য স্ক্রীনিং প্রজনন বয়সে নারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বাঞ্ছনীয় জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম (সিআরএস) কমাবার জন্য [২৭]। উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয় প্রজনন-বয়সের সব অগর্ভবতী নারীকে প্রথম শিশুর জন্ম-পূর্ব পরামর্শে রুবেলা টিকার প্রাপ্যতার কথা বলা হবে[২৭]। সম্ভব জন্মবিকৃতি সম্পর্কে উদ্বেগের কারণে, এমএমআর টিকা ব্যবহারের গর্ভাবস্থায় সুপারিশ করা হয়[২৭]। পরিবর্তে, সমর্থ গর্ভবতী নারীদের প্রসব পরবর্তী সময়ের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা দিতে হবে[২৭]।
রুবেলার কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই; উপসর্গ ও কষ্ট কমানোর উপর ব্যবস্থাপনা নির্ভরশীল। নবজাতকের চিকিৎসা জটিলতা নিরসনের উপর নির্ভরশীল। চোখের ছানির শল্য চিকিৎসা করা হয়[২৮]। জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম (সি আর এস) -এর ব্যবস্থাপনা বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের মতো যার অন্তর্ভুক্ত পরামর্শ, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনে দৃষ্টিসহায়ক যন্ত্রের ব্যবস্থা [২৯] ।
শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের রুবেলা সংক্রমণ সাধারণত, মৃদু, স্ব-সীমিত এবং প্রায়ই উপসর্গহীন হয়। সিআরএস সহ জন্মগ্রহণকারী শিশুদের জন্য পূর্বাভাস খারাপ [৩০]।
রুবেলা একটি রোগ যে বিশ্বব্যাপী ঘটে। ভাইরাস শীতপ্রধান জলবায়ুতে সঙ্গে দেশে বসন্ত সময় শিখর থাকে। রুবেলার টিকা ১৯৬৯ সালে চালু করার আগে, ব্যাপক প্রাদুর্ভাব সাধারণত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ৬-৯ বছরে এবং ইউরোপে ৩-৫ বছরে ঘটেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৫-৯ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে [৩১]। টীকা প্রবর্তনের থেকে, ঘটনার উচ্চ টীকা গ্রহণ হারের দেশগুলোতে রুবেলা বিরল হয়ে উঠেছে। টিকা আমেরিকায় রুবেলা সংক্রমণ বিঘ্নিত করেছে: ফেব্রুয়ারি ২০০৯-এ কোন প্রাদুর্ভাব হয়ন্যনি [৩২]। যেহেতু ভাইরাস সবসময় অন্য মহাদেশ থেকে ফিরে আসতে পারে সেহেতু, এখনও পশ্চিম গোলার্ধের জনসংখ্যা রুবেলা মুক্ত রাখার জন্য টিকাদান অব্যাহ্যত থাকা প্রয়োজন। .১৯৬২-১৯৬৫-এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মহামারীর সময় গর্ভাবস্থায় রুবেলা ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে ৩০,০০০মৃত এবং২০,০০০ শিশু সিআরএস এর ফলে অঙ্গহানি নিয়ে বা প্রতিবন্ধী জন্মগ্রহন করে বলে অনুমান করা হয়[৩৩][৩৪]। সার্বজনীন টিকাদান উচ্চ পর্যায়ের হার্ড অনাক্রম্যতা উৎপাদন করে যা রুবেলা এর মহামারী নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ[৩৫]। যুক্তরাজ্যে রুবেলার ঝুকিতে থাকা পুরুষদের যারা টিকা নেয়নি এমন বৃহৎ জনসংখ্যা রয়ে গেছে। রুবেলা প্রাদুর্ভাব ১৯৯৩ সালে এবং ১৯৯৬ সালে যুক্তরাজ্যে অনেক যুবকদের মাঝে সংক্রমণ ঘটেছে যা গর্ভবতী মহিলাদের সংক্রমিত করেছে , যাদের অনেকে ছিল অভিবাসী এবং ঝুকিতে থাকএ। প্রাদুর্ভাব এখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যেখানে টিকা প্রাপ্যতা নাই [৩৬]।
জাপানে, ২০১২-১৩ রুবেলা প্রাদুর্ভাব সময়ে ১৫,০০০ টি রুবেলা এবং জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম ৪৩ টির খবর ১৫ অক্টোবর, ২০১২, এবং মার্চ ২, ২০১৪ -এর মধ্যে জাতীয় সংক্রামক রোগ মহামারী নজরদারী সংস্থার কাছে পাওয়া গেছে। সেগুলো প্রধানত ৩১ থেকে ৫১ এবং ২৪-৩৪ বছর বয়সী তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের বয়সের লোকদের মধ্যে ঘটেছে. [৩৭]।
আরও দেখুনঃ সংক্রামক রোগের মূলোৎপাটন § রুবেলা
রুবেলা প্রথম আঠারো শতকের মধ্যভাগে বর্ণনা করা হয়েছিল। ফ্রেডরিখ হফম্যান ১৭৪০ সালে রুবেলার প্রথম ক্লিনিকাল বর্ণনা করেছেন, [৩৮] যা ১৭৫২ সালে ডি বার্গেন এবং ১৭৫৮ সালে অরলো দ্বারা নিশ্চিত করা হয় [৩৯]।
১৮১৪ সালে জর্জ ডি ম্যাটন প্রথম প্রস্তাব করেন যে এটি একটি রোগ উভয় হাম ও [[লাল রংয়ের জ্বর] থেকে স্বতন্ত্র]]। এই সকল চিকিৎসক জার্মান ছিল, এবং রোগ রোথিন(সমকালীন জার্মান রোটিন) নামে, অত: পর "জার্মান হাম" নামে পরিচিত ছিল[৪০]। হেনরি ভিয়েল, একজন ইংরেজ রাজকীয় গোলন্দাজ সার্জন, ভারতে একটি প্রাদুর্ভাব বর্ণনা করেন। তিনি (ল্যাটিন শব্দ থেকে, যার অর্থ "সামান্য লাল") নাম "রুবেলা" উদ্ভ্রেন।ক্রেন ১৮৬৬ সালে [৩৮][৪১][৪২][৪৩]
এটা আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৮১ সালে একটি পৃথক সত্তা হিসাবে, লন্ডনে মেডিসিন ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেসে স্বীকৃত হয় [৪৪]। ১৯১৪ সালে আলফ্রেড ফেবিয়ান হেস বানরের উপর কাজের উপর ভিত্তি করে অনুমান করেছেন যে রুবেলা একটি ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল [৪৫]। ১৯৩৮ সালে হিরো এবং তোসাকা তীব্র রোগীর থেকে ফিল্টার করা অনুনাসিক নিঃসরণ নিয়ে ব্যবহার করে শিশুদের রোগ ঘটানোর মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন [৪২]। ১৯৪০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় রুবেলার একটি ব্যাপক মহামারী লাগল।পরবর্তীকালে চক্ষুরোগ-বিশেষজ্ঞ নরম্যান ম্যাকয়ালিস্টার গ্রেগ শিশুর জন্মগত ছানি ৭৮ ক্ষেত্রেই পাওয়া যায় এবং তাদের ৬৮ জনের মায়েদের গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে রুবেলা সংক্রমণ হয়েছিল[৪১] [৪২]। গ্রেগ একটি বর্ণনা, "শিশুর জন্মগত ছানি মায়েদের জার্মান হা্মের অনুসরণ" ১৯৪১ সালে প্রকাশিত হয়, সালে তিনি সমস্যার কারণ হিসাবে এখনকার পরিচিত জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম (সিআরএস) এর বিভিন্ন বর্ণনা দিয়েছেন এবং লক্ষ্য করেছেন যে, যত আগে মা সংক্রমিত হয়েছিল তত খারাপ ক্ষতি ছিল। যেহেতু কোনো টিকা তখনো পাওয়া যায়নি, কিছু জনপ্রিয় ম্যাগাজিন গর্ভবতী সংক্রামণ থেকে রক্ষা করার জন্য অন্যান্য শিশুদের (বিশেষ করে মেয়েরা) সাথে আক্রান্ত শিশুদের জন্য "জার্মান হাম পার্টির" এর ধারণাটি প্রবর্তন[৪৬]করে। ভাইরাস চিকিৎসক পার্কম্যান এবং অয়েলার-এর নেতৃত্বে দুটি পৃথক গ্রুপ দ্বারা ১৯৬২সালে টিস্যু কালচার আলাদা করা হয়[[৪১] [৪৩]।
১৯৬২ এবং ১৯৬৫-র মধ্যে রুবেলার একটি পৃথিবীব্যাপি মহাপ্রকোপ ছিল, যা ইউরোপে শুরু হয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে[৪৩]। ১৯৬৪-১৯৬৫ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি আনুমানিক ১২.৫ মিলিয়ন রুবেলা আক্রান্ত ছিল। এই থেকে ১১,০০০ গর্ভপাত বা থেরাপিউটিক গর্ভপাত এবং ্য.২০,০০০ জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম হয়। এদের মধ্যে ২,১০০ নব্যশিশু হিসেবে মৃত্যুবরণ, ১২,০০০ বধির হয়ে গেল, ৩,৫৮০অন্ধ ছিল, এবং ১,৮০০মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল। শুধু নিউ ইয়র্কেই সিআরএস ছিল ১% [৪৭][৪৮]। ১৯৬৯সালে একটি জীবিত ক্ষয়িত ভাইরাস ভ্যাকসিন লাইসেন্স করা ছিল[৪২]। ১৯৭০ সালে, একটি ক্ষয়িত হাম, মাম্পস ও রুবেলা (এমএমআর) ভাইরাস ধারণকারী ট্রিপল টিকা চালু করা হয়[৪৩]। ২০০৬ সালে, দুই আমেরিকায় রুবেলা ৩০০০-এর নিচে নেমে ছিল। তবে, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলিতে ২০০৭ সালে প্রাদুর্ভাব ১৩,০০০ হয়েছিল[৭]। জানুয়ারী ২২, ২০১৪ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং প্যান আমেরিকান স্বাস্থ্য সংস্থা কলোমবিয়াকে রুবেলা মুক্ত প্রত্যয়িত এবং ঘোষণা করে, এবং প্রথম লাতিন আমেরিকার দেশ হিসাবে রোগ মুক্ত হয়[৪৯][৫০]। ২৯ এপ্রিল, ২০১৫, দুই আমেরিকা প্রথম ডব্লিউএইচও অঞ্চল যা আনুষ্ঠানিকভাবে এই ব্যাধি দূর করে। শেষ নিজস্ব রোগের উপদ্রব আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ২০০৯ সালে ঘটেছে. প্যান-আমেরিকান স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালক মন্তব্য "রুবেলা বিরুদ্ধে যুদ্ধ ১৫বছরেরও বেশি সময় নিয়েছে, কিন্তু এটা হয়েছে, এটা,আমি বিশ্বাস করি ২১ শতকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্যান আমেরিকান জনস্বাস্থ্য অর্জন " [৫১]। ঘোষণা ১৬৫ মিলিয়ন স্বাস্থ্য রেকর্ডের পরে এবং জেনেটিকালি নিশ্চিত হওয়ার পরে যে সাম্প্রতিক সব ক্ষেত্রেই সংক্রমণ ভাইরাসের পরিচিত আমদানিকৃত প্রজাতির দ্বারা ঘটিত হয়। রুবেলা এখনও বিশ্বে দেখা যায় এবং সুসান ই রিফ, বিশ্বব্যাপী টিকাদান প্রচেষ্টার প্রধান, বলেন, এটা ২০২০সালের আগে বিশ্বব্যাপী নির্মূল হবে না [৭]। রুবেলা তৃতীয় রোগ হিসাবে গুটি-বসন্ত এবং পোলিও -র পর টিকা দিয়ে পশ্চিম গোলার্ধ থেকে নির্মূল করা হয় [৭] [৮]।
রুবেলা কখনো রুবিওলা, ইংরেজিভাষী দেশে হা্মের জন্য একটি বিকল্প নাম; রোগ দুইটি সম্পর্কহীন[৫২][৫৩]। অন্যান্য ইউরোপীয় ভাষার, যেমন স্পেনীয়তে, রুবেলা এবং রুবিওলা সমার্থক, হামের বিকল্প নাম নয় [৫৪]। সুতরাং, স্প্যানিশ, "রুবিওলা" রুবেলা বোঝায় এবং "স্যারাম্পিওন" হাম বোঝায়।