ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | রেমন্ড রাসেল লিন্ডওয়াল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | মাসকট, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া | ৩ অক্টোবর ১৯২১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৩ জুন ১৯৯৬ ব্রিসবেন, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৭৪)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১.৭৮ মিটার (৫ ফুট ১০ ইঞ্চি) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৬৫) | ২৯ মার্চ ১৯৪৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৮ জানুয়ারি ১৯৬০ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪১/৪২–১৯৫৩/৫৪ | নিউ সাউথ ওয়েলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৪/৫৫–১৯৫৯/৬০ | কুইন্সল্যান্ড বুলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ আগস্ট ২০১৭ |
রেমন্ড রাসেল লিন্ডওয়াল, এমবিই (ইংরেজি: Ray Lindwall; জন্ম: ৩ অক্টোবর, ১৯২১ - মৃত্যু: ২৩ জুন, ১৯৯৬) নিউ সাউথ ওয়েলসের মাস্কটে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নেন। তাকে সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলারদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়াও, দক্ষ অল-রাউন্ডার হিসেবেও নিজেকে তৈরী করেছিলেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন রে লিন্ডওয়াল।[১] টেস্ট ক্রিকেটে পূর্ণাঙ্গ মনোনিবেশ ঘটানোর প্রেক্ষিতে রাগবি খেলা থেকে অবসর নেন তিনি।[২]
কিথ মিলারের সাথে নতুন বলের জুটি গড়ে অস্ট্রেলীয় দলের বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন। তিনি তার ধ্রুপদী ভঙ্গীমায় ছন্দময় দৌঁড়ের সাহায্যে বোলিং করতেন ও তার বাউন্সার প্রতিপক্ষীয় ব্যাটসম্যানের মাথার পাশ দিয়ে চলে যেতো। খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে ইনসুইঙ্গারের উত্তরণ ঘটিয়ে পেস ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে ভয়ঙ্কর পেসার হিসেবে নিজেকে তৈরী করেন।
আইরিশ-সুইডিশ বংশোদ্ভূত দম্পতির পাঁচ সন্তানের একজন হিসেবে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।[৩] কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী পার হবার পূর্বেই তার বাবা-মা মৃত্যুবরণ করেন। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ফাস্ট বোলার হ্যারল্ড লারউডের ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে কুখ্যাত বডিলাইন সিরিজে শর্ট-পিচ বোলিংয়ে প্রাধান্যতা তাকে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করে। শৈশবের বছরগুলোয় সেন্ট জর্জে সিডনি গ্রেড ক্রিকেটে বিখ্যাত লেগ স্পিনার বিল ও’রিলি’র সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি।
১৯৪১-৪২ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। একই সময়ে সেন্ট জর্জের পক্ষে নিউ সাউথ ওয়েলস রাগবি ফুটবল লীগে অংশ নিয়েছেন। ১৯৪৩ সালে জাপান কর্তৃক পার্ল হারবার আক্রমণের ফলে আন্তঃরাজ্য ক্রিকেট প্রতিযোগিতা বাতিল হয়ে যায়। এরফলে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত নিউ গিনিতে সৈনিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন লিন্ডওয়াল। মৌসুমী রোগে আক্রান্ত হয়ে লিন্ডওয়াল অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন। ক্রিকেটের পাশাপাশি রাগবি লীগ ফুটবলে অংশগ্রহণ করেন। এরপর অস্ট্রেলিয়া ফিরে এসে শীতকালে সেন্ট জর্জ দলকে গ্র্যান্ড ফাইনালে উত্তীর্ণ করেন ও ক্রিকেটে মনোনিবেশ ঘটানোর স্বার্থে রাগবি খেলা থেকে অবসর নেন। এর পরপরই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পুনরায় প্রত্যাবর্তন করেন।
ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় ভালো ফলাফল করায় দল নির্বাচকমণ্ডলী কর্তৃক তিনি নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য মনোনীত হন। মার্চ, ১৯৪৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। লিন্ডওয়াল অল-রাউন্ডার ছিলেন। নিচের সারির ব্যাটসম্যান হওয়া স্বত্ত্বেও ব্যাটিংয়ের অবস্থানের পরিবর্তন ঘটিয়ে টেস্টে দুইবার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ১৯৪৮ সালে ডন ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড সফরে অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ে শীর্ষে অবস্থান করেন। ‘অপরাজেয়’ নামের এ দলটি ঐ সফরে কোন খেলায় পরাজিত হয়নি।
১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে মিলারের সাথে উদ্বোধনী জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম অ্যাশেজ সিরিজে অংশ নেন। দ্বিতীয় টেস্টে তিনি তার প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় উইকেট সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। পরবর্তী মৌসুমে ভারতের বিপক্ষেও বোলিংয়ে শীর্ষে ছিলেন। এরপর ইংল্যান্ড সফরে ‘অপরাজেয়’ দলের বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন। ঐ সফরে টেস্টে ২৭ উইকেটসহ ৮৬টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান, যা যে-কোন বোলারের তুলনায় বেশি ছিল। তন্মধ্যে ওভালে অনুষ্ঠিত ৫ম টেস্টে তিনি তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৬/২০। তার উচ্চ গতিসম্পন্ন পেস সুইংয়ের তোপে স্বাগতিক দলের ইনিংস মাত্র ৫২ রানে গুটিয়ে যায়।
অপরাজেয় দলের সফরের পর লিন্ডওয়াল ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। কিন্তু সেখানকার পিচগুলো তাকে তেমন সহায়তা করেনি। ফলে চূড়ান্ত টেস্টে দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। পরের মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলায় ফিরে আসেন ও নিয়মিতভাবে উইকেট নিয়ে সিরিজ বিজয়ে অবদান রাখেন। পরের বছর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানদেরকে রান তোলায় বাঁধা দেন। কিন্তু তার শর্ট-পিচের বোলিংয়ের জন্য সমালোচনার মুখোমুখি হন।
১৯৫২ সালে ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে খেলেন ও ইনসুইঙ্গারের উত্তরণ ঘটান। ১৯৫৩ সালে জাতীয় দলে ফিরে আসেন। অ্যাশেজে পরাজয় স্বত্ত্বেও ধারাভাষ্যকারগণ তার অনুপস্থিতির কথা তুলে ধরেন।
অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে কাজের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া কুইন্সল্যান্ড ছেড়ে উত্তরের দিকে চলে যান। সেখানে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন ও অসুস্থতার কারণে ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে দূর্বল ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপন করেন। এরফলে ইংল্যান্ড খুব সহজেই অ্যাশেজ জয় করে। কিন্তু ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে বেশ ভালো ফলাফল লাভ করলেও ১৯৫৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে অধিকাংশ সময়ই আঘাতের কারণে দলের বাইরে ছিলেন। ফলশ্রুতিতে অস্ট্রেলিয়া দল উপর্যুপরি তৃতীয়বারের মতো অ্যাশেজ সিরিজ খোঁয়ায়। অস্ট্রেলিয়া ফিরে আসেন ও দলের অধিনায়ক হিসেবে ভারত সফর করেন। নিয়মিত অধিনায়ক ইয়ান জনসনের আঘাতজনিত অনুপস্থিতিতে মুম্বাইয়ে ভারতের বিপক্ষে তিনি একটিমাত্র টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের কাছে পুনরায় পরাজিত হবার ফলে অস্ট্রেলীয় দল নির্বাচকমণ্ডলী দল পুণর্গঠন করতে বাধ্য হন। এরফলে লিন্ডওয়াল ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য দল থেকে বাদ পড়েন। কিন্তু ৩৭ বছর বয়সেও তিনি পুনরায় দলে ফিরে আসেন ও পরের মৌসুমেই ক্ল্যারি গ্রিমেটের গড়া সর্বোচ্চ ২১৬ টেস্ট উইকেট লাভের অস্ট্রেলীয় রেকর্ড ভঙ্গ করেন।
ভারতীয় উপমহাদেশ সফর শেষে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। এ সময় তিনি ২২৮ টেস্ট উইকেট লাভ করেছিলেন। অবসর পরবর্তীকালে টেস্ট ক্রিকেটে বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী বিখ্যাত বোলার ডেনিস লিলি’র পরামর্শক হিসেবে ছিলেন তিনি।[৪][৫] এছাড়াও জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন লিন্ডওয়াল।
তার বিধ্বংসী বোলিংয়ের কারণে উইজডেন কর্তৃপক্ষ ১৯৪৬ সালে বর্ষসেরা পাঁচ ক্রিকেটারের একজন হিসেবে তাকে মনোনীত করে।[৬] ১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে অবদান রাখায় অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত প্রথম দশজনের একজনরূপে মনোনীত হন। ২০০০ সালে শতাব্দীর সেরা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড দলের অন্যতম সদস্য মনোনীত হয়েছেন লিন্ডওয়াল।[৭]
ক্রীড়া অবস্থান | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী ইয়ান জনসন |
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৫৬-৫৭ |
উত্তরসূরী ইয়ান জনসন |
পূর্বসূরী দাত্তু ফাড়কর |
পেশাদার নেলসন ক্রিকেট ক্লাব ১৯৫২ |
উত্তরসূরী দাত্তু ফাড়কর |